নিজভূমে পরবাসী হয়ে থাকা ফিলিস্তিনিদের কবে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হবে, তা যেন মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। অসলো চুক্তি অনুযায়ী, ১৯৯৯ সালের মধ্যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হলেও নানা টালবাহানায় সে রাষ্ট্র আর প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বরং পশ্চিম তীরে অবৈধ ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের মাধ্যমে সে চুক্তিকে একরকম ছুড়ে ফেলে দেয় ইসরায়েল। তবে আশার কথা, এ পর্যন্ত জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত বেশিরভাগ দেশই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার ইউরোপের তিন গুরুত্বপূর্ণ দেশ স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে এ স্বীকৃতি দেয়। আরও বেশ কিছু দেশ সামনে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে। গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার মধ্যে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবির আওয়াজ উঠেছে দিকে দিকে। খোদ ইসরায়েলেও উঠেছে সে আওয়াজ। বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কারণে এখন পর্যন্ত এসব স্বীকৃতি প্রতীকী হয়ে থাকলেও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিষয়টি খুব বেশি দূরে নয়। গ্রন্থনা : ওয়াহেদুজ্জামান সরকার
খোদ ইসরায়েলের ভেতর থেকেই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার আওয়াজ উঠেছে। আর সে আওয়াজটা যখন প্রধান বিরোধী দলের পক্ষ থেকে আসে, তখন বুঝতে হবে যে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টি হয়তো আর খুব বেশি দেরি নেই। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি সম্প্রতি আহ্বান জানান ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ। নির্দিষ্ট কিছু ‘শর্তের অধীনে’ এ পদক্ষেপ নিতে বলেন তিনি। আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশ কিছু শর্ত ও গ্যারান্টির বিনিময়ে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে মেনে নেওয়ার জন্য সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানান ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ। ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে তিন ইউরোপীয় দেশ—স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে নিজেদের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করার পর লাপিদ এ আহ্বান জানান। তিনি অবশ্য নেতানিয়াহুকে এ ধরনের অবস্থান গ্রহণ করতে বাধা দেওয়ার জন্য ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভিরকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘নেতানিয়াহুর ঘোষণা করা উচিত, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যোগদানসহ কিছু শর্ত এবং নির্দিষ্ট গ্যারান্টির অধীনে তিনি একটি ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র মেনে নিতে ইচ্ছুক।’ তবে এই শর্তাবলি এবং গ্যারান্টি বা প্রস্তাবিত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলেননি লাপিদ। চরমপন্থি বেন-গভিরের সমালোচনা করে ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় এ নেতা বলেন, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তুতি সম্পর্কে ঘোষণা করার অনুমতি তিনি নেতানিয়াহুকে দেবেন না। বেন-গভির আসলে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছেন না। এমনকি বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘পাগলামিতে বাস করা’ বলেও বর্ণনা করেন তিনি। লাপিদ বলেন, ‘এই সরকার পারবে না। আমাদের এটিকে (নেতানিয়াহু সরকার) বাড়িতে পাঠাতে হবে এবং একটি কার্যকরী সরকার গঠন করতে হবে।’