

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের হালনাগাদ প্রস্তুতি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে ঢাকায় বিদেশি দূতাবাসগুলোকে অবহিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ সময় বিদেশি মিশনগুলো এবং কূটনীতিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আয়োজিত এ-সংক্রান্ত অবহিতকরণ সভায় প্রায় ৪০ জন কূটনীতিকের উপস্থিতিতে এসব নিয়ে কথা বলেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম। পরে বিকেলে বিস্তারিত জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি বিবৃতি পাঠানো হয়।
এতে বলা হয়, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি হতে যাওয়া ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট ঘিরে গৃহীত হালনাগাদ প্রস্তুতি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে ঢাকাস্থ বিদেশি দূতাবাসগুলোকে অবহিত করা হয়েছে। এ সময় নির্বাচন কমিশন যে বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাবে, তাও তাদের (বিদেশি কূটনীতিকদের) অবহিত করা হয় এবং তাদের নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোর জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। এ ছাড়া সশস্ত্র বাহিনীসহ দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সদা সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে, তাও তাদের জানানো হয়। পাশাপাশি দূতাবাসগুলোকে তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারেও আশ্বস্ত করা হয়।
ওই অবহিতকরণ সভায় উপস্থিত থাকা এক কূটনীতিক কালবেলাকে জানান, ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিবের পক্ষ থেকে শুধু লিখিত বক্তব্য পাঠ করা হয়েছে। প্রায় ৪০ জন কূটনীতিক সেখানে উপস্থিত থাকলেও কেউই এ ব্রিফিংয়ে কোনো প্রশ্ন করে কিছু জানতে চাননি। সব নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে, যার মধ্যে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে দক্ষ ভোটগ্রহণ ব্যবস্থা ও সার্বিক নির্বাচন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে বলে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়। এ ছাড়া দেশব্যাপী নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ, সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দেশজুড়ে মোতায়েন করা হবে। সরকার গ্রামীণ পর্যায়ে প্রশাসনিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোতায়েনও সমন্বয় করেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব।
কূটনীতিকদের পররাষ্ট্র সচিব ব্রিফিংয়ে বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে নির্বাচনে অবাধ ও উৎসবমুখর পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে। কিছু মিশন উদ্বেগ জানালেও সরকার আন্তর্জাতিক আইন ও কূটনৈতিক নিয়ম মেনে তাদের নিরাপত্তায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কূটনৈতিক এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা ইউনিট সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধে প্রস্তুত। সাম্প্রতিক বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলো স্থানীয় প্রকৃতির, বড় কোনো ঝুঁকি নেই। সরকার শান্তিপূর্ণ নির্বাচনসহ কূটনৈতিক সম্প্রদায় ও সব বাসিন্দার নিরাপত্তায় অটল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রয়োজনে কূটনৈতিক মিশনগুলোকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগের আহ্বানও জানানো হয়।
মন্তব্য করুন