শক্তি চট্টোপাধ্যায় আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম প্রধান এবং বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে বিশেষভাবে পরিচিত কবি। তিনি ১৯৩৩ সালের ২৫ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বাহারু গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম বামানাথ চট্টোপাধ্যায় এবং মায়ের নাম কমলা দেবী। মাত্র চার বছর বয়সে বাবাকে হারান। ১৯৫১ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। সে সময় কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার সদস্যপদ লাভ করেন। দারিদ্র্যের কারণে তার স্নাতক পাঠ অসমাপ্তই রয়ে যায়। সাহিত্যকে জীবিকা করার উদ্দেশ্যে উপন্যাস লেখা শুরু করেন। তার প্রথম উপন্যাস কুয়োতলা। নিজের কবিতাকে তিনি বলতেন পদ্য। স্ফুলিঙ্গ সমাদ্দার ছদ্মনামে লেখালেখি করতেন। আধুনিক বাংলা কবিতার ইতিহাসে অন্যতম প্রধান কবির কবিতার ছন্দে, গন্ধে, ভাষা প্রয়োগে এবং অর্থে কেউ কেউ তাকে জীবনানন্দ দাশের শেষ উত্তরসূরি হিসেবেও অভিহিত করে থাকেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থের নাম ‘যেতে পারি কিন্তু কেন যাবো’। ১৯৬১ সালের নভেম্বরে যে চারজন কবিকে হাংরি আন্দোলনের জনক মনে করা হয়, তাদের মধ্যে শক্তি চট্টোপাধ্যায় অন্যতম। বাংলা সাহিত্যে স্থিতাবস্থা ভাঙার আওয়াজ তুলে, ইশতেহার প্রকাশের মাধ্যমে, শিল্প ও সাহিত্যের যে একমাত্র আন্দোলন হয়েছে, তার নাম হাংরি আন্দোলন। কবিপ্রতিভার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি আনন্দ ও সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারসহ প্রচুর পুরস্কার-সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। ১৯৯৫ সালের ২৩ মার্চ কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়।