কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২৬ এএম
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৭ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি একসঙ্গে

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দলগুলোর সংলাপ
সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি একসঙ্গে

প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তৃতীয় দফায় সংলাপ শুরু করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল শনিবার দুপুরে বিএনপির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এবারের পর্ব। গতকালই পর্যায়ক্রমে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, হেফাজতে ইসলাম, গণতন্ত্র মঞ্চ, বাম গণতান্ত্রিক জোট, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গেও ড. ইউনূসের সংলাপ হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সংলাপে অংশ নেওয়া প্রায় সব দলের নেতারা প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন। বড় দলগুলোর মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগামী জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ জানতে চাওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি দাবিও তুলে ধরেছেন। জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান নির্বাচন থেকে সংস্কার বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করলেও এ দুই বিষয়ে দুটি রোডম্যাপ চেয়েছেন সরকারের কাছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তৃতীয় দফার সংলাপ শেষে রাতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সরকারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সময় কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম ও প্রেস সচিব শফিকুল আলম। উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর।

সংবাদ সম্মেলনে মাহফুজ বলেন, প্রশাসনে যারা ফ্যাসিবাদের দোসর রয়েছে, তাদের শাস্তির আওতায় আনতে সরকার বদ্ধপরিকর। জনআকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্র সংস্কার করা হবে। শেখ হাসিনাসহ গণহত্যায় জড়িতদের বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ গণহত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া গুম কমিশনেও অভিযোগ জমা পড়েছে, সেসব নিয়ে কাজ চলছে।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে স্বস্তি ফিরবে, সরকার এ বিষয়ে খুবই আন্তরিক।

নির্বাচনী রোডম্যাপ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, নির্বাচনী রোডম্যাপের ব্যাপারে যে আলাপটা হচ্ছে, ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে, তার পাঁচটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়েছে। বাকিটা দু-এক দিনের মধ্যে ঘোষণা হবে। তিনি বলেন, ছয়টি কমিশন বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে কথা বলবে তাদের তিন মাসের টাইমলাইনের মধ্যে। এরপর তিন মাসের মধ্যে একটা রিপোর্ট দেবে। প্রতিবেদনগুলো নিয়ে আবার উপদেষ্টা পরিষদ রাজনৈতিক দল, সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে কথা বলবে। এরপর রিফর্মের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একটা ন্যূনতম ঐকমত্যে আসবে। ঐকমত্যের ওপর নির্ভর করবে টাইমলাইন। কারণ, কতটুকু রিফর্ম লাগবে, সেটাই দেখার বিষয়।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, একই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, নির্বাচনী কাজগুলো এগিয়ে যাবে, নির্বাচনের প্রস্তুতি, নির্বাচন কমিশন গঠনের কাজগুলো এগিয়ে যাবে। কারণ, ঐকমত্য রিফর্মের ব্যাপারে রিচ হলো যাতে খুব দ্রুত নির্বাচনটা দিয়ে দেওয়া যায়।

ইসলামী আন্দোলন: অন্য দলগুলোর মধ্যে সংলাপে অংশ নেওয়া ইসলামী আন্দোলন অন্তর্বর্তী সরকারকে ছয়টি সংস্কার কমিশনের সঙ্গে আরও ৯টি সংস্কার কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে। দলটির আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এ সংলাপে অংশ নেয়।

আলোচনাকালে রেজাউল করীম প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, বর্তমান সরকার জনমতের প্রতিফলনের সরকার। আপনাদের সঙ্গে দেশের জনগণ রয়েছে, আপনারা সবচেয়ে শক্তিশালী সরকার। কিন্তু খুনি, অর্থ পাচারকারী, দাগি, অপরাধীরা কীভাবে দেশ থেকে পালাল? আপনারা কেন তাদের দেশত্যাগের সুযোগ করে দিয়েছেন। এটা আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। সংস্কার কাজ শেষ করে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। স্বৈরাচারীরা যেন কোনোভাবে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হতে না পারে, তার সুষ্ঠু ব্যবস্থা করে নির্বাচন দিতে হবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রস্তাবগুলো হলো আইনবিষয়ক সংস্কার কমিশন, নাগরিক সেবাবিষয়ক সংস্কার কমিশন, পররাষ্ট্রবিষয়ক সংস্কার কমিশন, শিক্ষাবিষয়ক সংস্কার কমিশন, বাকস্বাধীনতাবিষয়ক সংস্কার কমিশন, স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশন, শ্রমজীবীবিষয়ক সংস্কার কমিশন, সংখ্যালঘু ও নৃগোষ্ঠীবিষয়ক সংস্কার কমিশন, মহিলা ও শিশুবিষয়ক সংস্কার কমিশন।

হেফাজতে ইসলাম: অন্যদের মধ্যে যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়নে আলেমদের সমন্বয়ে শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন এবং ২০১৩ সাল থেকে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনটির পক্ষ থেকে সংলাপে অংশ নেন আব্দুল বাছিত আজাদ, আহমদ আব্দুল কাদের, মাহফুজুল হক, মুহিউদ্দীন রাব্বানী, মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, জোনায়েদ আল হাবিব, আতাউল্লাহ আমিন, মনির হোসাইন কাসেমি, আজিজুল হক ইসলামাবাদী প্রমুখ।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ শেষে হেফাজতের মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামে হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি মামলা দেওয়া হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেই আছে ৮০টি। দ্রুত সময়ের মধ্যে সব মামলা প্রত্যাহার করার কথা বলেছি। ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও বায়তুল মোকাররম মসজিদে যোগ্য লোককে নিয়োগের কথা বলেছি। সেইসঙ্গে দুর্গাপূজায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছি।

গণতন্ত্র মঞ্চ: সংলাপে গণতন্ত্র মঞ্চের ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন সমন্বয়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। প্রতিনিধিদলে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি ছাড়াও ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির (রব) শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার এবং আকবর খান, আবুল হাসান রুবেল, আবু ইউসুফ সেলিম ও ইমরান ইমন। গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করেই নির্বাচনে যাওয়ার কথা প্রধান উপদেষ্টার কাছে বলেছে গণতন্ত্র মঞ্চ।

সংলাপ শেষে মাহমুদুর রহমান মান্না সাংবাদিকদের বলেন, স্পষ্ট করে বলেছি, আমরা একটা সরকার বদলানোর আন্দোলন করছি না, নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছি না, সামগ্রিকভাবে আন্দোলন করছি যাতে নির্বাচন ব্যবস্থা ও সংবিধান সংস্কারের প্রক্রিয়ায় একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র করা যায়। আবার যাতে ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে, সে কারণে সংস্কার আগে প্রয়োজন।

গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করেই নির্বাচনের পথে যেতে হবে উল্লেখ করে মান্না বলেন, আমরা বলেছি, যতদূর পর্যন্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সংস্কার করতে পারব, ততদূর পর্যন্ত আমরা সংস্কার করব। বাকি যেসব সংস্কার দরকার, তা পরের নির্বাচিত সরকার এসে করবে। সংস্কারের কর্মকাণ্ডকে আমরাসহ সব রাজনৈতিক দল সহযোগিতা করব। প্রধান উপদেষ্টাকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত বৈঠকের বিষয়টি বিবেচনায় রাখার কথাও বলেছি।

তিনি বলেন, সংস্কারের জন্য প্রয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতা করব আমরা। আমরা প্রশাসনের কিছু দুর্বলতা দেখছি, সীমাবদ্ধতা দেখছি। সিভিল পুলিশসহ প্রশাসনে এমন কিছু দেখছি, যা উদ্বেগ প্রকাশ করার মতো। এই বিষয়গুলো আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি। তিনি জানিয়েছেন বিষয়গুলো লক্ষ্য করেছেন।

গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি বলেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দল, শিক্ষার্থী, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা প্রয়োজন। একটা কাঠামো তৈরি করা দরকার। জাতীয় রাজনৈতিক কাউন্সিল হতে পারে। যেখানে অংশীজন বসবেন।

বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য: বাম গণতান্ত্রিক জোট থেকে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল সংলাপে অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ছিলেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক মাসুদ রানা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির শাহ আলম ও রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের রাজেকুজ্জামান রতন, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের ইকবাল কবির জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির আব্দুল আলী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও বাসদের খালেকুজ্জামান।

সংলাপ শেষে প্রিন্স সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বলেছি, এই সরকার যেন জনগণকে এভাবে উদ্বিগ্ন না করে। ইতোমধ্যে দুই মাস পার হয়েছে, জিনিসপত্রের দাম ভয়াবহ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এখনো রোধ হয়নি। আমরা বলেছি এগুলোকে জরুরি কর্তব্য হিসেবে নিতে হবে। কারণ, জনগণ যদি আশাহত হয়, তাহলে কোনো ভালো কাজ বা সংস্কারের কথা শুনবে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা আরও বলেছি সব সংস্কার করার দায়িত্ব এই সরকারের না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই। তবে এর মধ্যে প্রধান হবে নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার। আজ থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করে নির্বাচন কবে হবে, সেই রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। অন্য সংস্কারের যে কাজগুলো আছে, সেই প্রস্তাব তারা করে যাবেন এবং পরবর্তী নির্বাচিত সরকার সেই কাজগুলো করবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বগুড়ায় পদ ফিরে পেলেন যুবদলের ৫ নেতা

মেসির জন্মদিন কেন শুধু আক্ষেপই বাড়ায়!

বাংলাদেশের সম্ভাবনা সীমাহীন, নষ্ট করার সুযোগও সীমাহীন : গভর্নর

যুদ্ধবিরতির আগমুহূর্তের হামলায় ইসরায়েলে নিহত ৪

ইরানের আরেক পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত

৪ দেশে বিমান চলাচল স্বাভাবিক

৫৭ কলেজ থেকে ‘শেখ পরিবার’ বাদ দিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

বাবার অটোরিকশায় মাদ্রাসায় যাচ্ছিল মেয়ে, পথেই প্রাণ গেল দুজনের

ফি দিলেও হয়নি ফরম পূরণ, পরীক্ষা অনিশ্চিত মোশাররফের

ইরান-ইসরায়েল পূর্ণ যুদ্ধবিরতি কার্যকরে ট্রাম্পের শর্ত

১০

গুমে নিরাপত্তা বাহিনীর ভেতরকার মতানৈক্য ও বিদেশি সংযোগ পেয়েছে কমিশন

১১

যুদ্ধবিরতির জন্য ‘মিনতি করছেন’ ট্রাম্প, ইরানের দাবি

১২

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শতফুট গভীর খাদে বাস

১৩

‘গোল’ নয়, ‘গল্প’ লেখেন যিনি—জন্মদিনে সেই মেসিকে শ্রদ্ধা

১৪

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি শুরু

১৫

রাশিয়ার মিসাইল হামলায় কেঁপে উঠল মার্কিন দূতাবাস

১৬

ধর্ষণ মামলায় কৃষকদল নেতা কারাগারে, পদ স্থগিত

১৭

ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় মায়ামি, সামনে এবার পিএসজি

১৮

বি-২ বোমারু বিমানকে যুদ্ধবিরতির ক্রেডিট দিলেন ট্রাম্প

১৯

কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া শরীরে জন্য উপকারী নাকি ক্ষতিকর

২০
X