অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ খাতে সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও। গতকাল বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, এই সরকার দেশ শাসনের জন্য আসেনি, দেশ শাসনের সুষ্ঠু পথ বিনির্মাণের জন্য এসেছে। তাদের কাজ হচ্ছে, গত তিন নির্বাচনে জাতি যা থেকে বঞ্চিত হয়েছে—একটি গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করা। এজন্য কিছু মৌলিক বিষয়ে তাদের সংস্কার করতেই হবে। কী কী মৌলিক বিষয়ে তারা সংস্কার করবেন, আমরা সেই বিষয়ে কথা বলেছি। আগামী ৯ অক্টোবর আপনাদের মাধ্যমে আমাদের প্রস্তাবনাগুলো আমরা জাতির সামনে উন্মুক্ত করব। আমরা আমাদের চিন্তা জাতির সামনে তুলে ধরব কী কী সংস্কার এই মুহূর্তে প্রয়োজন, কী কী সংস্কার পরবর্তী পর্যায়ে আমাদের লাগবে। আমরা মনে করি, নির্বাচন থেকে সংস্কার বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দুটি রোডম্যাপ চেয়েছি। একটি সংস্কারের, অন্যটি নির্বাচনের।
গতকাল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় প্রথম দল হিসেবে সংলাপে অংশ নেয় বিএনপি। এরপর বৈঠক হয় জামায়াতের সঙ্গে। দলের আমিরের নেতৃত্বে সংলাপে জামায়াতের প্রতিনিধিদলে ছিলেন নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, আ ন ম শামসুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম খান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
সংলাপ শেষে শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, জামায়াত সংস্কারকে এক নম্বরে গুরুত্ব দিচ্ছে। সংস্কারের টাইমলাইন কী হবে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা দুটি বিষয় দেশবাসীর কাছে চেয়েছি এবং সরকারের কাছে জানিয়েছি। একটি রোডম্যাপ হবে সংস্কারের, অন্যটা নির্বাচনের। সংস্কার সফল হলে নির্বাচন সফল হবে। দুটি বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এই সরকার নিরপেক্ষ থেকে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেবে জাতিকে। আমরা শুরু থেকে বলে আসছিলাম সংস্কারের জন্য সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে চাই। সেই যৌক্তিক সময়টা কী হবে, এটা নিয়ে অচিরেই আমরা কাজ করব। বেশি দেরি হবে না, এভাবে আমরা সামনে এগোতে চাই।
জামায়াতের আমির আরও বলেন, জনগণ এবং সরকার একসঙ্গে কীভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত করতে পারে, সব ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারে, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কথাবার্তা হয়েছে। আমরা আশা করছি, বর্তমান যে সরকার আছে, তারা কোনো ধরনের পক্ষ-বিপক্ষের মানসিকতা না নিয়ে নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে দেশকে একটা ভালো পর্যায়ে নিয়ে নির্বাচন দিতে সক্ষম হবে।
দুর্গাপূজায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে শফিকুর রহমান বলেন, দুর্গাপূজায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখার জন্য করণীয় কী, এমন একটি প্রশ্ন এসেছিল। আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। জনগণের সঙ্গে সরকারের পার্টনারশিপ লাগবে। জনগণের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনগণ যদি একসঙ্গে কাজ করে, একটা অভূতপূর্ব দুর্গাপূজা হিন্দুধর্মের ভাইবোনরা উদযাপন করতে পারবেন।