রিয়াদ হোসেন রুবেল, বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী)
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৪, ০২:১৬ এএম
আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৪, ১২:১৬ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বালিয়াকান্দির ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পের কদর কমেছে

বালিয়াকান্দির ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পের কদর কমেছে

দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ। চলছে ঈদ ও বৈশাখ উদযাপনের প্রস্তুতি। কোথাও মাসব্যাপী মেলা, আবার কোথাও চৈত্রসংক্রান্তি শুরু থেকেই হবে নানা ধরনের উৎসব। বৈশাখের এসব মেলা আর ঈদ উৎসব রাঙাতে মাটির তৈরি খেলনা একটি বড় জায়গা দখল করে আছে গ্রামীণ জীবনে। দেশের যে কোনো স্থানে মেলা মানেই রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মৃৎশিল্পীদের মাটির তৈরি খেলনা ও গৃহস্থালি জিনিস। তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন কমছে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী এ মৃৎশিল্পের কদর।

সিরামিক, প্লাস্টিক ও ধাতব তৈজসপত্রের জন্য এ শিল্পে অনেকটাই ধস নেমেছে। অনেকে এ পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। গুটিকয়েক পাল পরিবার পুরোনো পেশাটি ধরে রেখেছে। কথা হয় উপজেলার জামারপুর নলিয়া গ্রামের শুকুমার কুমার পালের সঙ্গে। তিনি জানান, বংশ পরম্পরা ও জীবিকার তাগিদে এখনো মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন তারা। দূরদূরান্ত থেকে সংগ্রহ করা এঁটেল মাটি দিয়ে তৈরি করা পাত্রগুলোকে প্রথমে রোদে শুকিয়ে আগুনে পোড়ানো হয়। পরে শিল্পীর নিখুঁত হাতের ছোঁয়ায় রঙের তুলির আঁচড়ে ফোটানো সব চমৎকার নিদর্শন তৈরির পর, সেগুলো বিভিন্ন মেলা বা গ্রামগঞ্জের হাট বাজারে বিক্রি করেন।

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় ধাতব, প্লাস্টিকের খেলনা সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। এ কারণে মাটির তৈরি জিনিসপত্র বিলীন হতে চলেছে। হারিয়ে যেতে বসেছে শতবছরের ঐতিহ্যবাহী এই মৃৎশিল্প।’

একই এলাকার স্বপন কমার পাল, বিনয় কমার পাল, আকাশ পাল জানান, সামনে চৈত্রসংক্রান্তি ও বৈশাখ উপলক্ষে মেলার জন্য তারা বিভিন্ন ধরনের খেলনা ও তৈজসপত্র তৈরি করছেন। এসবের মধ্যে রয়েছে মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, গণেশ পাগলসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতিকৃতি, পুতুল, হাতি, ঘোড়া, বানর, সিংহ, দোয়েল, কচ্ছপ, নৌকা, মাছ, হাঁস, মুরগির ডিম ইত্যাদি। ফলের মধ্যে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা, তাল ইত্যাদি। তারা জানান, তাদের পূর্ব পুরুষরা এ পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাই তারাও সেই ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।

নলিয়া আলোকদিয়ার গ্রামের শুশান্ত কুমার পাল, পলাশ পাল, উৎপল পালসহ কুমার সম্প্রদায়ের কয়েকজন বলেন, ঈদ ও বৈশাখ মাসটা তাদের পালনী মাস। এজন্য চৈত্র মাসে তাড়াহুড়ো করে কাজ করেন। বৈশাখে মেলা হয়। যেখানে তাদের পণ্যগুলো বিক্রি হয়।

ভৃড়ীমাগুরা নলিয়া গ্রামের পালপাড়ার নারী মৃৎশিল্পী আর্চয রানী পাল বলেন, একসময় মাটির তৈরি জিনিসপত্রের খুব কদর ছিল। সে সময়ে চাহিদা বেশি থাকায় পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি বাইরে থেকে শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হতো। এখন মাটির তৈরি জিনিসপত্রের কদর অনেক কমে গেছে। বাপ-দাদা ও স্বামীর পেশা হওয়ায় সন্তানদের নিয়ে এ পেশা এখনো ধরে রেখেছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় পাল সম্প্রদায়ের বেশকিছু পরিবার এখনো মাটির বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করছে। মৃৎশিল্প আমাদের সংস্কৃতিরই একটা অংশ। সরকার এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। তারা যে কোনো সহযোগিতা চাইলে তাদের সহযোগিতা করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গাজার ফুটবল পুনর্গঠনে সহায়তার অঙ্গীকার ফিফা সভাপতির

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে আবার রেকর্ড

কুমিল্লা বিভাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মিছিল ও সমাবেশ

চাকসু নির্বাচন / ছাত্রদলের এজিএস প্রার্থীকে সমর্থনে সরে দাঁড়ালেন এক প্রার্থী

মিরপুরে অগ্নিকাণ্ডে নিহতের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক

বিয়েতে বন্ধু না আসায় কবুল বলেনি বর

চাটুকারিতাকে যেভাবে পররাষ্ট্রনীতিতে রূপ দিলেন শেহবাজ শরিফ

ব্যাংক কর্মকর্তাদের জন্য শরিয়াভিত্তিক হাউস-কার লোন চালুর পরামর্শ আহমাদুল্লাহর

আগামীর নেতৃত্বে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসার আহ্বান ধর্ম উপদেষ্টার

জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ১৩ কর্মকর্তার-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা

১০

৪৯তম বিশেষ বিসিএসে অংশ নেননি ৪১ শতাংশ পরীক্ষার্থী 

১১

মাদাগাস্কারের ক্ষমতা দখল করল সেনাবাহিনী

১২

কালবেলার সাংবাদিকের বাবার মৃত্যুতে দোয়া মাহফিল

১৩

জুলাই আন্দোলনে সামনের কাতারে ছিল তা’মীরুল মিল্লাতের ছাত্ররা : ভিপি সাদিক

১৪

রাকিবের গোলে হংকংয়ের মাঠে বাংলাদেশের ড্র

১৫

মালয়েশিয়ায় ভূমিধসে বাংলাদেশি কর্মীর মৃত্যু

১৬

হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বাড়ল

১৭

সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে মিয়ানমার নাগরিক নিহত

১৮

গাজা শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করল যুক্তরাষ্ট্র-মিসর-কাতার-তুরস্ক

১৯

নাগরিক সংলাপে বক্তারা / বিআরটিএর সেবা বেসরকারি খাতে দেওয়া উচিত হবে না 

২০
X