কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৫, ০৫:০৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘ডাকসুতে দাঁড়াইছে সবাই, বসে আছে একজনই’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে চলছে ব্যাপক তোড়জোড়। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন বুধবার ডাকসুর ২৮টি পদের জন্য জমা পড়েছে মোট ৫০৯টি মনোনয়নপত্র।

এদিকে, নির্বাচনী প্রচারণা এখনো শুরু না হলেও সামাজিকমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়ে ফেসবুকে তার পোস্টটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

বুধবার (২০ আগস্ট) রাতে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া পোস্টের সঙ্গে ব্যতিক্রমধর্মী একটি পোস্টারও যুক্ত করে দেন তিনি।

আশিকের পোস্টারে দেখা যায়, প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে তিনি যেন কোনো গ্যাংস্টার সিনেমার চরিত্র। চোখে সানগ্লাস, হাতে লাইটার এবং ঠোঁটে সিগারেট।

ফেসবুকে পোস্টে তিনি লেখেন—আই ডিক্লেয়ার ওয়ার অন মাই ফ্যাকাল্টিজ। কেন আমাকে ওই ৫ মার্কের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা বস্তাপচা লেকচার শোনা লাগবে? এর থেকে ক্লাস না করে ভালো রেজাল্ট করা যায়। অ্যাটেনডেন্স ৭০-৭৫ শতাংশ হলেই ফুল মার্ক দেওয়া উচিত। আর ৫০ শতাংশ থাকলেও পরীক্ষায় বসতে দেওয়া উচিত। কিউএস র‍্যাঙ্কিং দিয়ে আদৌ কিছু হয়? আমাদের ঘাড়ের ওপর পা দিয়ে জাতে ওঠার চেষ্টা করলে হবে না। অবশ্যই শিক্ষার্থীদের সুবিধা আগে।

এই একটা কারণই যথেষ্ট ডাকসুতে দাঁড়ানোর। আরও পয়েন্ট আছে। যেগুলা সবাই দিয়েছে, অমুক উন্নয়ন, তমুক উন্নয়ন, এগুলা চাইলেই কপি করে এখানে যোগ করে দেওয়া যাবে। কিন্তু আমি ওই ‘উদ্দীপকের গুরুত্ব অপরিসীম’ টাইপ লোক না।

তিনি আরও লেখেন, বাস্তবতা হলো সদস্য হিসেবে তেমন পরিবর্তন আনার কারোরই সেরকম সুযোগ/মুরোদ নাই। সর্বোচ্চ প্রেশারাইজ করতে পারবে তারা। আর সমস্যাগুলো খুঁজবেন আপনারা। আমি রিপ্রেজেন্টেটিভ। আপনারা আমাকে সমস্যাগুলো বলবেন, সেটা নিয়ে দায়িত্বশীলদের সাথে ফাডাফাডি করার দায়িত্ব আমার। ফাডাফাডি, প্রেশারাইজ, আলোচনা করে দাবি আদায় আমার কাজ, সোফায় বসে আরাম করে তামাশা দেখা আপনার কাজ। কিন্তু হয় উল্টোটা। সমস্যা বের করে নেতারা আর তার জন্য রাস্তায় কষ্ট করে আন্দোলন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আশিকুর রহমান লেখেন—মেয়েদের যাতায়াত, নিরাপত্তা, বিশেষ করে আবাসন সমস্যার জন্য ক্যাম্পাসে হল নির্মাণ অথবা কর্মচারীদের যে কোনো একটি ভবন হোস্টেলে (হল না) রূপান্তরের বিষয়ে কাজ করব। এ ছাড়াও, ক্যাম্পাস যেন বহিরাগত জনসমাবেশের পার্কিং স্লট আর মূত্র বিসর্জনের জায়গা না হয়ে যায়, একাডেমিক এরিয়ায় সব মিটিং মিছিল শব্দদূষণ বন্ধ আর সর্বোচ্চ রাজুতে (রাজু ভাস্কর্য) প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে করার এখতিয়ার, সেই চেষ্টা করব।

ইনক্লুসিভ কালচারের প্রসঙ্গ তুলে আশিকুর রহমান লেখেন—ঢাবিতে কোরআন তেলাওয়াত হবে, সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা হবে, কনসার্ট সব হবে। কেউ কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানবে না। এছাড়াও, এনিমে কসপ্লে, ড্রোন মেকিং ইভেন্টসহ নানা কম্পিটিশন হবে।

আশিকুরকে কেন ভোট দেওয়া হবে, সে প্রসঙ্গে তিনি লেখেন—আর্থিক সততা: ইনভেস্টমেন্ট সে-ই করে, যে লাভের আশায় থাকে। আমার এখানে কোনো ইনভেস্টমেন্ট নাই, সুতরাং লাভও নাই। আর আমি কেমন হিসাবি লোক, আমার বন্ধুরা জানে। ১৭ জুলাই হল দখলের দিনেও গনিমতের মাল হিসেবে কিছুই নেইনি। যেখানে অন্যরা বাইকের তালা ভেঙে...

তিনি দাবি করেন—তার নামে নারী কেলেঙ্কারি নেই, ভাই-ব্রাদার কোরাম নেই; বরং তার আছে স্ট্র্যাটেজিক দক্ষতা। তিনি বলেন, নেতার পরিবর্তে একজন রাজনৈতিক আমলা হিসেবে কাজ করতে চাই। ডাকসু জিএসের কাজও মোটাদাগে এমনই। সো আমি এখানে মূলত ‘দ্য ওয়ারটাইম কনসিলিয়ার’ ফ্রম গডফাদার।

ঢাবির ইংরেজি বিভাগের এ শিক্ষার্থীকে কেন ভোট দেওয়া হবে না, তিনি সেখানেও নজর দেন—আনরেস্পনসিভ: গভীর রাতে কোনো সমস্যায় পড়লে ফোন দিলে আমাকে অবশ্যই পাবেন না। কারণ, আমি তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ি। বাইকও নাই যে, একটান দিয়ে চলে যাব।

এক্সপোজ করার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়ে আশিকুর বলেন—যেহেতু অন্যায়-অনিয়ম একদমই সহ্য করতে পারি না, তো যদি অন্য সদস্যরা একটুও অনিয়ম বা সিকি পয়সার কমিশনবাজি করে, তাদের এক্সপোজ করে দেব। তো যাদের সিলেটের পাথরচুরির সর্বদলীয় ঐক্যর মতো কিছু করার ইচ্ছা আছে, তারা আমাকে ভোট দেবেন না।

ফেসবুক পোস্টের শেষে এই জিএস পদপ্রার্থী লেখেন, অনেকেরই পোস্টারে আমার ছবি নিয়ে আপত্তি আছে। কিন্তু দুইটা ভোট কম পাব—এই ভয়ে যদি পিছপা হতাম, তাহলে আমি নিজেকে আর রেসপেক্ট করতাম না। আমার পোস্টার, প্রচারণা সব ‘জেন-জি’ স্টাইলেই হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঢাকার ব্যস্ততম দুই সড়ক অবরোধ 

রিজার্ভ চুরি মামলা  / ৮৮ বার পেছাল তদন্ত প্রতিবেদন

সেই টাইসনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না  

ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে কী খাবেন, কী খাবেন না

চারটি করে আসন চান মানিকগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের প্রতিনিধিরা

ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় দ্রুতই ব্যবস্থা নেবে যৌথ বাহিনী: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩০ কিলোমিটারজুড়ে ভয়াবহ যানজট

আড়াই মাস ধরে বন্ধ ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন

জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় মাদক ও অস্ত্রসহ আটক

বাতিল হচ্ছে রাজনৈতিক বিবেচনায় পাওয়া পরীক্ষা কেন্দ্র

১০

জঙ্গিসহ ৭০০ আসামি এখনো পলাতক : কারা অধিদপ্তর

১১

টেস্ট থেকে হুট করে অবসরের মূল কারণ জানালেন রোহিত

১২

সুন্দরবনে অভিযান দেখে পালালেন জেলেরা, জব্দ ৮৫০ কেজি কাঁকড়া  

১৩

শরিফুল এম খানকে মার্কিন দূতাবাসের শুভেচ্ছা

১৪

চোখে চোখ রেখে কথা বলা কেন জরুরি, জেনে নিন

১৫

নতুন একটি নির্বাহী আদেশে সই করলেন ট্রাম্প, থাকছে কঠোর শাস্তি

১৬

পবিপ্রবিতে অর্থ কেলেঙ্কারি, ২ কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত

১৭

শাহজালালে ১৩০ কোটি টাকার কোকেন উদ্ধার

১৮

ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডি : দিবসেই শুধু কদর বাড়ে নিহতদের পরিবারের

১৯

৩৫ বছর ধরে বেদখলে থাকা জমি ঢাকঢোল পিটিয়ে উদ্ধার

২০
X