সালাম মাহমুদ
প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০৫ এএম
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৮ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শোক ও শ্রদ্ধা

এক অনন্য ব্যক্তিত্ব

এক অনন্য ব্যক্তিত্ব

সংখ্যায় কম হলেও গুণী মানুষ সর্বদাই থাকেন। তাই তো সমাজ এখনো সুন্দর। নীরবে-নিভৃতে তারা পরিপার্শ্বকে আলোকিত করার কাজে নিয়োজিত থাকেন। এমনই একজন মহীয়সী বেগম রুখসানা সামাদ। তিনি ১৯৫১ সালের ১৯ জুন ভারতের বর্ধমান জেলায় বিখ্যাত এক জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সৈয়দ জিল্লুর রহমান ও মাতা আমাতুল উমদা বেগম। তিনি ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী। নম্রতা-ভদ্রতা, মানুষের প্রতি আন্তরিকতা, ভালোবাসা, মমত্ববোধ প্রতিটি গুণই তার মধ্যে ছিল।

বেগম রুখসানা সামাদ লন্ডনে উচ্চশিক্ষা অর্জন করে দেশে ফিরে আসেন। ইংরেজি বিভাগে শিক্ষকতা পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। তিনি ১৯৭১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি পিএলসির প্রতিষ্ঠাতা বীমা শিল্পের কিংবদন্তি এম এ সামাদ এবং ঢাকা লেডিস ক্লাবের ৩৮ বছরের সফল সভানেত্রী বেগম ফওজিয়া সামাদের সুযোগ্য পুত্র বিজিআইসির বর্তমান চেয়ারম্যান তওহিদ সামাদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর থেকেই তাদের সংসার ছিল ভালোবাসায় পরিপূর্ণ। এক স্বর্গরাজ্য।

তিনি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন নিবিড়ভাবে। সংগীতের প্রতি ছিল অগাধ ভালোবাসা। গান গাইতে পছন্দ করতেন। একসময় নিজেকে চলচ্চিত্র প্রযোজনার সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। ঢাকা ক্লাব, গুলশান ক্লাব, লেডিস ক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অত্যন্ত বিনয়ী ও হাস্যোজ্জ্বল মানুষ ছিলেন। নরম সুরে কথা বলতেন। খুব মনোযোগ দিয়ে অন্যের কথা শুনতেন। সহজেই কারও আপনজন হয়ে যেতে পারতেন। অনেক সাধারণ মানুষের আশ্রয়স্থল ছিলেন তিনি। যে কোনো মানুষ তার কাছে কোনো আবদার নিয়ে গেলে কখনো ফিরিয়ে দিতেন না। তার ব্যবহার, আচার-আচরণে সবাই মুগ্ধ হতো। অসহায় মানুষের প্রতি সবসময় ছিলেন উদার। আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি তিনি অনেক অসহায় মানুষকে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে দিয়েছেন। ছিলেন প্রচারবিমুখ একজন মানুষ। জনসেবামূলক এসব কাজ করতেন নীরবে-নিভৃতে।

স্বামী তওহিদ সামাদের সব কর্মের পেছনে প্রধান উৎসাহ ও প্রেরণা ছিলেন রুখসানা সামাদ। প্রতিটি কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। তওহিদ সামাদ এডুকেশন সায়েন্টিফিক টেকনোলজি কালচারাল ফাউন্ডেশনের ফাউন্ডার ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, চিটাগং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানের তিনি প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান হিসেবে ধারাবাহিকভাবে সাফল্যের স্বাক্ষর রাখছেন।

রুখসানা সামাদ সংসারের দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন করার পাশাপাশি স্বামীর ব্যবসা ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে যেভাবে সুনামের সঙ্গে উজ্জ্বল ভাবমূর্তি নিয়ে সফলতার সঙ্গে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারেন, সেসব বিষয়েও ভূমিকা রাখতেন প্রতিনিয়ত। গতকাল ২৪ ডিসেম্বর ছিল রুখসানা সামাদের প্রয়াণ দিবস। ২০১৯ সালে তিনি এক পুত্র, তিন কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রুখসানা সামাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার বিদেহী আত্মার চিরশান্তির জন্য পরম করুণাময়ের কাছে প্রার্থনা করছি; তাকে যেন জান্নাত নসিব করেন। আমিন।

লেখক: ইভিপি, জনসংযোগ, বিজিআইসি পিএলসি

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আগামী নির্বাচনে ছাত্র-জনতা দুর্নীতিবাজদের লাল কার্ড দেখাবে : গোলাম পরওয়ার

সপ্তাহের সেরা চাকরির বিজ্ঞপ্তি, পদ সংখ্যা ৩ হাজারেরও বেশি

ভূমিকম্পে ৪ জেলায় নিহত ৭, আহত দুই শতাধিক

সেনাকুঞ্জে পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া

৩০ মিনিটে ৯ কোটি টাকা লুট

আইপিএল নিলামে বাংলাদেশের ৩ ক্রিকেটার

ভূমিকম্প শেষে নারায়ণগঞ্জ বন্দরে তুলার গুদামে আগুন

নাকে আইফোনের তার ঢুকিয়ে ভয়াবহ প্রতারণা

কিবরিয়া হত্যায় আটক ব্যক্তির মৃত্যু, ব্যাখ্যা দিল ডিএমপি

যে ভূমিকম্পে পরিবর্তন হয়ে যায় পৃথিবীর ঘূর্ণনগতি

১০

ভূমিকম্পে দুর্ঘটনা সম্পর্কিত যোগাযোগের জন্য জরুরি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু

১১

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানদের সাক্ষাৎ

১২

নরসিংদীতে ভূমিকম্পে শিশুসহ নিহত ২, আহত শতাধিক

১৩

রাতে ফোন চার্জে রেখে ঘুমালে কি ফোনে আগুন লাগতে পারে?

১৪

ফুটবল মাঠে আবারও মুখোমুখি ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা

১৫

শনিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘অস্ট্রেলিয়া এডুকেশন এক্সপো-২০২৫’

১৬

বিএনপির উপজেলা কার্যালয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি

১৭

খুলনা বিভাগের উন্নয়নে পাঁচ দফা দাবি

১৮

জাতীয় বাস্কেটবল চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জিতল এআইইউবি 

১৯

স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্নাতীত : গোলাম পরওয়ার

২০
X