ইসরায়েলের তিন দিনের লাগাতার হামলার পর ‘সবাই কোনো না কোনোভাবে তেহরান ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছে,’ বিবিসি নিউজ পার্সিয়ানকে এক বাসিন্দা বলেন, সোমবার থেকে ইরানের রাজধানী তেহরানের শহরজুড়ে পেট্রোল স্টেশনগুলোতে দেখা যায় দীর্ঘ সারি। অনেকেই শহর ছেড়ে দূরের গ্রামে বা তুলনামূলক নিরাপদ জায়গায় যেতে চাইছেন। কিন্তু তীব্র যানজটে অনেকে প্রদেশের বাইরেই যেতে পারছেন না।
তেহরানের বাসিন্দারা আতঙ্কে আছেন। তারা কোথাও নিরাপদ বোধ করছেন না। বিবিসিকে এক বাসিন্দা বলেন, ‘তেহরান মোটেও নিরাপদ নয়। ইসরায়েলের হামলা নিয়ে সরকার পক্ষ থেকে আমাদের কোনো সাইরেন বা আগাম সতর্কতা দেওয়া হয় না। আমরা শুধু বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। আর আশা করি, যেন আমাদের ঘরে না লাগে। কিন্তু কোথায়ই বা যাব? কোথাও তো নিরাপদ মনে হয় না।’ তেহরান ছেড়ে অন্য প্রদেশে যেতে পেরেছেন এমন একজন বলেন, তিনি এখনো মেনে নিতে পারছেন না যে, তিনি একটি যুদ্ধক্ষেত্রে আছেন।
গত শুক্রবার থেকে ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিমান হামলা চালিয়েছে। এর পাল্টা হিসেবে ইরানও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে। ইসরায়েলের কর্মকর্তারা বলছেন, এ হামলায় দেশটিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছেন। আর ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, ইসরায়েলি হামলায় দেশজুড়ে এখন পর্যন্ত ২২৪ জন নিহত হয়েছেন।
দেশজুড়ে ইন্টারনেট সংযোগ অনিয়মিত হওয়ায় অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করাও কঠিন হচ্ছে। দেশের বাইরে থাকা ইরানিরা তাদের প্রিয়জনের খোঁজে মেসেজ দিয়েও জবাব পাচ্ছেন না। অন্যদিকে, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী ইরানিদের সামরিক স্থাপনার কাছাকাছি এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার সতর্কবার্তা দিয়েছে।
ইরানের সাধারণ মানুষের জীবন এখন এক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে নিরাপত্তাহীনতা আর আতঙ্ক তাদের প্রতি মুহূর্তকে গ্রাস করে রেখেছে।
মন্তব্য করুন