৯৩৯ রান নিয়ে চট্টগ্রাম টেস্ট শুরু করেছিলেন সাদমান ইসলাম। প্রথম ইনিংসেই পেলেন সেঞ্চুরির দেখা। এতেই মিলল এক হাজারি ক্লাবে প্রবেশের সুযোগ। লম্বা সময় পর ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। কেটেছে প্রায় চার বছরের অপেক্ষাও। ২২ টেস্টের ৪২ ইনিংসে গিয়ে মিলল এমন প্রাপ্তির দেখা। কিছুটা আক্ষেপ আছে কি না—এমন প্রশ্নে সাদমানের সহজ উত্তর, ‘হয়তো বা দেরি হয়েছে। কিন্তু সামনে তো আরও খেলা আছে। ইনশাআল্লাহ প্রত্যাবর্তন করে ফেলব।’ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি সাদমান। প্রথম ইনিংসে ১২ ও দ্বিতীয় ইনিংসে খেলেছেন ৪ রানের ইনিংস। একাদশে তার সুযোগ পাওয়া নিয়েও ছিল সমালোচনার ঝড়। এত চাপ সামলে সাগরিকায় খেললেন ১২০ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। সর্বশেষ তিন অঙ্ক ছুঁয়েছিলেন ২০২১ সালে হারারেতে। এবার ঘরের মাটিতে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। সন্তুষ্টির ঢেকুর তুলে ২৯ বছর বয়সী এই ওপেনার বলেন, ‘অবশ্যই রানের জন্য খেলাটা। আমার সব সময় ইচ্ছা থাকে বড় রান করার। এখানেও ইচ্ছা ছিল সুযোগ এলে বড় স্কোর করার। আলহামদুলিল্লাহ আমি চেষ্টা করেছি, যতটুকু দলের জন্য দিতে পারি।’
টেস্ট সিরিজের আগে সাদমান ব্যস্ত ছিলেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে। সাদা বলের সংস্করণের টুর্নামেন্টটিতে ১১ ম্যাচ খেলে এক সেঞ্চুরিতে ৪৬.৯০ গড়ে তোলেন ৪৬৯ রান। সে প্রস্তুতি সিরিজে কোনো প্রভাব রেখেছে কি না—প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সাদা বল লাল বল কোনো ম্যাটার করে না। রান তো রানই। যেখানেই খেলি চেষ্টা করি ভালো করতে। আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগে যদি ভালো রান করা যায়, ওটা অবশ্যই ম্যাচে সাহায্য করে।’
প্রথম টেস্টে নড়বড়ে ছিলেন সাদমান। সেজন্য দ্রুতই প্রতিপক্ষের বোলারদের শিকারও হয়েছিলেন তিনি। তবে দ্বিতীয় টেস্টে বদলে গেছেন বলা চলে। আগলা ডেলিভারিগুলোতে দারুণভাবে রান তুলেছিলেন। উদ্বোধনী জুটি বড় হতেও তার অবদান ছিল অনেক। ব্যাটিংয়ে কোনো পরিবর্তন নাকি আনেননি তিনি। এমনকি বিশেষ কোনো পরিকল্পনাও ছিল না জানিয়ে এই ওপেনার বলেন, ‘না, এমন কোনো চিন্তা নিয়ে ব্যাটিং করি না। যতটুকু চেষ্টা করি অবশ্যই সুযোগ এলে বাউন্ডারি মারার চেষ্টা করি। কখন, কীভাবে খেলতে হয় মাঠে বল যেরকম আসে; বলের মেরিট অনুযায়ী খেলি। এমন কোনো পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে ব্যাটিং করা হয় না।’ টেস্ট ছাড়া জাতীয় দলে সুযোগ মেলে না সাদমানের। খেলার সুযোগ পান না দেশের সবচেয়ে জমজমাট ঘরোয়া টুর্নামেন্ট বিপিএলেও। তারপরও নিজের প্রস্তুতি নিতে হয় বাকি ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলোতে। কিন্তু দেখা যায় এনসিএল, বিসিএলের সময় থাকে জাতীয় দলের টেস্ট সিরিজ। সবকিছু কীভাবে সামলান সাদমান, তার উত্তরটা দিলেন এভাবে—‘সর্বশেষ কিছুদিন তো অনেক খেলা ছিল, ডিপিএলও খেলেছি। আশা করি, সামনে অনেক টেস্ট ম্যাচ আছে, ‘এ’ টিমেরও খেলা আছে, বিসিএল আছে। আমাদের যে খেলা বা আন্তর্জাতিক সূচি অবশ্যই এখন জিনিসটা কাভার হয়ে গেছে। যেটা আগে ছিল, ওটা মোটামুটি কাভার হয়ে গেছে।’ প্রচুর টুর্নামেন্ট আর সিরিজ থাকায় প্রস্তুতি নিয়ে এখন আর ভয় নেই সাদমানের।
মন্তব্য করুন