৭ জানুয়ারি হতে যাওয়া নির্বাচনে ভোট দিতে সরকার বা নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে ভোটারদের চাপ দেওয়া হচ্ছে কি না—জানতে চেয়েছেন বিদেশি কূটনীতিকরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছেন, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে কোনো চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে না। বরং ভোট বর্জনকারী দলের পক্ষ থেকে চাপ সৃষ্টি হতে পারে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের দূতাবাস, মিশন প্রধান ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের ভোটের সর্বশেষ পরিস্থিতি ব্রিফ করেন সিইসি। তবে এ ব্রিফিংয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ছিলেন না।
পরে সাংবাদিকদের কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা জানতে চেয়েছেন সরকার বা নির্বাচন কমিশন থেকে ভোটারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে কি না? যার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ভোট দিতে যেতে হবে। তাদের বুঝিয়েছি, আমাদের দিক থেকে চাপ সৃষ্টির কোনো কারণ নেই। এটি আমাদের দায়িত্বের অংশ, যখনই নির্বাচন করি, ভোটারদের কাছে একটা আবেদন রাখি। এটা চাপ নয়, সচেতনতা।
সিইসি বলেন, একটি দল (বিএনপি) ভোট বর্জন করছে। বর্জনটা যদি বর্জনই থাকে, সেখান থেকে ভোটারদের প্রতি আবেদন থাকতে পারে, আপনারা যাবেন (ভোটকেন্দ্র) না। তা হলে ভয়ে একটা চাপ সৃষ্টি হতে পারে। এটা আমরা বিদেশি কূটনীতিকদের ব্যাখ্যা করেছি। তিনি বলেন, কূটনীতিকরা দু-চারটা প্রশ্ন করেছেন। প্রশ্নগুলোর একটি হলো, অভিযোগ কী পরিমাণ পাচ্ছি? আমরা জানিয়েছি, প্রায় ৬০০ অভিযোগ পেয়েছি। এর মধ্যে প্রায় ৪০০ অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছি।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, কূটনীতিকরা ভোটের ফল নিয়ে জানতে চেয়েছেন। তাদের জানিয়েছি, ফলের ব্যাপারে ‘স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ’ করা হয়েছে। পোলিং চলাকালে দুই ঘণ্টা পরপর প্রতিটি ইলেকশন সেন্টার থেকে পাওয়া তথ্য সেখানে আপলোড করা হবে। এতে যে কেউ পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে এ বিষয়ে জানতে পারবে।
৬০ বিদেশি পর্যবেক্ষক ঢাকায়:
সিইসির ব্রিফিং শেষে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের জানান, ১২৭ বিদেশি পর্যবেক্ষক আসার কথা রয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৬০ জন এসেছেন। ৭৩ বিদেশি সাংবাদিক অনুমোদন (অ্যাক্রিডিটেশন) পেয়েছেন। তিনি আরও জানান, ব্রিফিংয়ে কূটনীতিকরা কম প্রশ্ন করেছেন। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কূটনীতিকদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সব সময় যোগাযোগ রয়েছে। তারা প্রতিনিয়ত আপডেটেড রয়েছেন। আরেক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব জানান, ব্রিফিংয়ে কূটনীতিকরা আশ্বস্ত হয়েছেন কি না, সেটা তারা বলতে পারবেন। আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি।
জাপানি পর্যবেক্ষকরা আজ আসছেন
নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আজ শুক্রবার ঢাকায় আসছে তিন সদস্যের জাপানি প্রতিনিধিদল। গতকাল ঢাকার জাপান দূতাবাস জানিয়েছে, দেশটির নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবে। ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়াতানাবে মাসাতোর নেতৃত্বে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশে জাপান দূতাবাসের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি একজন বাইরের বিশেষজ্ঞ থাকবেন। ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরিসহ ১৬ জন এই পর্যবেক্ষক মিশনের সদস্য। জাপান সরকারের পাঠানো মিশনটি ভোটগ্রহণ ও গণনা পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য দেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশনের সঙ্গে মতবিনিময় ও তথ্য বিনিময় করবে।