

দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার সঙ্গে এসেছেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান। তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দলের পক্ষ থেকেও নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ সময় পর তার দেশের ফেরার খবর স্থান পেয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির শিরোনামে বলা হয়েছে, ঢাকায় তারেক রহমানের ‘বুলেটপ্রুফ’ প্রবেশ, ঢাকায় স্বাগত জানাতে লাখ লাখ জনতার ভিড়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘ ১৭ বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন শেষে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার ঢাকায় পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানাতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থক জড়ো হন।
৬০ বছর বয়সী তারেক রহমান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র। আসন্ন ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তাকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, তারেক রহমান তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে ঢাকায় আসেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন দলের ঘনিষ্ঠ দুই সহযোগী আবদুর রহমান সানী ও কামাল উদ্দিন। এছাড়া পরিবারের পোষা বিড়াল ‘জিবু’ও তাদের সঙ্গে দেশে ফেরে।
তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষে বিএনপি নেতাকর্মীরা বনানী থেকে বিমানবন্দর অভিমুখী সড়কে হেঁটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দিকে যাত্রা করেন। বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক জনসমাগম লক্ষ্য করা গেছে।
ভারতের আরেক জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের শিরোনামে বলা হয়েছে, ১৮ মাস কারাবাসের পর কেন, কোন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ছেড়ে লন্ডনে যান তারেক, ফিরে দেখা ১৭ বছর আগের ঘটনাক্রম। এতে বলা হয়েছে, ১৭ বছর পর দেশে ফিরেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান। আঠারো মাস কারাবাসের পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ছেড়ে লন্ডনে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে স্বেচ্ছায় নির্বাসন কাটিয়েছেন তারেক রহমান। দীর্ঘ ১৭ বছর তিনি বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেননি।
১/১১ নামে পরিচিত ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। এরপরই সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা নিলে তখন গ্রেপ্তার হন তারেক রহতামন। ১৮ মাস জেলে থাকার পর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি মুক্তি পান। এ সময়ে কারাগারে খালেদা-পুত্রের ওপর অত্যাচার করারও অভিযোগ ওঠে।
ভারতের আরেক জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের শিরোনামে বলা হয়েছে, ১৭ বছর নির্বাসনের পর ঢাকায় তারেক রহমান, কিছুক্ষণের মধ্যেই সমাবেশে ভাষণ দেবেন। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৭ বছর পর যুক্তরাজ্যের লন্ডনে নির্বাসিত জীবন শেষে বৃহস্পতিবার ঢাকায় পৌঁছেছেন। তার সঙ্গে দেশে ফিরেছেন স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমান। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি পূর্বাচলের ‘৩০০ ফিট’ এলাকায় আয়োজিত এক সমাবেশে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে তারেক রহমানের, যেখানে তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন।
তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন এমন এক সময়ে ঘটল, যখন যুবনেতা শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ও রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। ফলে তার দেশে ফেরা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানকে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদে দলের অন্যতম শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের শিরোনামে বলা হয়েছে, ১৭ বছর পর ঢাকায় বিএনপির প্রথম সমাবেশে ভাষণ দেবেন খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান। টাইমস নাওয়ের এক শিরোনামে বলা হয়েছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেছেন তারেক রহমান, ভাষণ দেবেন মেগা সমাবেশে।
মন্তব্য করুন