তরুণ সমাজকে ‘দেশপ্রেম ও ক্রীড়াঙ্গনে’ উদ্বুদ্ধ করা এবং মাদক থেকে দূরে থাকার উদ্দেশ্য নিয়ে দেশের ১০টি সাংগঠনিক বিভাগে ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করবে বিএনপি। এর মাধ্যমে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও যুক্ত থাকবেন দলটির নেতাকর্মীরা। এই টুর্নামেন্টের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৪’। মূলত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর স্মৃতি রক্ষার্থে ব্যতিক্রমী এবং অরাজনৈতিক এই উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। আগামী ৭ জুন (সম্ভাব্য) বগুড়ায় রাজশাহী বিভাগের খেলা উদ্বোধনের মাধ্যমে টুর্নামেন্ট শুরু হবে। আগামী ১২ আগস্ট ঢাকায় হবে ফাইনাল পর্বের খেলা। ২৮ জুন চট্টগ্রাম বিভাগের খেলা অনুষ্ঠিত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। প্রসঙ্গত, ১২ আগস্ট কোকোর ৫৫তম জন্মবার্ষিকী।
বিএনপির কয়েক নেতা বলেন, আরাফাত রহমান কোকো রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে উঠলেও রাজনীতিতে জড়াননি। সাধারণ জীবনযাপন ও ভিন্নধর্মী কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত ছিলেন। তিনি দেশের ক্রীড়াঙ্গনে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছিলেন। মিরপুরে শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের রূপকার তিনি। এ ক্ষেত্রে ফুটবলের পরিবর্তে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করা উচিত ছিল।
জানা গেছে, ‘আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৪’ সফল করার লক্ষ্যে সম্প্রতি ২৩ সদস্যের একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীরবিক্রম)। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ ছাড়া বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল কমিটির আহ্বায়ক এবং ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে আছেন।
জানা যায়, ‘ক্রীড়াই শক্তি, ক্রীড়াই বল মাদককে না বলুন’ এই স্লোগানে সারা দেশে বিভাগীয় পর্যায়ে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৪ অনুষ্ঠিত হবে। টুর্নামেন্ট সফলের লক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা করছেন পরিচালনা কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। গতকাল শুক্রবার রংপুরে এবং বগুড়ায় রাজশাহী বিভাগীয় টিমের সঙ্গে প্রস্তুতি সভায় বক্তব্য দেন টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। এ ছাড়া গতকাল দুপুরে সিলেটে বিভাগীয় টিমের নেতাদের সঙ্গে প্রস্তুতি সভায় বক্তব্য দেন কমিটির সদস্য সচিব মো. আমিনুল হক। এর আগে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লা বিভাগীয় টিমের সদস্যদের সঙ্গে প্রস্তুতি সভা হয়েছে। এরপর বরিশাল, খুলনা ও ফরিদপুর বিভাগের টিমের সঙ্গে প্রস্তুতি সভা হবে সংশ্লিষ্টরা জানান।
ফুটবল টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, আজকে বাংলাদেশে ক্রিকেটের যে উন্নয়ন তার ভিত্তি রচনা করেছিলেন কোকো।
টুর্নামেন্ট সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রত্যেক বিভাগে দুটি করে দল প্রীতি ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণ করবে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে পৃথক দুটি টিম গঠন করা হবে। প্রতি বিভাগের সংশ্লিষ্ট জেলা থেকে খেলোয়াড় বাছাই করে লাল দল এবং সবুজ দল নামে দুটি করে টিম গঠন করা হবে। এরপর বিভাগ পর্যায়ে খেলা শুরু হবে। বিভাগ পর্যায়ে বিজয়ী দল আগামী ১২ আগস্ট ঢাকায় ফাইনাল রাউন্ডে অংশ নেবে। খুব দ্রুত খেলার সময়সূচিসহ বিভিন্ন বিষয় চূড়ান্ত করা হবে। ২৯ জুন রংপুর বিভাগের খেলা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান সবুজ দলের সমন্বয়ক ও দিনাজপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ কচি।
টুর্নামেন্টের সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, কোকোর স্মৃতি অম্লান রাখা এবং তার সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতে সারা দেশে বিভাগ পর্যায়ে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হচ্ছে।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন বলেন, অরাজনৈতিক ব্যক্তি আরাফাত রহমান কোকো সারা দেশে ক্রিকেট উন্মাদনা ছড়িয়ে দিতে খুলনা, চট্টগ্রাম, বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ ক্রিকেট স্টেডিয়ামগুলোকে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের জন্য উপযোগী করে গড়ে তুলেছিলেন। তার গৃহীত পদক্ষেপগুলো ক্রিকেটবিশ্বে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত করতে সচেষ্ট ভূমিকা রেখেছে।