ইউসুফ আরেফিন
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৪, ০৩:৪৭ এএম
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৪, ০৭:২৬ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

১২ ডিসি সম্মেলনের সিদ্ধান্ত ৮২ শতাংশ বাস্তবায়ন

এবারের সম্মেলন শুরু কাল
১২ ডিসি সম্মেলনের সিদ্ধান্ত ৮২ শতাংশ বাস্তবায়ন

চার দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হচ্ছে। আগামীকাল রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কার্যালয়ের শাপলা হলে সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। এরপর করবী হলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেবেন ডিসিরা। সম্মেলনের মূল কার্য-অধিবেশনগুলো হবে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তথ্যানুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১২টি সম্মেলনে ডিসিরা যেসব প্রস্তাব তুলেছেন, তা বাস্তবায়নের গড় হার ৮২ দশমিক ৩০ শতাংশ। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের এ হারকে সন্তোষজনক মনে করছে সরকার।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রকাশিত সম্মেলনের কর্মসূচিতে দেখা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে কার্য-অধিবেশনগুলোতে ডিসিদের প্রস্তাবগুলো নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-বিভাগের মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী কিংবা সচিবদের ‘খোলামেলা’ আলোচনা হবে। এবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ডিসিদের সৌজন্য সাক্ষাৎ, মতবিনিয়ম ও নৈশভোজের পর্ব থাকছে না। কারণ, রাষ্ট্রপতি আজ শনিবার সন্ধ্যায় চিকিৎসার উদ্দেশে যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন।

অন্যান্য বছরের মতো সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, মতবিনিময় এবং নৈশভোজের আয়োজন থাকছে। এ ছাড়া সম্মেলনের শেষ দিন সুপ্রিম কোর্ট ভবনে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ডিসিরা। প্রধান বিচারপতি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে নির্দেশনা দেবেন বলে জানা গেছে। এবার সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে ডিসিদের দেখা হচ্ছে না। এ ছাড়া সম্মেলনের শেষ দিন প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ সভায় ডিসিরাও উপস্থিত থাকবেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সভার পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেবেন কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ১৩টি সম্মেলনের আয়োজন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মাঝে করোনা মহামারির কারণে ২০২০ এবং ২১ সালে সম্মেলন হয়নি। ১৩টি সম্মেলনের মধ্যে ১২টি সম্মেলনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৮২ শতাংশের বেশি। গত বছরের সম্মেলনের সিদ্ধান্তগুলো এখনো বাস্তবায়ন শেষ হয়নি। ফলে এ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার জানাতে পারেনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তবে সার্বিকভাবে সম্মেলন থেকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকার বেশ সন্তুষ্ট বলে মনে করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

কোন সম্মেলনে কত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন : জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২৮ থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলনে ৩৭৭টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এসব সিদ্ধান্তের ৫৬ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগ। ২০১০ সালের ২৫ থেকে ২৭ জুলাই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে ২৮৯টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্তগুলোর প্রায় ৫২ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে সরকার। ২০১১ সালের সম্মেলনে ৫২৩টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এসব সিদ্ধান্তের ৮১ দশমিক ৬৫ শতাংশ বাস্তবায়নে সক্ষম হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-বিভাগ। ২০১২ সালের সম্মেলন থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ৫৩৩টি। বাস্তবায়ন হয়েছে ৯১ দশমিক ১৮ শতাংশ। ২০১৩ সালের সম্মেলনে ৪৭৫টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাস্তবায়িত হয়েছে ৯২ শতাংশ। ২০১৪ সালের সম্মেলন থেকে ৪৬৪টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বাস্তবায়ন হয়েছে ৯২ শতাংশ। ২০১৫ সালে ৪৭৯টি সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন হার ৯৩ শতাংশের বেশি। ২০১৬ সালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৪৭৭টি, যেখানের বাস্তবায়নের হার ৯৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। এর পরের বছরের সম্মেলনে ৪৩০টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার। বাস্তবায়ন হয় ৯৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ২০১৮ সালের সম্মেলন থেকে ৩৬৬টি সিদ্ধান্ত নেন সংশ্লিষ্টরা। বাস্তবায়ন হয়েছে ৯২ দশমিক ৯০ শতাংশ। ২০১৯ সালে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগ সংশ্লিষ্ট ৩৩০টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বাস্তবায়ন হয়েছে ৭৫ শতাংশ। এ সিদ্ধান্তগুলো এখনো বাস্তবায়নাধীন। এগুলোর বাস্তবায়ন কত শতাংশ হয়েছে, তা এখনো জানাতে পারেনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

এবারের কার্য-অধিবেশন: সম্মেলন উদ্বোধন এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনা ও ফটোশেসনের পর করবী হলে প্রথম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও আওতাধীন সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি কার্য-অধিবেশন রয়েছে ডিসিদের। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হবে। প্রথম দিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কার্য-অধিবেশন রয়েছে। রাতে ‘উন্নয়নে মাঠ প্রশাসন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। পরে নৈশভোজের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের কর্মসূচি শেষ হবে।

দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ দিন অন্যান্য মন্ত্রণালয়-বিভাগের সঙ্গে ডিসিদের কার্য-অধিবেশন রয়েছে। এসব কার্য-অধিবেশনে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত থেকে ডিসিদের প্রস্তাব শুনবেন এবং সে অনুযায়ী আলোচনা করবেন।

ডিসি সম্মেলনের মাধ্যমে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরকার প্রধানসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের খোলামেলা আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়। ফলে মাঠের সার্বিক চিত্র জানতে পারে সরকার। ডিসিরা তাদের নিজ নিজ জেলার সমস্যা-সম্ভাবনা সরকারের কাছে তুলে ধরার সুযোগ পান। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-বিভাগ সেসব সমস্যা চিহ্নিত করে, তা সমাধানের উদ্যোগ নিতে পারেন। এজন্য ডিসি সম্মেলনকে মাঠ প্রশাসন ও সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সেতুবন্ধ তৈরির সুযোগ হিসেবে দেখা হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গুরুতর অসুস্থ স্পর্শিয়া, চাইলেন দোয়া

টাইফয়েড টিকা নিয়ে গুজব থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান

১৪০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা গণতন্ত্র মঞ্চের

সর্বকালের সেরা পাঁচ অলরাউন্ডার বেছে নিলেন সিকান্দার রাজা

খুলনায় প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা

বন্দরের অরক্ষিত হাউসে প্রাণ গেল শিশুর

এআই দিয়ে অশ্লীল ছবি বানানোর অভিযোগে কলেজছাত্র বহিষ্কার

সিরাজগঞ্জে ভটভটির ধাক্কায় শিশুসহ দুজন নিহত

মাঝরাতে প্রেমিককে ডেকে এনে ভয়াবহ কাণ্ড ঘটালেন গৃহবধূ

টাইমস হায়ার এডুকেশন র‌্যাংকিংয়ে যবিপ্রবির চমক

১০

সারা দেশে বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস

১১

‘ঋণ শোধ করার আগেই ভাই দুনিয়া থেকে চলে গেল’

১২

সড়কে নিজ মোটরসাইকেলের পাশে পড়ে ছিল মঞ্জুর মরদেহ

১৩

আমীর খসরু / যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য হয়েছে, তা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে

১৪

ইহুদিদের উৎসবের জন্য ইব্রাহিমি মসজিদ বন্ধ করল ইসরায়েল

১৫

এখন পর্যন্ত ফুটবল বিশ্বকাপের টিকিট পেল যে ১৯ দেশ

১৬

টেলিস্কোপে চাঁদ-তারা দেখে মুগ্ধ শিক্ষার্থীরা

১৭

আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনে কাজের সুযোগ, থাকছে একাধিক সুবিধা

১৮

ঘানি টানা ষাটোর্ধ্ব দম্পতির পাশে তারেক রহমান

১৯

পটুয়াখালীতে ক্যাম্পে র‍্যাব সদস্যের মৃত্যু

২০
X