নূর হোসেন মামুন, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৪, ০২:১৭ এএম
আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৪, ০৮:৩৫ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

জিম্মি নাবিকদের জন্য দুম্বা আনছে জলদস্যুরা

জিম্মি নাবিকদের জন্য দুম্বা আনছে জলদস্যুরা

সোমালিয়ার উপকূলে জিম্মি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকদের খাবারে তিন বেলা ভাগ বসাচ্ছিল জলদস্যুরা। ফলে দ্রুতই কমে আসছিল খাবারের মজুত। তবে ১৮ দিন পর শোনা গেল, জিম্মি নাবিকদের জন্য তীর থেকে দুম্বা ও ছাগল আনছে জলদস্যুরা। এতে খাবার নিয়ে তৈরি হওয়া শঙ্কা কিছুটা কাটলেও চিন্তা বাড়াচ্ছে বিশুদ্ধ পানি। মূলত সবার ব্যবহারের কারণে কমছে পানি।

কবির গ্রুপের (কেএসআরএম) মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, জিম্মি নাবিকরা সুস্থ আছেন। জাহাজে নাবিকদের খাবার কমলেও দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কারণ তীর থেকে দস্যুরা জাহাজে খাবার নিয়ে আসছে। খাবার নিয়ে আশা করি সমস্যা হবে না।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, জাহাজ জিম্মি করলে জলদস্যুরা সাধারণত খাবার সরবরাহ করে। তবে সুপেয় পানি নিয়ে সমস্যা হয়। সে ক্ষেত্রে রেশনিং করে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। তবে এমভি আব্দুল্লাহকে জিম্মি করার সময় জাহাজটিতে ২৩ নাবিকের জন্য ২৫ দিনের খাবার ছিল।

জিম্মি জাহাজটিতে থাকা নাবিকদের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের বরাতে নাবিকদের সংগঠনের একজন নেতা বলেন, খাবার নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তা নেই। কারণ জলদস্যুরা জাহাজে দুম্বা ও ছাগল আনছে। তবে বিশুদ্ধ পানি নিয়ে দুশ্চিন্তা আছে। কারণ জলদস্যুরা জাহাজে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে জাহাজে যে পানি আছে, তা রেশনিং করে চলতে হচ্ছে। সংকটের কারণে এখন সপ্তাহে দুদিন এক ঘণ্টা করে জাহাজের বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করছেন নাবিকরা।

নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, দস্যুরা নিজেদের স্বার্থেই খাবার নিয়ে আসে। এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজেও তেহারিজাতীয় খাবার নিয়ে আসার খবর পেয়েছি।

এদিকে জাহাজটি জিম্মি করার সময় মজুত ছিল প্রায় ২০০ টন বিশুদ্ধ পানি। যা দিয়ে এক মাস পর্যন্ত চালানো যাবে বলে ধারণা ছিল নাবিকদের। তবে তারা বলেছিলেন, রেশনিং করলে অনেক দিন চালানো যাবে। পানি বাঁচাতে এখন শুধু রান্না ও খাবারের জন্য বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করছেন নাবিকরা।

গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে জিম্মি করে সোমালিয়ার দস্যুরা। পরে তারা জাহাজটিকে নিয়ে যায় সোমালিয়ার উপকূলের কাছে। চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের মালিকানাধীন জাহাজটি বর্তমানে সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জিফল উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে আছে।

এর আগে ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর এমভি জাহান মণি নামের একই গ্রুপের মালিকানাধীন একটি জাহাজ জিম্মি করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটি ১০০ দিন পর সব নাবিকসহ উদ্ধার করা হয়েছিল। জিম্মি অবস্থায় জাহাজটির খাবার ফুরিয়ে গেলে জলদস্যুরা সপ্তাহে দুটি দুম্বা নিয়ে আসত।

সেই জাহাজে থাকা নাবিক মোহাম্মদ ইদ্রিস জানিয়েছেন, জিম্মি করার পর এক পর্যায়ে জাহাজের ফ্রিজ বন্ধ থাকায় হিমায়িত খাবার নষ্ট হয়ে যায়। জিম্মিদশার শেষ দিকে খাবার ফুরিয়ে যাওয়ার পর তীর থেকেই খাবার সরবরাহ করত দস্যুরা।

এদিকে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ ও নাবিকদের ফিরিয়ে আনতে দস্যুদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে বলে মালিকপক্ষ জানিয়েছে। দস্যুদের সঙ্গে দ্রুতই সমঝোতায় পৌঁছানোর আশা করছে মালিকপক্ষ। এ বিষয়ে মিজানুল ইসলাম বলেন, নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে আমাদের তৎপরতা চলছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধারই জাতির একমাত্র লক্ষ্য : গয়েশ্বর

ঘুষি মেরে বিমানের মনিটর ভেঙে ফেললেন লন্ডন প্রবাসী

ইসরায়েলের যে কারাগারে বন্দি শহিদুল আলম

আফগানিস্তানে বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান, টিটিপি প্রধান নিহতের গুঞ্জন

বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল কাবুল

এককভাবে সরকার গঠন করবে বিএনপি : এমরান চৌধুরী

‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলে রংপুর অচল করে দিতে বাধ্য হবো’

নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না : লায়ন ফারুক

ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের পা বিচ্ছিন্ন

বৃহত্তর মিরপুরে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত ওলামা সম্মেলন অনুষ্ঠিত

১০

দেশ বাঁচাতে হলে বিএনপির বিকল্প নেই : টুকু

১১

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা / বস্তিবাসী ও শহীদ পরিবারের ন্যায্য দাবি মেনে নিন

১২

মা-মেয়েকে গলা কেটে হত্যা

১৩

রাজধানীতে ১৭ ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে জাগপা ছাত্রলীগের বৈঠক

১৪

হাত-মুখ বেঁধে শিশুকে ধর্ষণ, যুবককে খুঁজছে পুলিশ

১৫

এনসিটিবির নামে ‘নকল’ ছাপাখানা, আটক ৫ 

১৬

পচা চাল ক্রয়, বাচ্চু মিয়াকে বাধ্যতামূলক অবসর

১৭

শহিদুল আলমসহ নৌবহর থেকে আটক ব্যক্তিদের কারাগারে বন্দি

১৮

পা হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন আইসক্রিম বিক্রেতা রফিকুল

১৯

গুণগত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা তারেক রহমানের অঙ্গীকার : সাঈদ

২০
X