পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে আশানুরূপ পর্যটক নেই। এখানকার হোটেল ও রিসোর্টের প্রায় ২৫ শতাংশ কক্ষ ভাড়া হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ব্যবসার ওপর মন্দা প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। ঈদ উপলক্ষে হোটেল-রিসোর্টে যে বাড়তি খরচ হয়েছে, তা ওঠানোও কষ্টসাধ্য হবে বলছেন ব্যবসায়ীরা। শ্রীমঙ্গলের দর্শনীয় স্থানগুলো হলো হাইল হাওরের বাইক্কা বিল, উঁচু-নিচু পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে সবুজের গালিচায় মোড়ানো চা-বাগান, বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন, বধ্যভূমি ৭১, শংকর টিলা লেক, ভাডাউড়া লেক, জাগছড়া লেক, ফুলছড়া গারো লাইনের লেক, বিদ্যাবিল হজম টিলা, নাহারপুঞ্জিতে শতবর্ষ গিরীখাত ও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান।
শ্রীমঙ্গল রাধানগর গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, চা বোর্ডের টি রিসোর্ট অ্যান্ড মিউজিয়াম, টি হ্যাভেন, লেমন গার্ডেন, বালিশিরা রিসোর্ট, নবেম রিসোর্ট, গ্র্যান্ড সেলিম রিসোর্ট, হিড বাংলাদেশসহ এখানে শতাধিক হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ রয়েছে।
জানা যায়, ৯০ শতাংশ পর্যটকই শ্রীমঙ্গলের হোটেল-রিসোর্টে রাত যাপন করে থাকেন। বাকি ১০ শতাংশ পর্যটক জেলা সদরসহ অন্যান্য উপজেলায় অবস্থান করে থাকেন। প্রতিটি স্পটে পুলিশ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশেষ করে ঈদের আগেই প্রতিটি হোটেল-রিসোর্টে আসত পর্যটক। কিন্তু এবার দেখা গেল ভিন্নচিত্র। ঈদের ছুটিতে শ্রীমঙ্গলে তেমন পর্যটক নেই। রমজানের কারণে টানা এক মাস বন্ধ থাকার পর ঈদে আশানুরূপ পর্যটক না পাওয়ায় ব্যবসায়ীরা হতাশ। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ঈদ উপলক্ষে হোটেল-রিসোর্টে যে বাড়তি খরচ হয়েছে, সেটা ওঠানোও তাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ব্যবসার ওপর মন্দা প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
শ্রীমঙ্গলে টি হ্যাভেন রিসোর্টের মহাপরিচালক মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, ঈদ উপলক্ষে আমরা যে ক্রেতা পাচ্ছি, তার বেশিরভাগই স্থানীয়। পর্যটক নেই বললেই চলে। অন্যান্য বছর আমাদের এখানে প্রচুর পর্যটক আসতেন। এবার শ্রীমঙ্গলে পর্যটক কম আসায় আমাদের বিক্রি কমেছে। এটা শুধু আমাদেরই নয়, সবারই কমবেশি একই সমস্যা হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও গ্র্যান্ড সেলিম রিসোর্টের মালিক সেলিম আহমেদ বলেন, ঈদের আগের দিন থেকে টানা তিন দিন যেখানে হাউসফুল থাকার কথা, সেখানে মাত্র ২৫ শতাংশ রুম ভাড়া হয়েছে। অথচ প্রতি বছর ঈদ উপলক্ষে পুরো রিসোর্ট হাউসফুল থাকত। এবারের মতো কম রুম বুকিং এর আগে কখনো হয়নি। এই ক্ষতি পোষাতে আমাদের কষ্ট হবে।
শ্রীমঙ্গল জোনের ট্যুরিস্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, ঈদ সামনে রেখে ট্যুরিস্ট পুলিশ নিরাপত্তা জোরদার করেছে। আমাদের প্রতিটি টিমে পাঁচজন করে পুলিশ সদস্য থাকবেন। একজন সাব-ইন্সপেক্টর আর চারজন কনস্টেবল দিয়ে প্রতিটি টিম গঠন করা হয়েছে। এমনকি বিভিন্ন স্পটে গোয়েন্দা তথ্য বা অগ্রিম তথ্য জানার জন্য সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যও থাকবেন।