আব্দুল্লাহ আল জোবায়ের
প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:৫৪ এএম
আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:৫৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সংকট কাটছে না

ভোটের বছরে বই নিয়ে শঙ্কা

ভোটের বছরে বই নিয়ে শঙ্কা

দেরিতে কার্যাদেশ (ওয়ার্ক অর্ডার) দেওয়া, পাল্প আমদানি বন্ধ এবং কাগজের মূল্য বৃদ্ধির কারণে চলতি বছরের পাঠ্যবই ছাপার কাজে বড় ধাক্কা খেয়েছিল সরকার। সে অভিজ্ঞতা থেকে এবার আগেভাগেই প্রক্রিয়া শুরু করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ছাপাখানার ব্যস্ততা এবং উপকরণের দাম বাড়তে পারে— সেটিও বিবেচনায় রাখা হয়েছিল। সব মিলিয়ে এবার লক্ষ্য, নভেম্বরের মধ্যে ছাপার কাজ শেষ করা। তবে এতকিছুর পরও পাঠ্যবই নিয়ে সংকট কাটছে না। বোর্ডের প্রাক্কলিত দরের চেয়ে কম দরে কাজ বাগিয়ে নিয়েছে প্রেসগুলো। সে কারণে মানসম্মত বই পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তো আছেই; সেইসঙ্গে যোগ হয়েছে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাণ্ডুলিপি জমা না দেওয়া, বইয়ের উজ্জ্বলতা ৫ শতাংশ কমিয়ে ফেলা, এনসিটিবির টেন্ডার ও বইয়ের কার্যাদেশে দেরি, কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে সক্ষমতার বাইরে কাজ দেওয়া, কাছাকাছি সময়ে বেশিরভাগ কাজ শুরুর প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতার শঙ্কা। সব মিলিয়ে এবারও নিম্নমানের কাগজে বই ছাপার পাশাপাশি ডিসেম্বরের মধ্যে সব বই পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত সংশ্লিষ্টরা।

এনসিটিবির তথ্য অনুসারে, এবার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে ৩৩ কোটির মতো বই ছাপা হবে। শিক্ষক গাইডসহ এ সংখ্যা প্রায় ৩৫ কোটি। প্রাথমিকে এবার ২ কোটি ১৪ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর জন্য ৯ কোটি ৩৮ লাখের বেশি এবং মাধ্যমিকের ১ কোটি ৬৭ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য ২৩ কোটির বেশি বই ছাপানো হবে। চলতি বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বই নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী ছাপা হয়েছিল। এবার সেখানে যোগ হচ্ছে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণির বই। অন্যান্য শ্রেণির ক্ষেত্রে পুরোনো শিক্ষাক্রমের বই ছাপানো হচ্ছে।

এনসিটিবি সূত্র জানায়, এবার প্রথম, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই ছাপার ক্ষেত্রে টেন্ডারে প্রতি ফর্মায় এনসিটিবি দর দিয়েছিল ৩ টাকা ১০ পয়সা। কিন্তু ছাপাখানাগুলো সর্বনিম্ন ২ টাকা ২০ পয়সা দরে এ কাজ নিয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বইয়ের ক্ষেত্রে এনসিটিবির দর ছিল ৩ টাকা ১০ পয়সা। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো এ কাজ নিয়েছে ২ টাকায়। ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে ফর্মাপ্রতি বইয়ের প্রাক্কলিত দর গড়ে প্রায় ৩ টাকা ধরা হলেও মুদ্রণকারীরা মাত্র ১ টাকা ৭০ পয়সায় কাজ নিয়েছে। অষ্টম শ্রেণির প্রাক্কলিত দর ২ টাকা ৬৫ পয়সা নির্ধারণ করেছে এনসিটিবি। তবে এই বইয়ের দরপত্র মূল্যায়ন কার্যক্রম এখনো শেষ হয়নি। নবম শ্রেণির প্রাক্কলিত দর এখনো জানানো হয়নি।

সূত্র আরও জানায়, প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত বই ছাপার টেন্ডার শেষ করে বরাদ্দপত্র

(নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড-নোয়া) দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই ছাপানোর কাজও শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির পাণ্ডুলিপি ক্রয় কমিটিতে পাস হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী স্বাক্ষর করলেই বই ছাপানোর কার্যাদেশ দেওয়া হবে। ষষ্ঠ শ্রেণির চুক্তি হয়েছে, যেসব প্রেস কাজ পেয়েছে সেগুলো তিন দফা পরিদর্শন করা হয়েছে। সন্তোষজনক রিপোর্ট পেলেই কার্যাদেশ দেওয়া হবে। সপ্তম শ্রেণির পাণ্ডুলিপি ক্রয় কমিটিতে পাস হয়েছে। অষ্টম শ্রেণির বইয়ের পাণ্ডুলিপি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে ক্রয় কমিটিতে যাবে। তারপর কার্যাদেশ দেওয়া হবে। সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই সেপ্টেম্বরে ছাপা শুরু হতে পারে। আর নবম শ্রেণির বইয়ের জন্য সবেমাত্র টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। পাণ্ডুলিপির ওপর তিন দিনব্যাপী যৌক্তিক মূল্যায়ন কর্মশালা শুরু হয়েছে ২৯ আগস্ট।

এনসিটিবির আশা, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির বই চলে আসবে। নবম শ্রেণির বইয়ের জন্য ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাস্তবতা কিছুটা ভিন্ন। কারণ ব্যাংকগুলো এখন আগের মতো একবারে ঋণের টাকা ছাড় করে না। ধাপে ধাপে দেয়। সে কারণে প্রেস মালিকরা প্রথম ধাপের ঋণ পেয়ে কাজ শুরু করেন। এনসিটিবিকে বুঝিয়ে দিয়ে টাকা নিয়ে ঋণ শোধ করেন। এরপর আবার পরের ধাপের ঋণ নিয়ে কাজ করেন। একইভাবে শোধ করেন। পুরো প্রক্রিয়ায় যে সময় লাগে, তাতে বই ছাপার কাজ ব্যাহত হতে পারে।

প্রাথমিকের বই নিয়ে যত অভিযোগ:

প্রাথমিকের বইয়ের কাজ ও ছাপা নিয়ে প্রেস মালিকদের মধ্যে রয়েছে তীব্র ক্ষোভ। বেশিরভাগ প্রেস মালিক বলছেন, বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও স্বাভাবিকের চেয়ে কম দর দিয়ে প্রাথমিকের ৮০-৮৫ শতাংশ কাজ পেয়ে গেছে অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেস, কচুয়া প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন্স ও টাইমস মিডিয়ার মতো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

অন্যদের অভিযোগ, এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের সক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি কাজ দেওয়া হয়েছে। ফলে নির্ধারিত সময়ে বই সরবরাহে অনিশ্চয়তার পাশাপাশি মান নিয়েও রয়ে গেছে শঙ্কা। শেষ সময়ে নিম্নমানের বই গছিয়ে দিলেও এনসিটিবির কিছুই করার থাকবে না। আবার প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ পরিদর্শনে যে প্রতিষ্ঠানকে (ইন্সপেক্টিং এজেন্ট) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সেটি অগ্রণী প্রেসের বেনামি প্রতিষ্ঠান বলে অভিযোগ রয়েছে।

প্রেস মালিকরা বলছেন, সব নিয়ম-কানুন ভঙ্গ করে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও যে প্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিকের বই পরিদর্শনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, দুই বছর আগে এক কর্মচারীর দুর্নীতির কারণে সেই ফার্মকে কালো তালিকাভুক্ত করেছিল এনসিটিবি। প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড লাইসেন্সেও সমস্যা আছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেসের মালিক কাউসার উজ্জামান রুবেল মোবাইল ফোনে বলেন, ‘সিন্ডিকেট করেই তাদের বিরুদ্ধে লেগেছে একটি পক্ষ।’

এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানাবেন বলে তিনি ফোন কেটে দেন। এরপর তাকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি কেটে দিয়েছেন কিংবা সাড়া দেননি।

জানা গেছে, দৈনিক ১ হাজার রিম কাগজ ছাপার সক্ষমতা বিবেচনায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়েছে। তবে দেশে এত বেশি সক্ষমতা কোনো প্রেসের নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির চেয়ারম্যান শহীদ সেরনিয়াবাত বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, বাংলাদেশে কোনো মেশিনে দৈনিক এই পরিমাণ কাগজ ছাপানো সম্ভব নয়। আমাদের দেশে শত শত প্রেস আছে, তাদের মধ্যে কাজ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না কেন? দরপত্রে সক্ষমতার শর্ত কমিয়ে দিলেই তো অনেকে কাজ পায়। কিন্তু কয়েকটি প্রেসকে কাজ বেশি দেওয়ার জন্য সেটি করা হচ্ছে না।’

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘এদেশে বেশিরভাগ ছাপার মেশিনই ভারতীয়। এ ধরনের মেশিনে দিনে ৪০০-৫০০ রিমের বেশি কাগজ ছাপানোর সুযোগ নেই। কিন্তু দুয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে সক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি কাজ দেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে কচুয়া প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন্সের মালিক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘কাজ না পেয়েই মুদ্রণ শিল্প সমিতির অনেকে বিভিন্ন অভিযোগ করছেন। এগুলো সত্য নয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সব কাজ শেষ করা হবে।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবির উৎপাদন নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. সাইদুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ‘সরকারি টেন্ডারের নিয়ম অনুসারে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দেওয়া হয়। অগ্রণী, কচুয়ার মতো কিছু প্রতিষ্ঠান কম দর দেয় বলেই বেশি কাজ পায়। তারা অল্প লাভে কাজ করে দেবে, এতে সরকারেরও কয়েক কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।’

তিনি বলেন, ‘সক্ষমতার বাইরে কাউকে কাজ দেওয়া হয়নি। এর পরও কেউ যদি নিম্নমানের বই দেয় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এনসিটিবি নিযুক্ত পরিদর্শন প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন বলে জানান অধ্যাপক সাইদুর রহমান।

এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ‘ওই ফার্মের ট্রেড লাইসেন্স যাচাই করা হয়েছে সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে। কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি।’

তবে ছাপার কাজ পরিদর্শনে বর্তমান পদ্ধতিতে সমস্যা রয়েছে জানিয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই থার্ড পার্টিই দুর্নীতির আখড়া। আমরা হয়তো আগামীতে ইন্সপেক্টিং এজেন্টই রাখব না। বিএসটিআই বা সায়েন্স ল্যাবের সঙ্গে আমরা চুক্তি করতে চাই। তাদের কাছ থেকেই দ্রুত রিপোর্ট নেব।’

তিনি আরও বলেন, ‘টেন্ডারের শর্ত অনুযায়ী সবচেয়ে কম দর দেওয়া প্রতিষ্ঠানকে কাজ না দিলে প্রশ্ন উঠবে, অন্যদের থেকে কোনো সুবিধা পাচ্ছি কি না। সেক্ষেত্রে মামলাও হতে পারে। একজনের কাছে কাজ দেওয়া ভালো নয়, সেটি আমরা জানি। কিন্তু কেউ যদি কম দর দিয়ে বেশি কাজ পায় আমরা কী করতে পারি? কেউ যদি কাজ পেয়েও নিম্নমানের বই দেয় তাহলে আমরা আগেও ব্যবস্থা নিয়েছি, আগামীতেও নেব।’

দর কমানোয় নিম্নমানের বই ছাপানোর শঙ্কা : নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিটিবির এক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, ‘এবার দর ও উজ্বলতা কমানো হয়েছে। এর ফলে ভালো বই পাওয়ার সম্ভাবনা কম। সরকার তো বলেনি, দর কমাতে। প্রয়োজন হলে সরকার আরও টাকা দেবে। কিন্তু টাকা বাঁচিয়ে সরকারকে খুশি কেন করতে হবে— যদি শিক্ষার্থীরা নিম্নমানের বই পেয়ে অখুশি হয়!’

তিনি বলেন, ‘দর কমিয়ে কাজ বাগিয়ে নিলেও এতে নিম্নমানের বই ছাপানোর প্রবণতা দেখা যাবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বই ছাপানোকে ‘সাইড বিজনেস’-এ পরিণত করা হয়েছে। এর ফলে মনিটরিং করেও নিম্নমানের বই এড়ানো সম্ভব নয়। ভিন্ন পদ্ধতি দরকার। এনসিটিবি যেহেতু ক্রেতা, সেক্ষেত্রে ক্রয় প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ করা দরকার।’

পাঠ্যবইয়ের মান নিশ্চিত করার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক কালবেলাকে বলেন, ‘যারা সবচেয়ে কম দর দিয়ে কাজ পায়, কিন্তু অতীত রেকর্ড খারাপ, তাদের কাজ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সর্বনিম্ন দরের একটা প্রথা বা রেওয়াজ তৈরি হয়েছে; কিন্তু কম দর দিলেই যে তাকে কাজ দিতে হবে এমনটি নয়। নিম্নমানের বই দিলে তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা উচিত। কম দরে না দিয়ে যাচাই-বাছাই করে তারপর কাজ দেওয়া উচিত। সরকারের টাকা সাশ্রয়ের মানে এই নয় যে, নিম্নমানের বই ছেলেমেয়েদের হাতে দিতে হবে।’

শিক্ষার্থীরা কি নির্দিষ্ট সময়ে বই পাবে?

গত জুলাই মাসে এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেছিলেন, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির বই ছাপানোর কাজ অক্টোবর আর নবম শ্রেণির বই নভেম্বরের মধ্যে ছাপতে হবে। বাস্তবতা বলছে, সেটি সম্ভব হবে না। এমনকি ডিসেম্বরের মধ্যেই বই ছাপার কাজ শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও বিপণন সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, ‘সেপ্টেম্বরে যদি নবম বাদে বাকি ক্লাসগুলোর কার্যাদেশ দেওয়া হয়, তবু ঠিক সময়ে বই পাওয়া যাবে না। এর বাইরে গত বছর যাদের সক্ষমতার বাইরে কাজ দেওয়া হয়েছিল, যে কারণে তারা এপ্রিল-মে মাসেও বই দিয়েছে এনসিটিবিকে, এবারও অদৃশ্য কারণে তাদেরকেই সক্ষমতার বেশি কাজ দেওয়া হয়েছে। যদি অলৌকিক কারণে মেশিনের সক্ষমতা বেড়ে যায়, তাহলে হয়তো নির্দিষ্ট সময়ে বই যাবে। নয়তো ঠিক সময়ে বই আমরা কল্পনাও করতে পারি না। অক্টোবর বা নভেম্বরে বই দেওয়ার মতো প্রস্তুতি এনসিটিবিরও নেই।’

রুপালী প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজেস-এর মালিক সফিউল্লাহ বলেন, ‘বই ছাপার জন্য এনসিটিবি যে সময় বেঁধে দিচ্ছে, তা ন্যায্য নয়। ওই সময়ের মধ্যে ছাপতে হলে আরও আগে কাজ শুরু করা উচিত ছিল। আগে ৭০ দিনের মধ্যে বই দিতে হলেও এবার ১০-১৫ দিন কমিয়ে দিয়েছে।’

ব্রাইট প্রিন্টার্সের স্বত্বাধিকারী এসএম মহসিন বলেন, ‘এনসিটিবি যদিও বলে সব কাজ হয়ে গেছে; কিন্তু ষষ্ঠ শ্রেণির বইয়ের কাজ যারা পেয়েছে, তারা এখনো উৎপাদনে যেতে পারেনি। সপ্তম শ্রেণির পাণ্ডুলিপি এখনো আমাদের হাতে আসেনি। অষ্টম ও নবম শ্রেণির বই পেতেও দেরি হবে। এসব কারণে আমরাও ঠিক সময়ে বই দিতে পারব কি না, সে আশঙ্কা করছি।’

জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাক-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণির বই আমরা ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পেয়ে যাব। তবে একটু বিপাকে পড়েছি নবম শ্রেণির বই নিয়ে। লেখকদের কাছ থেকে পাণ্ডুলিপি আসতে দেরি হওয়ায় টেন্ডার দিতে দেরি হয়েছে। আশা করছি, নবম শ্রেণির বই ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পেয়ে যাব।’

বইয়ের উজ্জ্বলতা কমানোর যৌক্তিকতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এবার আমরা উজ্জ্বলতা ৮৫ থেকে কমিয়ে ৮০ করেছি। কারণ, রিসাইকেল কাগজে উজ্জ্বলতা এর বেশি করা যাচ্ছে না। বাজারে যাতে কাগজের সংকট তৈরি না হয় এবং দাম সহনীয় থাকে সে কারণে এমনটি করা হয়েছে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

হোটেলকক্ষে গোপন ক্যামেরা? মোবাইল দিয়ে শনাক্ত করবেন যেভাবে

পদাবনতি দিয়ে বদলি হলেন সেই কৃষি কর্মকর্তা

আমির খানের গোপন সন্তান থাকার অভিযোগ ভাই ফয়সালের

জিপিএ-৫ পেয়েও কলেজ পায়নি ৫৭৬৫ জন

শিল্পাকে বিয়ে করতে কঠিন শর্ত মানেন রাজ

ভুটানকে হারিয়ে সাফে শুভ সূচনা বাংলাদেশের

৩১ দফার সমর্থনে বিএনপি নেতা ফয়সাল আলীমের গণসংযোগ ও পথসভা

ভারতে আ.লীগের রাজনৈতিক অফিস চালু নিয়ে কড়া অবস্থানে সরকার

সাতক্ষীরায় জেল পলাতক ১১ মামলার আসামি গ্রেপ্তার

প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় শিক্ষিকাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা স্কুলছাত্রের

১০

শিল্টনের বিশ্বরেকর্ড ভেঙে ইতিহাস গড়লেন ব্রাজিলিয়ান গোলকিপার

১১

ফিল্ম স্টাইলে ব্যবসায়ীর বসতঘরে গুলি

১২

জানা গেল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে চুলের মুঠি ধরে চড় মারার কারণ

১৩

ঘরের ভেতর জামাকাপড় শুকাচ্ছেন? হতে পারে যেসব বিপদ

১৪

ডিএমপির সাবেক এডিসি নাজমুল বরখাস্ত

১৫

বৈদেশিক কর্মসংস্থানের নতুন প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধন

১৬

পাথরকাণ্ডে দুদকের তালিকায় সেই মোকাররিম

১৭

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ, দেখবেন যেভাবে

১৮

‘সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলে সেই মাহিন সরকারসহ প্রার্থী হলেন যারা

১৯

জানা গেল আইসিসি র‍্যাঙ্কিং থেকে রোহিত-কোহলির নাম মুছে যাওয়ার কারণ

২০
X