কালবেলা প্রতিবেদক ও জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:১৩ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

জাকসুর ফল নিয়ে হযবরল

ক্যাম্পাসে দফায় দফায় বিক্ষোভ
জাকসুর ফল নিয়ে হযবরল

ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ২৬ ঘণ্টা পর সিদ্ধান্ত হলো গণনার পদ্ধতি কী হবে! এমন ঘটনা ঘটেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে। আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটগ্রহণ শেষ হয় গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায়। যদিও কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি থাকায় তাদের ভোট নেওয়া হয়েছে সন্ধ্যা পর্যন্ত। ভোটের দিন রাতেই হল সংসদের ভোট গণনা শুরু হলেও কেন্দ্রীয় সংসদের ভোট গণনা করা হবে কোন পদ্ধতিতে, সেই সিদ্ধান্ত হয় পরদিন—গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায়। এরপর ‘ম্যানুয়াল’ পদ্ধতিতে হাতে ভোট গণনা শুরু হয়।

যদিও এই সময়ের মধ্যে ঘটে গেছে বহু ঘটনা। শুরুটা হয় নির্বাচনের শেষ ভাগে আট প্যানেলের পাঁচটির ভোট বর্জনের ঘোষণার উত্তাপ দিয়ে। ভোট বর্জনকারীরা দফায় দফায় বিক্ষোভ করেন ক্যাম্পাসে। সেইসঙ্গে চলে পুনঃভোটের দাবি আরও জোরালো করার চেষ্টা। আবার ভোট গণনায় দেরি হওয়ায় শিবিরের পক্ষ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। ক্যাম্পাসে বিদ্যমান নানা কারণে ফল স্থগিতের মতো আশঙ্কা তৈরি হয়। অন্যদিকে, দ্রুত ফল ঘোষণার দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে একদল শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। এটিকে জাকসু বন্ধের পাঁয়তারা বলে দাবি করে ছাত্রশিবির।

জাকসু নির্বাচনে অব্যবস্থাপনা ও ফলাফল প্রকাশে বিলম্বের প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। শুক্রবার রাত ৮টায় ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার উদ্যোগে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। আর ফল স্থগিতের চেষ্টা করা হলে প্রতিহত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু।

এদিকে শেষ সময় এসে রাত পৌনে ৯টার দিকে নির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে জাকসু নির্বাচন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন কমিশনার অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার। এত এত ঘটনার ভিড়ে ক্যাম্পাসে শোকের আবহ তৈরি হয় নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা শিক্ষিকার মৃত্যুর খবরে। সব মিলিয়ে শোক, অসন্তোষ আর অব্যবস্থাপনার মধ্যেই জাকসু নির্বাচনের ফলের অপেক্ষা বেড়ে চলে। সর্বশেষ গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে ২১টি হল সংসদের সব ভোট গণনা শেষ হওয়ার খবর পাওয়া যায়। আর কেন্দ্রীয় সংসদের ভোট গণনা শুরু হয় সন্ধ্যা ৭টার পর পর।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক-শিক্ষিকারা জরুরি বৈঠকে বসেন। বৈঠক থেকে কেন্দ্রীয় সংসদের ভোট হাতে গণনার সিদ্ধান্ত হয়। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ‘ভোট হাতে গণনা হবে নাকি মেশিনে গণনা হবে, সেটি নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা শেষে হাতে ভোট গণনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ (শুক্রবার) রাতের মধ্যেই আমরা যেন ফল ঘোষণা করতে পারি, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।’

জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক লুৎফর এলাহী বলেন, ‘সন্ধ্যা পর্যন্ত হল সংসদের ভোট গণনা চলেছে। এখনো একটি হলের ভোট গণনা বাকি। এটি শেষ করে আমরা কেন্দ্রীয় সংসদের ভোট গণনা শুরু করব। কখন শেষ করতে পারব, তা বলতে পারছি না। শেষ হলেই ফল প্রকাশ করা হবে। ভোট গণনায় টেবিলের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।’

জাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রাতের মধ্যেই ভোট গণনা শেষ করে ফল ঘোষণা করা হবে। তবে সেটার নির্দিষ্ট সময় নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। রাতের শেষভাগেও (ফল ঘোষণা) করা হতে পারে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকেই ভোট গণনা শুরু করা হয়েছে। ২১টি হলের মধ্যে ১৯টি হলের ভোট গণনা শেষ হয়েছে। আমরা দ্রুত ভোট গণনার জন্য জনবল বৃদ্ধি করেছি। প্রার্থীদের এজেন্টের সামনে স্বচ্ছতা বজায় রেখে ভোট গণনা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই—এমন কাউকে ভোট গণনায় রাখা হয়নি।

কয়েকজন পোলিং এজেন্টের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একজন শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫ ও হল সংসদে ১৫টি করে ভোট দিয়েছেন। হল সংসদে একজন ভোটারের ১৫টি করে ভোট গুনতে পুরো এক দিন পার হয়ে গেছে। সেখানে কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫টি করে ভোট গুনতে আরও বেশি সময় লাগবে।

এদিকে নির্বাচনের দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও নির্বাচনের পোলিং অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতা মারা গেছেন। তার মৃত্যুর খবর শুনে ভোট গণনার কক্ষে নির্বাচনে দায়িত্বরত পোলিং কর্মকর্তার অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

উপস্থিত সবার উদ্দেশে নির্বাচন কমিশনার রেজওয়ানা করিম বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে আমি আপনাদের সবার কাছে অনুরোধ করব, উনার (জান্নাতুল) জন্য দোয়া করবেন। এই মুহূর্তে আমরা যেহেতু একটা কাজের মধ্যে আছি, আমরা চাইলেও তা অসম্পূর্ণ রাখতে পারছি না। আমাদের এ কাজটাও চালিয়ে যেতে হবে।’

ভোট গণনায় বিলম্ব এবং শিক্ষক মৌমিতার মৃত্যুতে ক্ষোভ প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলন করেন নওয়াব ফয়জুননেসা হলের রিটার্নিং কর্মকতা সুলতানা আক্তার। তিনি বলেন, ‘গত (বৃহস্পতিবার) রাতে যদি গণনা শেষ হয়ে ফল প্রকাশ হতো, তাহলে হয়তো আজ আমার সহকর্মীর মৃত্যুর সংবাদ শুনতে হতো না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কি জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যুর দায় এড়াতে পারে? আরও কে অসুস্থ হবেন, তার নিশ্চয়তা কে দেবে? হলে ভোট কাস্ট হলেও গণনা কেন সিনেট ভবনে করতে হলো?’

অধ্যাপক সুলতানা প্রশ্ন তুলে আরও বলেন, ‘২১টি হলে ২১টি টেবিলে একযোগে গণনা করা গেলে সময় বাঁচত। ইভিএম বা যন্ত্রের বদলে হঠাৎ করে ম্যানুয়ালি গণনার সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হলো? কার স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত? জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ অব্যবস্থাপনার সরাসরি ফল।’

এদিকে ভোট গণনা ও ফল প্রকাশে দেরি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ পরিস্থিতিতে দ্রুত ভোট গণনা শেষ করা, পোলিং এজেন্টদের আনুষ্ঠানিক ফল জানানো এবং নির্বাচনে অনিয়মের উত্থাপিত অভিযোগ নিষ্পত্তি করাসহ তিন দাবি নিয়ে পাঁচ সদস্যের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদল উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এ সময় অধ্যাপক সোহেল আহমেদ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন।

ভোট গণনায় বিলম্ব হওয়ার কারণ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে যেসব কারণে ভোট গণনায় দেরি হয়েছিল, সেগুলো আমরা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। আমরা আশা করছি, এ প্রস্তুতি নেওয়ার ফলে এবং আজ (শুক্রবার) যে লোকবল আছে, তাতে আমরা আজ রাতের ভেতর ভোট গণনা সম্পন্ন করে বেসরকারিভাবে ফল প্রকাশ করতে পারব। যেহেতু ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গণনার বিষয়ে সবার আগে থেকে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি বা জানাশোনা ছিল না, তাই ভোট গণনার শুরুর দিকে অনেকটা ধীরগতিতে এগিয়েছে। পরে অবশ্য ভোট গণনার গতি বেড়েছে।’

সিনেট ভবনের কক্ষে শুরুতে পাঁচটি টেবিলে (প্রতি টেবিলে একটি হলের) ভোট গণনা শুরু হয়। এ টেবিলগুলো সিসিটিভি ক্যামেরার পর্যবেক্ষণে ছিল। পরে গতকাল সকালে টেবিলের সংখ্যা বাড়িয়ে ১০টি করা হয়।

ভোট গণনায় বিলম্বে শিবির সভাপতির ক্ষোভ: জাকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণের একদিন পরেও গণনা শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। গতকাল ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে শিবির সভাপতি বলেন, ‘জাকসু নির্বাচন ও সময় জ্ঞানহীন প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় মানে ক্রিয়েটিভ ও ইনোভেটিভ আইডিয়া জেনারেট হবে—এটাই আমরা জানি। কিন্তু সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা প্রশাসনের দায়িত্ব পালন করছেন, উনারা যে কতটা সময় ও ব্যবস্থাপনা জ্ঞান রাখেন, মাশাআল্লাহ জাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে তা প্রমাণ দিচ্ছেন। পুরো দুনিয়া সেকেন্ড হিসাব করে পথ চলে। আর আমরা দিন-মাস হিসাব করি। কী পরিমাণ প্রোডাক্টিভ সময় আমরা নষ্ট করছি, তার হিসাব কে দেবে। তাহলে কীভাবে আমরা বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকব। দলকানা, নিম্নমানের ব্যবস্থাপনা জ্ঞান এবং সময় জ্ঞানহীন শিক্ষক ও প্রশাসন দ্বারা কোনো বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না। চলতে দেওয়া হবে না।’

গতকাল বিকেলে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ তোলেন ছাত্রশিবির-সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম। জাকসু নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, ‘ভোটগ্রহণের এক দিন পার হলেও ভোট গণনা শেষ হয়নি। এখানে সুস্পষ্টভাবে আমরা ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাচ্ছি। আমরা ভোটের আগের দিন থেকে প্রশাসনকে বিভিন্নভাবে বলে আসছিলাম যে, কোন জায়গাগুলোতে লুপ হোল রয়েছে, কোন জায়গাগুলোতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সেগুলোর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করুন। আমরা একটি ফেয়ার নির্বাচন চাই, শিক্ষার্থীরা যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবেন, কিন্তু আপনারা ফেয়ার নির্বাচন করুন।’

ভোট গণনায় কেন বিলম্ব: জাকসুতে মোট ভোটার ছিলেন ১১ হাজার ৭৪৩ জন, যেখানে মোট ভোট পড়েছে ৬৭ থেকে ৬৮ শতাংশ। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে ভোট গণনা শুরু হয়। ভোট গণনা ও ফল প্রকাশে কেন এত দেরি, জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব এ কে এম রাশিদুল আলম কয়েকটি কারণ তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ভোট গণনার জন্য ওএমআর মেশিন প্রস্তুত ছিল। কিন্তু কয়েকজন প্রার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাতে ভোট গণনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ম্যানুয়ালি করলে একটু বেশি সময় লাগা স্বাভাবিক। দ্বিতীয়ত, সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুটি হলে কিছুটা দেরি হয়। কয়েকটি হলে ভোটগ্রহণ মাঝপথে কিছু সময়ের জন্য স্থগিত ছিল। বিশেষ করে দুটি বড় হলে, যেখানে এক হাজারের বেশি ভোটার ছিলেন, সেখানে দুপুর পর্যন্ত খুব কম ভোট পড়েছিল। পরে বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার দিকে ভোটারদের ভিড় বাড়ে। নিয়ম অনুযায়ী, যারা লাইনে ছিলেন, তাদের সবাইকে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে হয়। সে কারণে ওই কেন্দ্রগুলো থেকে ব্যালট বাক্স আসতে রাত সাড়ে ৯টা বেজে যায়। আবার সব কেন্দ্রের ব্যালট বাক্স আসা পর্যন্ত গণনা শুরু করা যায় না, ফলে ভোট গণনা শুরু হয় রাত ১০টার পর।

তৃতীয়ত, ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গণনার ক্ষেত্রে আগে থেকেই যথাযথ প্রস্তুতি বা অভিজ্ঞতা না থাকায় শুরুতে গণনার গতি ছিল ধীর। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গতি কিছুটা বাড়ে। চতুর্থত, সিনেট ভবনের কক্ষে প্রথমে ৫টি টেবিলে (প্রতিটি টেবিল একটি হলের জন্য) ভোট গণনা শুরু হয়। এসব টেবিল সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় ছিল। গতকাল সকালে টেবিল সংখ্যা বাড়িয়ে ১০টি করা হয় এবং সেগুলোর পাশেও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়, যাতে সব কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও রেকর্ড করা সম্ভব হয়। পঞ্চমত, বৃহস্পতিবার রাতে অনেক হলের পোলিং কর্মকর্তা উপস্থিত থাকলেও পোলিং এজেন্টরা ছিলেন না। অথচ ব্যালট বাক্স খোলা ও হিসাব মেলানোর কাজটা পোলিং এজেন্টদের উপস্থিতিতেই হওয়া উচিত। তা ছাড়া সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার উপস্থিতিও বাধ্যতামূলক। নির্বাচন কমিশন সেটি নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে; কিন্তু অনেক হলে এজেন্ট অনুপস্থিত থাকায় গণনায় দেরি হয়।

নির্বাচন কমিশন থেকে একজনের পদত্যাগ: জাকসু নির্বাচন কমিশন থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন কমিশনার অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার। গতকাল রাত পৌনে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের নিচে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।

নির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘আমি চাপের মুখে পদত্যাগ করিনি। আমাকে বরং চাপ দেওয়া হয়েছে—যেন আমি পদত্যাগ না করি। আমি কখনো কাউকে ভয় করিনি, এখনো করব না। আমার কাছে যেটা সঠিক মনে হয়েছে, আমি সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন এবং শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাবেক সহসভাপতি। এর আগে বৃহস্পতিবার নির্বাচনের কার্যক্রম থেকে পদত্যাগ করেন বিএনপিপন্থি আরও তিন শিক্ষক।

ফল স্থগিতে চেষ্টা হলে প্রতিহত করার ঘোষণা স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন প্যানেলের: জাকসু নির্বাচনের ফল স্থগিত করা হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু। গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় এই সমন্বয়ক বলেন, ‘আমরা শুনতে পাচ্ছি একটি স্বার্থান্বেষী মহল নির্বাচনের ফল স্থগিতের চেষ্টা চালাচ্ছে। এমন কোনো কিছু করার চেষ্টা করা হলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিহত করব।’

জিতু বলেন, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের দাবি—ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন ভোট গণনা শেষ করে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র করা হলে আমরা সেটা মেনে নেব না। প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়সূচি পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। আর ফলাফলে যে রায় আসবে, তা আমরা মেনে নেব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কেরানীগঞ্জে দিনদুপুরে যুবক খুন

সবজিতে কিছুটা স্বস্তি, মাছ কিনতে বিপাকে ক্রেতারা

বিশ্লেষণ / সামরিক শক্তিতে কতটা এগিয়ে কাতার

অভিজ্ঞতা ছাড়াই আবেদন করুন আবুল খায়ের গ্রুপে

পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে কি না বুঝবেন কীভাবে, জানালেন চিকিৎসক

ছোট ভাইয়ের বঁটির কোপে বড় ভাই খুন 

দারাজের এইচআর বিভাগে ইন্টার্ন করার সুযোগ, আজই ‍আবেদন করুন

সুনামগঞ্জে কার-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ২

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশে চাকরির জন্য আবেদন করুন

‘জাকসুতে ভোট কারচুপির প্রমাণ দিতে পারলে চাকরি ছেড়ে দেব’

১০

মুখ থুবড়ে পড়ে আছে সাড়ে ৪ কোটি টাকার প্রকল্প

১১

বৃষ্টি বাড়বে না কমবে, জানাল আবহাওয়া অফিস

১২

রেকর্ডের দ্বারপ্রান্তে তাসকিন-লিটন

১৩

নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী কে এই সুশীলা কার্কি

১৪

ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিরা কবে দায়িত্ব নেবেন, জানা গেল

১৫

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে একাদশ নিয়ে মাঠে নামতে পারে বাংলাদেশ

১৬

সাবেক ডিআইজি নাহিদুল ইসলাম গ্রেপ্তার

১৭

চুনারুঘাট থানার ওসি ক্লোজড

১৮

মায়ের সঙ্গে শপিংয়ে যান না অভিষেক বচ্চন

১৯

বিশ্লেষণ / মধ্যপ্রাচ্য কাঁপাচ্ছে ইসরায়েল, বড় দ্বিধায় সৌদি-আমিরাত

২০
X