ইউসুফ আরেফিন
প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৪, ০২:৫১ এএম
আপডেট : ০৪ জুন ২০২৪, ০৭:৩৪ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

সুযোগ-সুবিধা ‘কম’ হওয়ায় আসতে চান না কর্মকর্তারা

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ
সুযোগ-সুবিধা ‘কম’ হওয়ায় আসতে চান না কর্মকর্তারা

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পর সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর হলো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিসভা ও কমিটিগুলোকে সাচিবিক সহায়তা দেওয়া, দলিলপত্র সংরক্ষণ, সরকারের সব ধরনের সিদ্ধান্তের অগ্রগতি, বাস্তবায়ন-পর্যালোচনা এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয়-বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করাসহ ২৬ ধরনের কাজ করে এ বিভাগ। এখানে কাজ করাকে খুবই মর্যাদার বিবেচনা করা হয়। তবে সুযোগ-সুবিধার দিক দিয়ে অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের তুলনায় অনেক পিছিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ কারণে অনেক কর্মকর্তা এ বিভাগে পদায়ন নিতে চান না। তবে যারা মর্যাদার সঙ্গে চাকরি করতে চান তারা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে গুরুত্ব দেন। তবুও দীর্ঘদিন ধরে বেশ কয়েকটি অনুবিভাগ, অধিশাখা ও শাখা খালি রয়েছে। এ কারণে একেকজন কর্মকর্তাকে একাধিক দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান কালবেলাকে বলেন, আমরা কয়েকটি খালি অনুবিভাগ, অধিশাখা ও শাখায় কর্মকর্তা দিয়েছি। খালি থাকা বাকিগুলোতে শিগগির কর্মকর্তা পদায়ন করা হবে।

শোনা যায়, সুযোগ-সুবিধা কম থাকায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে কর্মকর্তা আসতে চান না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি দুই ধরনের কথা শুনি। কেউ আসতে খুবই আগ্রহী। আবার অনেকে আসতে চান না, এটাও শোনা যায়।

তিনি আরও বলেন, এ বিভাগে কোনো কর্মকর্তাকে পদায়ন করার আগে তার সততা, সুনাম ও দক্ষতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। যাচাই-বাছাই করেই কর্মকর্তা আনার চেষ্টা করি। কারণ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও গোপন নথিপত্র নিয়ে কাজ করে।

জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব পদে নিয়মিত দায়িত্বে নেই কোনো কর্মকর্তা। এখানে অতিরিক্ত সচিব জাহেদা পারভীনকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি আইন অনুবিভাগের নিয়মিত দায়িত্বে রয়েছেন। তাকে আরও দুটি অনুবিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো—প্রশাসন ও বিধি অনুবিভাগ এবং কমিটি ও অর্থনৈতিক অনুবিভাগ।

রিপোর্ট ও রেকর্ড অধিশাখা দীর্ঘদিন খালি থাকার পর যুগ্মসচিব মো. সাইফুল ইসলামকে সেখানে পদায়ন করা হয়েছে। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সমন্বয় অধিশাখা এবং মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ অধিশাখায় অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন মন্ত্রিসভা বৈঠক অধিশাখার উপসচিব চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ। অর্থাৎ তিনি একাই তিনটি দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।

রেকর্ড অধিশাখায় রিপোর্ট শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব ইয়াসমিন নাহার রুমাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি রিপোর্ট শাখার নিয়মিত কর্মকর্তা। মন্ত্রিসেবা অধিশাখার অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন বিধি ও সেবা অধিশাখার নিয়মিত কর্মকর্তা কাজী নিশাত রসূল।

যুগ্ম সচিব রুবাইয়াত-ই-আশিকের কাঁধে রয়েছে তিনটি দায়িত্ব। সাধারণ সেবা-১ অধিশাখায় নিয়মিত দায়িত্বের পাশাপাশি সাধারণ সেবা-২ এবং সাধারণ অধিশাখার অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন তিনি। কেন্দ্রীয় পত্র গ্রহণ ও অভিযোগ অধিশাখার অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন সিনিয়র সহকারী সচিব মো. ইমরুল হাসান। তিনি প্রশাসন ও শৃঙ্খলার নিয়মিত কর্মকর্তা।

আইন-১ অধিশাখায়ও কোনো নিয়মিত কর্মকর্তা নেই। এ শাখায় অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন আইন-২ অধিশাখার মোহাম্মদ এনামুল আহসান। আইন-৩ অধিশাখাও অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে চালানো হচ্ছে। এ শাখায় এস. এম মুনিম লিঙ্কন দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আইন-৪ অধিশাখার স্থায়ী কর্মকর্তা।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অধিশাখার অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন জেলা ও মাঠ প্রশাসন অধিশাখার কর্মকর্তা যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান। জেলা ম্যাজিস্ট্রেসি নীতি অধিশাখা এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেসি পরিবীক্ষণ অধিশাখার দায়িত্বে আছেন মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। মাঠ প্রশাসন সংযোগ অধিশাখাও চলছে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে। উপসচিব মো. মামুন অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন।

মাঠ প্রশাসন সংস্থাপন অধিশাখায় অতিরিক্ত দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে উপসচিব গাজী সালমন তারেককে। তিনি মাঠ প্রশাসন শৃঙ্খলা অধিশাখার নিয়মিত কর্মকর্তা। সুশাসন ও অভিযোগ ব্যবস্থাপনা অধিশাখার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন যুগ্ম সচিব তৌহিদুল ইসলাম। তার নিয়মিত দায়িত্ব প্রকল্প ও গবেষণা অধিশাখা। অভিযোগ ব্যবস্থাপনা অধিশাখার কর্মকর্তা খন্দকার মনোয়ার মোর্শেদকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে ই-গভর্ন্যান্স-১ অধিশাখায়।

উন্নয়ন অভিলক্ষ্য সমন্বয় ও আন্তঃমন্ত্রণালয় দ্বন্দ্ব নিরসন শাখায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন উপসচিব রেবেকা সুলতানা। তিনি উন্নয়ন অভিলক্ষ্য বাস্তবায়ন অধিশাখার কর্মকর্তা। সিনিয়র সহকারী সচিব মো. শামীমুর রহমান অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন দুটি শাখার। নিকার-১ ও ২ দেখছেন তিনি। প্রশাসনিক উন্নয়ন ও সমন্বয়-২ শাখায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন শেখ জোবায়ের আহমেদ। তোশাখানা ইউনিটের অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন উপসচিব মুহাম্মদ আসাদুল হক।

জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও চাকরি বিষয়ক একাধিক গ্রন্থের প্রণেতা মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া কালবেলাকে বলেন, সরকার যখন যাকে যেখানে দায়িত্ব দেয় সেখানেই তাদের কাজ করা উচিত। আসলে কোনো মন্ত্রণালয়-বিভাগই ছোট নয়। সবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে কিছু কিছু মন্ত্রণালয়-বিভাগে তুলনামূলক সুযোগ-সুবিধা কম। বিদেশ ভ্রমণ নেই। সুতরাং এসব সুযোগ তৈরি করতে হবে। তাহলে কর্মকর্তারা আসতে আগ্রহী হবেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার নিয়ে মির্জা গালিবের পোস্ট

মায়ামিতে হতে যাচ্ছে লা লিগার ম্যাচ!

বিএনপি এককভাবে ক্ষমতায় গেলে দেশে চাঁদাবাজি বাড়বে : চরমোনাই পীর

আওয়ামী সংশ্লিষ্টতা বিতর্কে বিসিবি থেকে বাদ ইসফাক আহসান

সাবের হোসেন চৌধুরীর বাসায় তিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হয়ে যা বললেন আমিনুল

১৩ বছরের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চায় গাজীপুরবাসী

সুন্দরবনে ভেসে গিয়ে বেঁচে ফিরলেন কুয়াকাটার পাঁচ জেলে

শিশু হত্যার দায়ে একজনের ৭ বছরের কারাদণ্ড

সুদের টাকা আদায়ে বৃদ্ধকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন

১০

যুক্তরাজ্যের বিশেষ দূতের সঙ্গে বিএনপি প্রতিনিধিদলের বৈঠক

১১

পাইকগাছা রিপোর্টার্স ইউনিটির দ্বি-বার্ষিক কমিটি গঠন

১২

বৃষ্টি ও ভ্যাপসা গরম নিয়ে নতুন বার্তা আবহাওয়া অফিসের

১৩

গুগলে দ্রুত প্রয়োজনীয় তথ্য জানার ৭ কৌশল

১৪

পুনরায় বিসিবির পরিচালক নির্বাচিত হলেন মনজুর আলম

১৫

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আ.লীগ নেতা ও তার ছেলের ইলিশ শিকার

১৬

কবরস্থান-মসজিদ রক্ষায় রেলকর্মীদের আলটিমেটাম

১৭

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকার / এককভাবে সরকার গঠনে আত্মবিশ্বাসী তারেক রহমান

১৮

চাকরিচ্যুত সেনা সদস্যের প্রতারণা, সেনা অভিযানে গ্রেপ্তার

১৯

কোরআনে হাফেজের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

২০
X