কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৪০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সেই দিনটি

শচীন দেববর্মণ

জন্মদিন
শচীন দেববর্মণ

শচীন দেববর্মণ উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী, সুরকার, গীতিকার ও সংগীত পরিচালক। তিনি ১৯০৬ সালের ১ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা ও হিন্দি উভয় ভাষার গানে সমান দক্ষ শচীন দেব পূর্ব ও পশ্চিম বাংলার পাশাপাশি ভারতের হিন্দি বলয়েও তুমুল জনপ্রিয়। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে তিনি সর্বতোভাবে সহযোগিতা করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থীদের সহযোগিতার জন্য তিনি মুম্বাই, দিল্লি এবং কলকাতার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গেয়ে অর্থ সংগ্রহ করেছেন। তিনি ছিলেন ত্রিপুরার চন্দ্রবংশীয় মাণিক্য রাজপরিবারের সন্তান। চাইলেই অনেকটা রাজকীয় জীবন কাটাতে পারতেন। বিলাসে-ভোগে কাটাতে পারতেন দিন। কিন্তু তিনি প্রচলিত পথে হাঁটেননি। রক্তে মিশে থাকা সংগীতের নেশায় কষ্টের পথ বেছে নেন। বাবা নবদ্বীপচন্দ্র দেববর্মণ ছিলেন একজন সেতারবাদক এবং ধ্রুপদি সংগীতশিল্পী। তিনিই ছিলেন শচীন দেববর্মণের প্রথম শিক্ষক। এরপর তার সংগীত শিক্ষা চলে ওস্তাদ বাদল খান এবং বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে। ধ্রুপদি সংগীতের এই শিক্ষা তার মধ্যে সংগীতের মৌলিক জ্ঞান সঞ্চারে গভীর ভূমিকা পালন করে। পরে তিনি ওস্তাদ আফতাবউদ্দিন খানের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। ১৯২৫ সালে তিনি কুমিল্লায় পৈতৃক নিবাস ছেড়ে ভারতে গমন করেন। ১৯৩২ সালে হিন্দুস্তান মিউজিক্যাল প্রোডাক্টস থেকে শচীন দেবের দুটি রেকর্ড বের হয়। গান দুটি ছিল পল্লিগীতির ঢঙে গাওয়া ‘ডাকিলে কোকিল রোজ বিহানে’ এবং খাম্বাজ ঠুমরি অঙ্গের রাগপ্রধান ‘এ পথে আজ এসো প্রিয়’। এরপর থেকে তার পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়তে থাকে। ১৯৩০-এর দশকে তিনি রেডিওতে পল্লিগীতি গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। পূর্ববাংলা এবং উত্তর-পূর্ব বাংলার পল্লিগীতির ওপর তার বিশেষ ঝোঁক ছিল। বাংলা লোকসংগীতে শচীনকর্তার ছিল অগাধ জ্ঞান। লোকগানের খোঁজে তিনি বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ববঙ্গ) বিভিন্ন জেলার গ্রাম ও গ্রামান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। ১৯২৫ সালে বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার পর ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত কলকাতায় বসবাস করেন শচীনকর্তা। এরপর তিনি মুম্বাই (বোম্বে) চলে যান এবং সেখানেই স্থায়ী হন। ৮০টির মতো হিন্দি চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালনা করে চিত্রজগতে বিশেষ খ্যাতির অধিকারী হন। সেখানে তিনি শিকারি, দেবদাস, সুজাতা, বন্দিনী, গাইড, আরাধনা, বাজি, শবনম, দো ভাই প্রভৃতি ছবিতে সংগীত পরিচালনা করেন। শচীন দেব বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনে উচ্চপদ অলংকৃত করেন এবং বহু সংগঠন কর্তৃক সম্মানিত হন। ১৯৫৮ সালে সংগীত-নাটক আকাদেমি ও এশিয়ান ফিল্ম সোসাইটি (লন্ডন) এবং ১৯৬৩ সালে ত্রিপুরা ললিতকলা কেন্দ্র তাকে অভিনন্দিত করে। ১৯৬৯ সালে তিনি ভারত সরকারের ‘পদ্মশ্রী’ উপাধি এবং চলচ্চিত্রে হিন্দি গানের নেপথ্য গায়ক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। অনেক সাংস্কৃতিক দলের বিশিষ্ট শিল্পী হিসেবে তিনি ব্রিটেন, রাশিয়া, ফিনল্যান্ডসহ বহু দেশ ভ্রমণ করেন। স্বীয় সংগীতজীবনের বর্ণনা দিয়ে তিনি সরগমের নিখাদ নামক একখানি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেন। শচীন দেব ক্রীড়ামোদীও ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ৩১ অক্টোবর মুম্বাইয়ে এ কিংবদন্তির মৃত্যু হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় অসহায় মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ

বিসিবিএল ও ‘এফসিডি-সিএবি’র সমঝোতা স্মারক

লিবিয়ায় ৪০ বাংলাদেশি আটক

রূপগঞ্জে বিএনপি চেয়ারপার্সনের সুস্থতা কামনায় দোয়া-মোনাজাত

বিপিএলে ফিক্সিং রোধে যে পদক্ষেপ নিল বিসিবি

নির্বাচনের জন্য আরও বেশি সমঝোতা-ঐক্য প্রয়োজন : ডা. তাহের

ছাত্রদলের কর্মসূচি ঘোষণা

দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের লড়াই অব্যাহত থাকবে : ডা. শফিকুর রহমান

তদন্ত কমিটি গঠন / ‘মিনিস্ট্রি অডিটে ঘুষের রেট এক মাসের বেতন’ প্রতিবেদনে তোলপাড়

জুয়ার টাকার জন্য স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে

১০

জোড় ইজতেমার আখেরি মোনাজাত মঙ্গলবার

১১

কর্মবিরতির কারণে প্রাথমিকের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত

১২

ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের দিলীপের ফ্ল্যাট-দোকানসহ সম্পদ ফ্রিজ

১৩

উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে এডুকেশন অ্যান্ড অ্যাডমিশন ফেয়ার শুরু

১৪

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কড়াইলবাসীর পাশে দেশবন্ধু গ্রুপ

১৫

বস্তায় ভরে পুকুরে ডুবিয়ে ৮ কুকুর ছানা হত্যা

১৬

জোটবদ্ধ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের বিধান কেন অবৈধ নয়, হাইকোর্টের রুল

১৭

চলতি মাসে আসছে টানা ৩ দিনের ছুটি

১৮

নেতানিয়াহুকে দুঃসংবাদ দিলেন তার সাবেক আইনজীবী

১৯

বাংলাদেশে কারাদণ্ডের রায়ে টিউলিপের প্রতিক্রিয়া

২০
X