

পাকিস্তান সীমান্তে ত্রিশূল নামে ১২ দিনের সামরিক মহড়া শুরুর মাধ্যমে ভারত তার সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এ মহড়া ছয় মাস আগে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে চালানো অপারেশন সিঁদুরের পর প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ত্রিশূল মহড়ায় বিশেষ বাহিনীর কমান্ডো, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাটারি, যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধট্যাংক, রাফায়েল যুদ্ধবিমান, সুখোই এসইউ-৩০সহ অ্যাটাকিং বিমান ব্যবহার করা হচ্ছে, যা সিঁদুর-পরবর্তী পরিস্থিতিতে এর মাধ্যমে পাকিস্তানের দক্ষিণ অঞ্চলে আক্রমণের মহড়া দেওয়া হবে।
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্ভাব্য নতুন সীমান্ত সংঘর্ষের স্থান, বিশেষ করে গুজরাট ও রাজস্থানজুড়ে মহড়াগুলো অনুষ্ঠিত হবে। এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ত্রিশূলের মাধ্যমে পাকিস্তানকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে ভারত—তারা ভূখণ্ড রক্ষা করতে প্রস্তুত এবং প্রয়োজনে গত মে মাসে অপারেশন সিঁদুর যেখানে থেমেছিল, সেখান থেকে আবার শুরু করবে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং পাকিস্তানকে তার দেশের অর্ধেক স্যার ক্রিক অবৈধভাবে দখলের চেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। ওই এলাকাটি হচ্ছে গুজরাটের কচ্ছের রণ ও পাকিস্তানের মধ্যে জোয়ারের মোহনায় ১০০ কিলোমিটারের কম একটি সংকীর্ণ ও বিতর্কিত জল মোহনা।
কাগজ-কলমে এটি দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে পশ্চিম সীমান্ত অর্থাৎ খালের পশ্চিম অর্ধেক পাকিস্তানের এবং পূর্বের অংশ ভারতের। ওই সময় রাজনাথ সিং বলেছিলেন, ভারতীয় ভূখণ্ড দাবি করার যে কোনো প্রচেষ্টার জবাব এমনভাবে দেওয়া হবে, যা ‘ইতিহাস ও ভূগোল’ বদলে দেবে।
ওই এলাকায় গত সপ্তাহে পরিদর্শন করেছেন পাকিস্তানের নৌবাহিনী প্রধান চিফ এডমিরাল নাভিদ আশরাফ। তিনি স্যার ক্রিক থেকে জিওয়ানি পর্যন্ত আমাদের সামুদ্রিক সীমান্তের প্রতিটি ইঞ্চি রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা ভারতীয় সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্বকে সতর্ক করে দিয়েছে।
যেসব যুদ্ধাস্ত্র অংশ নিচ্ছে মহড়ায়: এই অনুশীলনে স্থলবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সেনাদের মধ্যে সমন্বয়ের জন্য মহড়া দেওয়া হচ্ছে। এতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে টি-৯০ ট্যাংক এবং ব্রহ্মস মিসাইল ইউনিট পাঠিয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে আকাশ মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
এই অনুশীলনে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হেলিকপ্টারও থাকছে। বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে ফরাসি রাফায়েল এবং রাশিয়ায় তৈরি সুখোই সু-৩০ থাকছে। এর সঙ্গে থাকছে সমুদ্র সি গার্ডিয়ান এবং হেরন ড্রোন। অন্যদিকে, নৌবাহিনীর তরফ থেকে থাকছে কলকাতা-ক্লাস ডেস্ট্রয়ার এবং নিলগিরি-ক্লাস ফ্রিগেট। এর সঙ্গে থাকছে দ্রুত আক্রমণ করতে পারে এমন বিভিন্ন অস্ত্র এবং নৌযান। অপারেশন ত্রিশূলে থাকছে সেনাবাহিনীর বিশেষ ব্যাটালিয়ান, প্যারাশুট রেজিমেন্ট প্যারা এসএফ। এর সঙ্গে থাকছে নৌবাহিনীর বিশেষ ব্যাটেলিয়ান মারকোস। এই মারকোস, জল এবং স্থল দুই জায়গাতেই অপারেশন চালাতে পারে। সন্ত্রাসবিরোধী অপারেশনে অত্যন্ত দক্ষ এই বাহিনী। বিমানবাহিনীর বিশেষ কমান্ডো ইউনিট গরুড় যোগ দিচ্ছে ত্রিশূলে।
মন্তব্য করুন