ঝিনাইদহের হতদরিদ্র বিমল প্রামাণিক একটি গাভি থেকে শুরু করে আজ কোটিপতি হয়েছেন। তিনি গরু ও দুধ বিক্রি করে তৈরি করেছেন দুটি ফ্ল্যাট বাড়ি, কিনেছেন জমি এবং দুই ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছেন। ৩০ বছর ধরে গরু লালন-পালন করে তিনি এখন সফল খামারি।
আর প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, গরুভক্ত এ খামারি কোনো উৎপাদন খরচ ছাড়াই হয়েছেন সফল খামারি। বিমল প্রামাণিকের খামার চলছে বর্তমানে ছোট-বড় ৪৫টি গরু নিয়ে।
সূত্র মতে, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল ছয়খাদা গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক বিমল প্রামাণিক। ৩০ বছর আগে একটি গাভি পালন শুরু করে আজ তিনি ছোট-বড় ৪৫টি গরুর মালিক। গড়ে তুলেছেন গরুর খামার। তিনি গরু ও দুধ বিক্রি করে গ্রামে তৈরি করেছেন দুটি ফ্ল্যাট বাড়ি, ক্রয় করেছেন ৬ বিঘা জমি। তার দুই ছেলে ননী বিশ্বাস ও প্রলব বিশ্বাসকে পাঠিয়েছেন বিদেশে। তার মাঠের ধান, দুধ-গোবর বিক্রি করে সংসার চলে যায়। এলাকায় তার দেখাদেখি অনেকেই ছোট-বড় খামার গড়ে তুলেছেন।
বিমল প্রামাণিক জানান, প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে গরুগুলো মাঠে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যান। ঝড়-বৃষ্টি উপক্ষো করে গরুগুলো সারিবদ্ধভাবে আবার সন্ধ্যায় বাড়ি নিয়ে আসেন। গরু লালন-পালন করা তার নেশা। স্ত্রী পদ্মা রানী, মেয়ে চন্দনা ও নাতি-নাতনি নিয়ে তাদের সংসার। তিনি যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিনই গরু পালন করে যেতে চান।
স্থানীয় রইস উদ্দিন, রিনা খাতুন ও আফজাল হোসেন জানান, বিমল প্রামাণিক একটি গরু থেকে লাখ লাখ টাকার মালিক হয়েছেন। গরু ও দুধ বিক্রি করেই বাড়ি, জমি কিনেছেন। বর্তমানে তার দেখাদেখি অনেকেই গরু পালন শুরু করেছেন।
খামারির মেয়ে চন্দনা বিশ্বাস জানান, গরু বিক্রি করে আমার বিয়ে দিয়েছে। আর দুই ভাইকে বিদেশ পাঠানোসহ বাড়ি ও জমি কিনেছে। আমার বাবার দেখাদেখি অনেকেই গড়ে তুলেছেন গরুর খামার। তারা বাবাকে সবসময় গরু পালনে সহযোগিতা করে থাকেন।
এদিকে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুব্রত কুমার ব্যানার্জি জানান, গরু লালন-পালন করে বিমল প্রামাণিক তার জীবন পাল্টে ফেলেছেন। তিনি জীবনসংগ্রামী মানুষ, গরুর পাল নিয়ে মাঠে খাবার খাওয়ান। তার কোনো উৎপাদন খরচ নেই। প্রাণিসম্পদ বিভাগ তার সার্বিক খোঁজ ও পরামর্শ দিয়ে থাকে।
মন্তব্য করুন