

পাবনার ঈশ্বরদীতে ৮টি কুকুর ছানাকে বস্তাবন্দি করে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে নিশি রহমান নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে, বাসার দরজার সামনে বারবার ডাকাডাকি করায় বিরক্ত হয়ে ৮টি ছানাকে বস্তায় ভরে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যা করেন তিনি।
রোববার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ চত্বরের আবাসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত নারী নিশি রহমান উপজেলা ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর বলেন, সম্প্রতি মা কুকুরটি আটটি ছানা প্রসব করে। রোববার সন্ধ্যার পর ছানাগুলোকে দেখতে না পেয়ে মা কুকুরটি বিকটভাবে ডাকাডাকি করে। সারা রাত মা কুকুরটি অফিসার্স ক্লাব এবং আবাসিক এলাকার বিভিন্ন বাসার দরজায় দরজায় ঘুরতে থাকে। এ সময় খাবার দিলেও কোনো কিছুতে মুখ দেয়নি। আমরাও বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও সন্ধান পাইনি।
তিনি আরও বলেন, সোমবার সকালে ইউএনও স্যারের আবাসিক ভবনের সামনে দিয়ে ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় তাকে কুকুর ছানার বিষয়ে জিজ্ঞেস করি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এ সময় তার ছোট ছেলে বলে ওঠে, আম্মু কুকুরের বাচ্চাগুলোকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে দিয়েছে। পরে পুকুরে গিয়ে দেখি মুখ বাঁধা বস্তা ভাসছে। তুলে এনে বস্তার মুখ খুলে দেখি ছানাগুলো মরে গেছে।
এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শহরজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বইছে তীব্র সমালোচনা। সেই সঙ্গে জড়িতকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করেছেন মানুষ। ফেসবুক মন্তব্যে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবির কুমার দাশ লেখেন, এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
অভিযুক্ত নারী নিশির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্বামী ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন কুকুর ছানা হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় আমি মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত। এর বেশি আর কিছু বলতে পারছি না।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বলেন, এটা খুবই অমানবিক। মা কুকুরটি ইতোমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে আমাদের লোকজন চিকিৎসা দিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন।
এ ঘটনায় থানায় মামলা করবেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, আমি মামলা করতে পারি কিনা জানা নেই। যদি করা যায় তাহলে অবশ্যই করব।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, পরিষদ চত্বরে সংঘটিত এ ঘটনায় আমি চরমভাবে মর্মাহত। সকালে পরিষদের কর্মকর্তাদের নিয়ে একদফা মিটিং করেছি। তদন্ত করা হচ্ছে। দোষীর বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন