টেস্টে বাংলাদেশ দল কেমন! রাওয়ালপিন্ডিতে যেমন ছিল তেমন, নাকি চেন্নাইয়ে যেমন দেখা মিলল তেমন? উত্তরটা যদি সাকিব আল হাসান দেন, তাহলে! অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার বললেন, ‘আমরা এর চেয়েও (চেন্নাই টেস্ট) ভালো দল। কালকের (আজকের) ম্যাচে এটা প্রমাণ করতে চাই।’ চেন্নাই টেস্ট পুরোপুরি চার দিনও বাঁচিয়ে রাখতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্তরা। কানপুরের গ্রিন পার্কে এবার কি পারবেন তারা!
চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্ট ভালো যায়নি বাংলাদেশের। ব্যাটিং ব্যর্থতায় দুই ইনিংসেই সুবিধা করতে পারেননি তারা। হারের ব্যবধানও ছিল ২৮০ রান! অথচ কদিন আগেই পাকিস্তানের মাটিতে ২-০ ব্যবধানে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জিতে এসেছিলেন শান্তরা। ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের পার্থক্য কোথায়? সাকিবের চোখে পাকিস্তানের এ দলটা তুলনামূলকভাবে অনভিজ্ঞ, ‘পাকিস্তানের এই দলটা নতুন ও অনভিজ্ঞ। ম্যাচ খেলার সংখ্যা দেখলে দেখবেন ওদের চেয়ে আমরা টেস্টে বেশি অভিজ্ঞ। এটা বড় ফ্যাক্টর।’ তবে চেন্নাইয়ে খারাপ গেলেও এবার কানপুর টেস্টে তাই নিজেদের ভিন্নতা দেখাতে চান সাকিবরা। বৃহস্পতিবার ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এসে সাকিব বলেন, ‘ভারত এক নম্বর দল এখন। দেশের মাটিতে অপরাজিত। দেশের মাঠে তারা কতটা ভালো, এই পরিসংখ্যানই বলছে। ঘরের বাইরেও তারা ভালো। যে কোনো দলই ভারতে খেলতে এলে কঠিন পরীক্ষা দিবে, আমরাও ব্যতিক্রম নই। আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়ে লড়াই করতে চাই।’
চেন্নাইয়ে ছিল লাল মাটির উইকেট। প্রথম তিন দিন ব্যাটাররা মোটামুটি সুবিধা পেলেও চতুর্থ দিন প্রচুর রাফ দেখা মিলেছিল। অবশ্য কানপুরের উইকেট ভিন্ন। কালো মাটির উইকেট হওয়ায় বাংলাদেশের মিরপুরের সঙ্গেও কিছুটা পরিচিত। তবে সাকিবের মতে, ভারত, ইংল্যান্ড কিংবা অস্ট্রেলিয়ার মতো দলগুলোর বিপক্ষে উইকেট কেমন, সেটা বিষয়ই নয়, ‘ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলায় পিচ এত বড় বিষয় নয়। কারণ, ওদের সব ধরনের হাতিয়ার প্রস্তুত থাকে। কোয়ালিটি স্পিনার, কোয়ালিটি ফাস্ট বোলার, কোয়ালিটি ব্যাটার—পিচ কোনো ভূমিকা রাখবে না। আমাদের আরও ভালো খেলতে হবে, এটাই কথা।’ ভালো খেলার যতটা তাগিদ দিচ্ছেন সাকিব, ততটা তো ছন্দে নেই তিনিও। চেন্নাইয়ে যদিও দুবার ইনিংসে থিতু হয়েও বড় করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। কানপুরে টেস্টের প্রথম ইনিংসে এবার তাই উন্নতির গ্রাফটা ৩৫০-এর ওপরে রাখতে চান সাকিবরা, ‘দ্বিতীয় ইনিংসে একটু উন্নতি হয়েছে। প্রথম ইনিংসে দেড়শর মতো, দ্বিতীয় ইনিংসে আড়াইশর মতো। তৃতীয় ইনিংস মানে কানপুরের প্রথম ইনিংস যদি ৩৫০-ও হয়, এটাও বড় উন্নতি। সাড়ে তিনশ রান করতে পারলে অনেক আত্মবিশ্বাস পাওয়া যাবে, স্বস্তি আসবে ড্রেসিংরুমে।’
কানপুর টেস্টে একজন পেসার কম খেলাতে পারে ভারত—এমন আলোচনা আরও ভারি হচ্ছে। ঘরের ছেলে কুলদীপ যাদবকে দেখতে যাচ্ছেন কানপুরবাসী! এমন টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটারদের পরিকল্পনাটা কী! ভারতের শক্তিশালী স্পিন সামলাতেই যে যার মতো প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন সাকিব, ‘প্রত্যেক ব্যাটারের পরিকল্পনা থাকে। তারা জানে কী ভুল করেছে, কোথায় ভালো করতে পারে। সবাই যার যার পরিকল্পনা অনুযায়ী ভারতের কোয়ালিটি স্পিনের বিপক্ষে ভালো করার চেষ্টা করবে।’ সাকিবের কথাগুলো কতটা বাস্তবে সম্ভব, আজ টসের পরই দেখা মিলবে তার।