কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ

কবরস্থান তাদের একমাত্র থাকার জায়গা

গাজায় হাজারো মানুষ বাস্তুচ্যুত
কবরস্থান তাদের একমাত্র থাকার জায়গা

গাজার হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ এখন কবরস্থানে তাঁবু ফেলছেন। তাদের ঘরবাড়ি নেই বা ফেরার মতো অন্য কোনো আশ্রয়ও নেই। ইসরায়েলি হামলায় গাজাজুড়ে ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর কবরস্থানগুলোই হয়ে উঠেছে তাদের শেষ আশ্রয়স্থল। যুদ্ধবিরতির চুক্তি কার্যকর হলেও মানবিক বিপর্যয় এখনো ভয়াবহ।

আলজাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খুদারি দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহর থেকে জানিয়েছেন, ‘এই কবরস্থান জীবিতদের জন্য নয়; কিন্তু আজ এখানে বসবাস করছে বহু পরিবার, যাদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ এখানে তাঁবু ফেলছে ইচ্ছায় নয়, বাধ্য হয়ে। এটাই এখন একমাত্র খালি জায়গা। কবরস্থানগুলো আশ্রয় হয়ে উঠেছে বেছে নেওয়ার কারণে নয়, বেঁচে থাকার শেষ চেষ্টায়।’

উত্তর গাজার বেইত হানুন শহর থেকে বাস্তুচ্যুত রামি মুসলেহ। ১২ সন্তানের এই বাবা বলেন, ‘কবরস্থান ছাড়া অন্য কোনো জায়গা খুঁজে পাইনি। বাবা-মায়ের জন্য যুদ্ধের মানসিক চাপ ভয়ংকর। তার ওপর সন্তানদের কবরের পাশে বড় করতে হচ্ছে—এটা এক অসহ্য যন্ত্রণা।’

আরেক বাসিন্দা সাবাহ মুহাম্মদ বলেন, ‘যে কবরস্থান একসময় মৃতদের জন্য পবিত্র ছিল, সেগুলো এখন নীরব সাক্ষী হয়ে আছে জীবিতদের দুর্দশার। এখানে নেই পানি, নেই বিদ্যুৎ, নেই গোপনীয়তা—শুধু টিকে থাকার ন্যূনতম ব্যবস্থা।’ তার কথায়, ‘গাজায় এখন মৃতদের জমিই জীবিতদের শেষ আশ্রয়।’

জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার অন্তত ১৯ লাখ মানুষ—অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ—যুদ্ধ চলাকালে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই একাধিকবার, কেউ কেউ দশবারেরও বেশি স্থানান্তরিত হয়েছেন।

দক্ষিণ গাজার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো এখন অতিরিক্ত ভিড়ে ঠাসা। ইসরায়েল উত্তর গাজা ও গাজা শহরের বাসিন্দাদের জোর করে সরিয়ে দিয়েছে। পরে দক্ষিণমুখী পালানোর সময়ও তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।

একটু জমি ভাড়া নেওয়ার মতো সামর্থ্যও এখন অনেকের নেই। স্থায়ী আয়ের উৎস নেই, সীমিত মানবিক সহায়তার ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোকে। জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, গাজাজুড়ে প্রায় ৬১ মিলিয়ন টন ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে; পুরো পাড়া-মহল্লা মুছে গেছে মানচিত্র থেকে। অনেকে সেই ধ্বংসস্তূপেই খুঁজছেন আশ্রয় ও পানির উৎস।

অক্টোবরের ১০ তারিখ থেকে কার্যকর নাজুক যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরায়েল এখনো মানবিক সহায়তা গাজায় প্রবেশে কঠোর সীমাবদ্ধতা আরোপ করছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত বুধবার রায় দিয়েছে, ইসরায়েলকে অবশ্যই গাজায় সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে— কারণ অনাহারকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। সহায়তার কনটেইনারগুলো মূলত গাজার কেন্দ্র ও দক্ষিণাংশে কেরেম শালোম সীমান্তপথে প্রবেশ করছে। উত্তর দিকের কোনো সীমান্ত এখনো খোলা হয়নি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

২৫ অক্টোবর : আজকের নামাজের সময়সূচি

সিএনজি অটোরিকশা রক্ষায় ছিনতাইকারীদের সঙ্গে লড়ে গেলেন চালক

প্রধান উপদেষ্টা সৌদি আরব যাচ্ছেন না, যাবে প্রতিনিধি দল

রোমে ১৬ বাংলাদেশির অমানবিক বসবাস, মালিকের বিরুদ্ধে মামলা

এক রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করল পাকিস্তান

আগামী নির্বাচনে আ.লীগ-জাপার অংশগ্রহণ নিয়ে আখতারের বার্তা

গরুর সঙ্গে ধাক্কা লেগে প্রাণ গেল ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারের

তারেক রহমান কবে ফিরছেন, জানালেন সালাহউদ্দিন আহমদ

সাফ অ্যাথলেটিক্সেও হতাশা, হিটই শেষ করতে পারলেন না শিরিন

ইয়ামালের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ রিয়াল মাদ্রিদ

১০

ওমরাহ যাত্রীদের জন্য নতুন নিয়ম করল সৌদি

১১

বিএনপির ২০০ প্রার্থী চলতি মাসে পাচ্ছেন ‘সবুজ সংকেত’

১২

পাকিস্তানে পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে ৩ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত

১৩

কালশীতে বহুতল ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে

১৪

সাতক্ষীরায় সাংবাদিকের ওপর জামায়াত নেতার হামলা

১৫

বিশ্ববাজারে আবার চাঙা হচ্ছে স্বর্ণের দাম

১৬

অতীতের মতো আবারও বিএনপি-জামায়াত দ্বন্দ্বে লিপ্ত : মঞ্জু

১৭

কক্সবাজার বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক ঘোষণা স্থগিত

১৮

পাশের দোকানে ক্রেতা বেশি, মালিককে মারধর অন্য ব্যবসায়ীর

১৯

গোয়ালঘরে আগুন, কৃষক অগ্নিদগ্ধ

২০
X