আগামী জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্র করে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র। চলমান পরিস্থিতিতে সব পক্ষকে সংযত হওয়ার পাশাপাশি বিরোধী দলের ওপর শক্তি প্রয়োগে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মতপ্রকাশ ও সমাবেশের অধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্লেমেন্ট ভউল। আর জাতিসংঘ মহাসচিবের উপমুখপাত্র ফারহান হক বলেছেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশে ‘শান্তিপূর্ণ, বিশ্বাসযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক’ নির্বাচনকে উৎসাহিত করে। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, রাজনৈতিক সহিংসতার পরিবেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
গত সোমবার রাতে এক টুইট বার্তায় জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্লেমেন্ট ভউল বলেন, ‘বাংলাদেশে চলমান বিক্ষোভের সময় সহিংসতা ক্রমেই বাড়ছে এবং গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ অবস্থায় আমি সব পক্ষকে সংযম অনুশীলন করার আহ্বান জানাই।’ ভিন্নমতকে সম্মান করা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের যে সমবেত হওয়া ও বিক্ষোভ করার অধিকার রয়েছে, তা কর্তৃপক্ষকে মনে করিয়ে দিতে চাই। দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’
গত সোমবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিবের উপমুখপাত্র ফারহান হক বলেন, ‘জাতিসংঘ বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ, বিশ্বাসযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনকে উৎসাহিত করে।’ তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে এক প্রশ্নের জবাবে ফারহান বলেন, জাতিসংঘ শরণার্থীদের প্রতি বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের উদারতার প্রশংসা করে।
এদিকে গত সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে চলমান সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে একটি বিশ্বাসযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিতে মার্কিন পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, গত সপ্তাহে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিক্ষোভ ঘিরে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতার ঘটনাগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং সহিংস অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানাই। আমরা বাংলাদেশের জনগণের জন্য শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার এবং নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরির তাগিদ দেওয়াসহ সব দলকে মৌলিক স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের প্রতি সম্মান বজায় রেখে সহিংসতা, হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানাই।
মুখপাত্র মিলার আরও বলেন, ভোটার, রাজনৈতিক দল, দলের তরুণ শাখা, পুলিশসহ সবার প্রতিশ্রুতির ওপর অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নির্ভর করে। রাজনৈতিক সহিংসতার পরিবেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। এ সময় বিএনপির সহিংসতা নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগের প্রশ্নের উত্তরে তিনি যে কথা বলেছেন, এ ক্ষেত্রেও তার মন্তব্য একই।
মন্তব্য করুন