শাওন সোলায়মান
প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:২৫ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সাক্ষাৎকার

অনলাইন ব্যবসার প্রসার ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ হবে না

অনলাইন ব্যবসার প্রসার ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ হবে না

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশে জনপ্রিয়তা বাড়ছে ই-কমার্সের। এই খাতের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হচ্ছেন উদ্যোক্তা ও সাধারণ গ্রাহকরা। গতানুগতিক বা অফলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও ই-কমার্সের গুরুত্ব দিয়ে চালু করছেন আলাদা ই-কমার্স উইং। ইলেকট্রনিকস, কসমেটিকস, পোশাকের মতো লাইফস্টাইল পণ্যের পাশাপাশি মুদি ও কাঁচা পণ্য, কোরবানির পশু, আম-লিচুর মতো ফলমূল এবং নাটক-সিনেমা-ওয়েব সিরিজের মতো ডিজিটাল পণ্য ও সেবার বিকিকিনি হচ্ছে এখন ই-কমার্সে। এ-সংক্রান্ত দেশীয় ই-কমার্স বাজারের সামগ্রিক হালচাল নিয়ে দৈনিক কালবেলার সঙ্গে কথা বলেছেন ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল। সাক্ষাৎকার নেন স্টাফ রিপোর্টার শাওন সোলায়মান -

কালবেলা: আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে যাচ্ছি। এই অগ্রযাত্রায় ই-কমার্স কীভাবে অবদান রাখতে পারে?

আব্দুল ওয়াহেদ তমাল: ই-কমার্স হচ্ছে এখন মূল চালিকাশক্তি। ডিজিটাল ব্যবসা ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ হবে না। এখন সব ব্যবসাই ডিজিটাল ব্যবসার দিকে এগোচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করতে হলে ডিজিটাল ইকোনমি তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে এই খাতে সরকার অধিকতর গুরুত্ব দিচ্ছে দেখতে পাচ্ছি। ই-কমার্স এমন একটা খাত যার সঙ্গে অনেকগুলো মন্ত্রণালয় ও সংস্থা জড়িত যেমন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ, ডাক ও টেলিযোগাযগ মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং রাজস্ব বোর্ডের মতো সংস্থা। ডিজিটাল কমার্স নীতিমালায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কিছু পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে এবং কোন সংস্থা কী করবে, সেগুলো নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। সেই অনুযায়ী সরকার কিছু কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমরা চাচ্ছি আগামীতে সরকার আরও বড় পরিসরে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করুক। তাহলেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে আমরা আরও একধাপ এগিয়ে যাব।

কালবেলা: আমরা কি উদ্যোক্তা বেশি তৈরি করে ফেলছি?

আব্দুল ওয়াহেদ তমাল: উদ্যোক্তা ছাড়া এত কর্মসংস্থান কোথা থেকে তৈরি করবেন? আমাদের দেশে বেকারত্বের যেই সমস্যা তার একমাত্র সমাধান উদ্যোক্তা তৈরি করা। শুধু কেনাবেচা না, সেবা খাতেও বেশ চাহিদা রয়েছে। কাজেই উদ্যোক্তা তৈরির কোনো বিকল্প নেই।

কালবেলা: ই-কমার্সের মাধ্যমে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে থাকা দেশীয় পণ্য বিদেশে রপ্তানির সম্ভাবনা কেমন?

আব্দুল ওয়াহেদ তমাল: প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। ভারত ও চীনের দিকে যদি দেখি তারা কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়েছে ক্রস বর্ডার ই-কমার্সের মাধ্যমে। চীন আলিবাবার মাধ্যমে যেটা করেছে, সেটা হচ্ছে তাদের উদ্যোক্তাদের বৈশ্বিকভাবে যুক্ত করেছে। তাদের স্থানীয় পণ্য বিশ্ববাজারে বিক্রি করছে। ভারতও ঠিক এ কাজটি করছে। আমাদের দেশে শুধু কিছু পলিসি দরকার, কিছু পলিসির পরিবর্তন দরকার। আমরা লজিস্টিক সাপোর্ট এবং পলিসিগত কারণে পিছিয়ে আছি। ক্রস বর্ডার পেমেন্ট এবং ক্রস বর্ডার রিফান্ড-রিটার্ন একটা বড় ইস্যু। বিশ্বাস ও আস্থার কিছু বিষয় আছে। এগুলো হলে আগামীতে বিলিয়ন ডলার ইন্ডাস্ট্রি তৈরি হবে।

কালবেলা: কী ধরনের নীতিগত সমস্যা দেখছেন?

আব্দুল ওয়াহেদ তমাল: যেমন ভারত একটা টেকনোলজি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে। ওদের উদ্যোক্তারা এলসি ছাড়াই পণ্য পাঠাতে পারে, শুধু ঘোষণার মাধ্যমে। দেশে এই সুবিধা নেই। আবার ধরেন, কোনো একটা পণ্য বিক্রি হলো না সেটাকে রিটার্ন আনতে হবে। আবার ধরেন কোনো গ্রাহককে কোনো কারণে রিফান্ড করতে হবে। এই যে রিটার্ন-রিফান্ড করতে হবে সে বিষয়ে পলিসির কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। ডিজিটাল পেমেন্টেও বাধা আছে। আমরা যদি ক্রস বর্ডারে ডিজিটাল পেমেন্ট করতে চাই বিজনেস-টু-বিজনেসের ক্ষেত্রে সেখানেও কিছু প্রতিবন্ধকতা আছে। এসব বিষয়ে পলিসিগত সমাধান দরকার।

কালবেলা: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কারণে অনেক মানুষ চাকরিচ্যুত হবে বলা হচ্ছে। এ বিষয়টা ই-কমার্সে কেমন প্রভাব ফেলবে?

আব্দুল ওয়াহেদ তমাল: মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। এখানে একটা বড় ডিজিটাল বিভাজনের সম্ভাবনা আমি অন্তত দেখছি। বড় প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে যাবে, ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো পিছিয়ে পড়বে। কারণ বড় প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তি গ্রহণের গতি দ্রুত হয়ে থাকে। যে কোনো নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে তারা দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে। কিন্তু ছোট প্রতিষ্ঠানের জন্য এটা বেশ কঠিন। তবে এআই এর সংযুক্তি ডিজিটাল বিজনেসের পুরো চিত্রই পালটে দেবে। তবে এখানে কর্মসংস্থানে কোনো নেতিবাচক প্রভাব দেখছি না। আমি সমস্যা দেখছি এআই-এর ব্যবহার নিয়ে।

কালবেলা: সম্প্রতি ই-কমার্স এবং মার্কেটপ্লেসকে আলাদাভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এতে কি কোনো সুফল হয়েছে?

আব্দুল ওয়াহেদ তমাল: আগে দুটি একীভূত থাকায় খুব সমস্যা হতো। এখন সেটার অনেক বড় একটা সমাধান হয়েছে। আগে কোনো অর্ডারে ভ্যাট দুবার যোগ হতো। ই-কমার্সের প্রতিষ্ঠানের ওপর একবার ভ্যাট আরোপ করা হচ্ছিল এবং ই-কমার্সের অধীনে যে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ব্যবসা করছেন, তাদেরও আবার আলাদাভাবে ভ্যাটের কাগজপত্র দিতে হতো। ফলে পণ্য বা সেবার মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছিল।

ই-কমার্স এবং মার্কেটপ্লেস আলাদাভাবে সংজ্ঞায়িত না থাকার কারণে একটা দ্বিধা তৈরি হতো। এখন জিনিসটা পরিষ্কার করা হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএনপি কর্মীদের নিয়ে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিলেন জয়

খাঁচায় বন্দি রেখে পাখি পালন করা কি জায়েজ আছে?

সাবেক স্ত্রীকে হত্যার পর যুবকের কাণ্ড

বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা

নদীতে ভাসছিল নিখোঁজ চালকের মরদেহ, উধাও অটো

টাইফয়েড টিকার রেজিস্ট্রেশন মোবাইল থেকে যেভাবে করবেন

দুদকের দুই উপ-পরিচালক বরখাস্ত

দলের স্বার্থে খেলে কপাল পুড়ল দুই ক্রিকেটারের, দাবি অশ্বিনের

মহাখালীর সাততলা বস্তিতে ভয়াবহ আগুন 

আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর ১২টা হাতি মরে গেছে : রিজওয়ানা

১০

প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা

১১

ঢাবির ১৮ হল সংসদের প্রার্থী ঘোষণা ছাত্রদলের

১২

স্টার্টআপে বিনিয়োগ ও পরামর্শ দেবে কমিউনিটি ব্যাংক

১৩

মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

১৪

কুমিল্লায় ৫২টি পাসপোর্টসহ দালাল আটক

১৫

টাকা ছাড়াই খাওয়া যায় যে ক্যাফেতে, দিতে হবে প্লাস্টিক বর্জ্য

১৬

বঞ্চিত কর্মকর্তাগণের আবেদন পর্যালোচনা কমিটির ২য় প্রতিবেদন পেশ

১৭

হাসপাতালে গিয়ে মির্জা ফখরুলকে পেলেন না জামায়াতের প্রতিনিধিদল

১৮

দূরশিক্ষা ও বিজ্ঞানের মহীরুহ ড. শমশের আলীর মহাপ্রস্থান : এক জ্ঞানতাপস

১৯

একযোগে এনসিপির ১৫ নেতার পদত্যাগ

২০
X