কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২৫, ০২:৩৫ এএম
আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৫, ১১:৩৪ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সম্পাদকীয়

ছোট হচ্ছে খাদ্যতালিকা

ছোট হচ্ছে খাদ্যতালিকা

কয়েক বছর ধরেই ধারাবাহিকভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। বাজারের উত্তাপে এমনিতেই নাকাল দেশের অধিকাংশ মানুষ। জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়বৃদ্ধিতে কয়েক বছর ধরেই কাটছাঁট করে চলতে হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের। তার ওপর যখন রমজান মাস আসে, তখন দেশের বাজারে পণ্যের দাম যেন আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে! এ অস্বাভাবিকতাই যেন নিয়ম ও নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে বাজার ব্যবস্থায়। এটি গভীর হতাশার।

সোমবার কালবেলায় প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে বাজারের বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদন থেকেই জানা যাচ্ছে যে, রমজান মাস সামনে রেখে প্রতি বছর অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পণ্যের দাম বাড়ায়। সেই আশঙ্কা থেকেই এবার রমজানের আগের তিন মাসে আমদানি বাড়িয়েছে সরকার। যাতে করে রমজানে পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা সম্ভব না হয়। এতে গত বছরের তুলনায় রমজানকেন্দ্রিক প্রয়োজনীয় ৯ পণ্যের আমদানি বেড়েছে ২০ থেকে ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত। সরকারের এমন উদ্যোগের মধ্যেও গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে ১২-১৫ শতাংশ। বিশেষ করে ফলের দাম বেড়েছে প্রায় ২০-২৫ শতাংশ। এতে সেহরির খাবার তালিকা থেকে যেমন বাদ দিতে হচ্ছে মাছ-মাংস; তেমনি ইফতারিতে বাদ দিতে হচ্ছে বিদেশি ফল। দেখা যাচ্ছে, মাছ-মাংস বাদ দিয়েই সেহরিতে একজনের যে খাবার খরচ পড়ে চারজনের একটি পরিবারের ব্যয় হবে প্রায় ১৪ হাজার ৭০০ টাকা। মাছ-মাংস যোগ হলে একই সংখ্যার পরিবারে মাসে খরচ হবে প্রায় ২৭ হাজার টাকা।

প্রশ্ন হচ্ছে, বেশি বেশি আমদানির পরও কেন এবারও পণ্যের দাম বাড়ল? এ বিষয়ে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের ভাষ্য, পণ্য গত বছরের চেয়ে বেশি আমদানি হয়েছে, এটা সত্য। কিন্তু তা সারা দেশে সঠিকভাবে ডিস্ট্রিবিউশন হয়নি। সাপ্লাই চেইন বাধাগ্রস্তের পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়াকে দায়ী করা হয়। এ বিষয়ে গত রোববার কালবেলায় ‘চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার স্তূপ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে রমজানে পণ্য সরবরাহ নিয়ে শঙ্কার কথা বলা হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদনটি বলছে, চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে অতিরিক্ত আট হাজার পণ্যবাহী কনটেইনারের স্তূপ হয়ে আছে। রমজান ঘিরে আমদানি করা বিপুল পরিমাণ ভোগ্যপণ্যের জট বা খালাস না হওয়াকে কর্তৃপক্ষ মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা হতে পারে উল্লেখ করে। তার মানে সরবরাহ চেইন যে স্বাভাবিক নেই, তা সঠিক। তাহলে প্রশ্ন, রমজানে বাজার স্বাভাবিক রাখতে এত উদ্যোগী, এতে কার লাভ হলো? এখানে গাফিলতি বা ব্যর্থতা কার?

আমরা জানি, সাপ্লাই চেইন বাধাগ্রস্ত হলে পণ্য সিন্ডিকেট তৈরির সুযোগ তৈরি হয়। তখন সরকারের পক্ষে দাম নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হয় না। এটি ঠিকঠাক সম্পন্ন করতে না পারলে সিন্ডিকেট চক্র এসব জায়গায় জ্যাম করে পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। তাদের অশুভ লক্ষ্য পূরণ করে। পণ্যের দাম নিয়ে কারসাজি বন্ধে দেশে একাধিক আইন এবং সরকারি সংস্থাও রয়েছে। এসব আইনের শিথিল প্রয়োগ ও সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব নতুন কিছু নয়। অসাধু ব্যবসায়ীরা বছরের পর বছর এভাবেই অতিরিক্ত মুনাফা করে আসছেন। বছরের বিভিন্ন সময় তো আছেই, তবে অসাধু চক্রের অপতৎপরতার মোক্ষম সময় রমজান। আমাদের জন্য হতাশার হচ্ছে, আজ অবধি আমরা একটি সুষ্ঠু স্বাভাবিক বাজার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছি। আমাদের প্রত্যাশা, যে কোনো উপায়ে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার-সংশ্লিষ্টরা তৎপর হবেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘পথ হারিয়ে ফেলেছেন’ নেতানিয়াহু

ভয়ংকর ক্ষেপণাস্ত্র ওরেশনিক নিয়ে নামছে বেলারুশ-রাশিয়া

ফুটবল খেলা কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্র নিহত

সর্বপ্রথম কী সৃষ্টি করেছিলেন আল্লাহ তায়ালা

চার বিভাগে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস 

সারা দেশে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ আজ

ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনে চাকরি, আবেদন করবেন যেভাবে

ছেলে মাদকাসক্ত, অতিষ্ঠ হয়ে পুলিশে দিলেন মা

ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের নতুন বার্তা

নেতানিয়াহুর ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ ভাবনায় ক্ষুব্ধ জর্ডান

১০

১৪ আগস্ট : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১১

৩ দিনব্যাপী হজ ও ওমরাহ মেলা শুরু আজ

১২

আমাদের ৩ জন শেখ মুজিব রয়েছে : মির্জা গালিব

১৩

আরও গভীর হচ্ছে রাশিয়া-ইরান-চীন-উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক

১৪

আজ ১১ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় 

১৫

দুই শিক্ষার্থীসহ ৪ জনের প্রাণহানি, দুই গাড়িতে ছিল না ফিটনেস

১৬

১৪ আগস্ট : টিভিতে আজকের খেলা

১৭

১৪ আগস্ট : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৮

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১৯

ক্ষমতায় থাকাকালীন আ.লীগ দেশকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে বানিয়েছিল : নীরব

২০
X