সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন অভিযোগ করেছেন, কুড়িগ্রাম-৪ আসনের এমপি বিপ্লব হাসান পলাশ তাকে সপরিবারে হত্যার পরিকল্পনা করছেন। গতকাল শনিবার রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এদিকে এমপি বিপ্লব হাসান পলাশ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রীর অনিয়মের প্রতিবাদ করায় এ ধরনের অভিযোগ আনা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাকির বলেন, ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য কতিপয় জনবিচ্ছিন্ন নেতা দলের সুবিধা নেয়, কিন্তু কাজ করে না। সবসময় দলীয় নেতাকর্মীর সঙ্গে অশোভন আচরণ করে। এ ছাড়া দুর্নীতি, লুটপাট ও রিলিফের চাল বিক্রিসহ নানা ধরনের অপকর্ম করে যাচ্ছে। মাদক ব্যবসা, ধাপ্পাবাজি করে বেড়ায় তারা। এ ছাড়া তারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সম্পর্কে মিথ্যা, অসত্য, ভিত্তিহীন ষড়যন্ত্রমূলক সংবাদ প্রচার করে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেছে। আমরা এর নিন্দা ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল মোমেন, সাধারণ সম্পাদক আবু হোরায়রা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ খোকা, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নুরুল আমিন, দপ্তর সম্পাদক রমেস চন্দ্র সাহা (চন্দন), আইনবিষয়ক সম্পাদক নার্গিস বেগম, রৌমারী সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল করিম, শৌলমারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নুর আলম, দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আশরাফুল ইসলাম লাল মিয়া, চরশৌলমারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রশিদ মঞ্জুসহ উপজেলা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। সংবাদ সম্মেলন শেষে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ সময় পুলিশি বাধার মুখে পড়েন তারা।
এদিকে বর্তমান এমপি বিপ্লব হাসান পলাশের সমর্থনে রৌমারী উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি রেজাউল ইসলাম মিনু, সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম শাহিন, যুগ্ম সম্পাদক শাহ নেওয়াজ তুহিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাইদুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে মিছিল বের করলে তারা পুলিশি বাধার মুখে পড়েন।
রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল্লাহিল জামান কালবেলাকে জানান, সাবেক ও বতর্মান এমপি সমর্থিত দুটি কর্মসূচি ঘিরে পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম-৪ আসনের (রাজীবপুর, রৌমারী ও চিলমারী) এমপি বিপ্লব হাসান পলাশ কালবেলাকে বলেন, সাবেক এমপি জাকির হোসেন এলাকায় জমি দখল থেকে শুরু করে এমন কোনো অন্যায় নেই, যা তিনি করেননি। তিনি এমপি থাকাবস্থায় হাট-বাজার থেকে দ্বিগুণ টাকা আদায় করেছেন। বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের নামে সাইনবোর্ড টানিয়ে এলাকায় প্রচুর জমি দখল করেছেন। তার এসব বিষয়ে প্রশাসনিকভাবে তদন্ত চলছে।
তিনি বলেন, তার (জাকির হোসেন) এসব অপরাধের প্রতিবাদ করায় তিনি আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন কথাবার্তা বলছেন। আমি ঢাকায় আছি। শুনেছি আজ তিনি এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, তাকে নাকি আমি হত্যার পরিকল্পনা করছি। এসব কথা বলে তিনি নিজের অপরাধ ও দুর্নীতি আড়ালের চেষ্টা করছেন।