বিএনপি আবারও দেশের মানুষকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার হরণের মধ্য দিয়ে যাদের জন্ম, তারা (বিএনপি) আবার জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করতে চায়, লুটপাট করতে চায়। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে আর ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না, এটা মনে রাখতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার গণভবনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সভাপতি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কেক কেটে উদযাপন করা হয়।
২০০৮ সালের নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ও আমাদের ১৪ দলীয় জোট মানুষের আস্থা অর্জন করেছিলাম। মাত্র ২৯টি সিট পেয়েছিল বিএনপি। বিএনপির অত্যাচার, নির্যাতন, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, হাওয়া ভবন তৈরি করে পয়সা খাওয়ার কারণে দেশের মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছিল। কিন্তু বারবার তারা ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে।
সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পেরেছি। সাক্ষরতার হার বাড়িয়েছি, প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। রাস্তাঘাট-ব্রিজ উন্নত করেছি। বাংলাদেশ এখন বদলে যাওয়া বাংলাদেশ, যা বিশ্ববাসী স্বীকার করে। তবে এটা চোখে দেখে না কারা, ওই সন্ত্রাসী-লুটেরা, দুর্নীতিবাজ বিএনপি। আর কিছু আছে, যারা বুদ্ধি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
স্মার্ট দেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, স্মার্ট ও দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তুলব। সরকার হবে স্মার্ট সরকার। ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে সরকার পরিচালনা করব। অর্থনীতি হবে স্মার্ট ইকোনমি, ডিজিটাল ইকোনমির সঙ্গে সবকিছু জড়িত।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, শুধু সংগঠন করলে হবে না, যে উন্নয়ন করেছি তা মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। দেশ সেবায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে। রাজনীতিবিদের ভোগ না করে মানুষের সেবা ও ত্যাগের মধ্য দিয়েই সবচেয়ে বেশি আনন্দ, এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।
বৈঠক সূত্র জানায়, বিরোধী দলের অপপ্রচারের জবাব ও সরকারের উন্নয়নের প্রচার করতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে সবাইকে দাঁড়াতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হবে, সেজন্য স্বেচ্ছাসেবক লীগকে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন তিনি।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু কালবেলাকে বলেন, আমরা শান্তি চাই। আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত অংশ নিক। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা দরকার তা নির্বাচন কমিশন করবে, তা সংবিধান মোতাবেক হবে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের পূর্ণাঙ্গ সভাপতি হলেন সাচ্চু : স্বেচ্ছাসেবক লীগের পূর্ণাঙ্গ সভাপতির দায়িত্ব পেলেন গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু। গতকাল বৃহস্পতিবার গণভবনে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এ ঘোষণা দেন। আগামী সম্মেলন পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
এ বিষয়ে গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু কালবেলাকে বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিরকৃতজ্ঞ। জীবন দিয়ে হলেও ন্যায়নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করব। স্বেচ্ছাসেবক লীগ আরও শক্তিশালী হবে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহের অকাল মৃত্যুতে গত বছরের জুলাই মাসে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু।
মন্তব্য করুন