মাহমুদ হাসান টিপু, ঝিনাইদহ
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
জনবল সংকটে ধুঁকছে চিকিৎসালয়

হাসপাতালে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার যন্ত্র

ঝিনাইদহ
হাসপাতালে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার যন্ত্র

প্রতিটি তিনতলা ভবন আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সজ্জিত, বসানো হয়েছে শয্যা, রয়েছে চিকিৎসক ও স্টাফদের জন্য ডরমিটরি। এমনকি বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে বিকল্প ব্যবস্থায় চালু রয়েছে জেনারেটরও। গর্ভবতী মায়েদের সিজার এবং নবজাতকের চিকিৎসার জন্য নির্মিত এসব হাসপাতাল এখন জনবল সংকটে পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকার হাজার হাজার হতদরিদ্র মানুষ।

এমনই দশা ঝিনাইদহ জেলার ৪টি ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে এসব হাসপাতাল নির্মাণে প্রতিটিতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও আজও সেগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি।

জেলার শৈলকুপা উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম দুধসর, সদর উপজেলার দক্ষিণ কাষ্টসাগরা, কালীগঞ্জ পৌরসভা এবং শৈলকুপার কাঁচেরকোল গ্রামে নির্মিত এই হাসপাতালগুলো বছরের পর বছর ধরে পড়ে আছে অচল অবস্থায়। হাসপাতাল ভবনগুলোর কাঠামো নিখুঁত, রয়েছে চিকিৎসকের চেম্বার,

নার্স রুম, ফার্মেসি, ল্যাব, কাউন্সেলিং রুম, ওয়ার্ড, অপারেশন থিয়েটার ও অন্যান্য সহায়ক কক্ষ। কিন্তু এসব সুবিধা থাকলেও জনবল না থাকায় সেখানে কোনো চিকিৎসা কার্যক্রমই পরিচালিত হচ্ছে না।

বর্তমানে এসব ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে নেই চিকিৎসক, নার্স, ফার্মাসিস্ট, আয়া, এমনকি নৈশপ্রহরীও। ওষুধেরও চরম সংকট রয়েছে। শুধু সীমিত কিছু জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী বিতরণ ছাড়া কোনো দৃশ্যমান স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালু নেই।

হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রহিমা বেগম, রিনা বেগম, চম্পা বেগমসহ স্থানীয় নারীরা জানান, উদ্বোধনের পর তারা বহু আশা নিয়ে এলেও এখানে চিকিৎসক নেই, ওষুধ নেই, রোগী ভর্তি বা অপারেশন করার কোনো সুযোগ নেই। ফলে বিপদের সময় পরিবার নিয়ে ছুটতে হয় জেলা সদর হাসপাতালে কিংবা ব্যয়বহুল বেসরকারি হাসপাতালে। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়তে হয় পরিবারগুলোকে। এমনকি সময় মতো সেবা না পেয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক মোহা. মোজাম্মেল করিম বলেন, ‘২০১৮ সালে হাসপাতালগুলো উদ্বোধন হলেও জনবল সংকটে সেগুলো এখনো পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় সীমিত আকারে চালু রয়েছে, তবে পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করার মতো অবস্থা এখনো হয়নি।’

এত বড় অবকাঠামো ও সরকারি বিনিয়োগ সত্ত্বেও কার্যকর চিকিৎসাসেবা না থাকায় হতাশ স্থানীয় জনগণ। তারা দ্রুত এসব হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিয়ে কার্যকর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কিয়ামত কি শুক্রবারেই সংঘটিত হবে, যা বলা হয়েছে হাদিসে

ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে তাইজুল, ছুঁয়ে ফেললেন সাকিবকে

ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে আগুন

পাকিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ৩০ সন্ত্রাসী নিহত

ভূমিকম্প আতঙ্কে কর্মচারী ভবনে আশ্রয় নিলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা

সেনাকুঞ্জে যাবেন খালেদা জিয়া

২৬৫ রানে অলআউট আয়ারল্যান্ড, ফলোঅনে না ফেলে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

ভূমিকম্প / ঘোড়াশালসহ যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র সাময়িক বন্ধ

কিছু মানুষ ভূমিকম্প টের পায় না কেন?

নতুন রানিকে স্বাগত জানাল মিস ইউনিভার্স

১০

ভূমিকম্পে পদদলিত হয়ে শতাধিক মানুষ টঙ্গী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন

১১

ভূমিকম্পে তারকাদের উদ্বেগ

১২

সাবেক এমপি মহিউদ্দিন বাচ্চুর সহযোগী আবু বকর গ্রেপ্তার

১৩

আফটারশক হতে পারে কি না জানালেন আবহাওয়াবিদ

১৪

ভূমিকম্পের পর যে বার্তা দিলেন তাসকিন-জামাল ভূঁইয়া

১৫

সাগরে লঘুচাপের আভাস, ১২০ ঘণ্টার পূর্বাভাসে নতুন তথ্য

১৬

ভূমিকম্প নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা

১৭

‘ভূমিকম্পে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের কোনো ক্ষতি হয়নি’

১৮

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় হেলে পড়েছে ভবন

১৯

গত পাঁচ বছরে এত তীব্র ভূমিকম্প অনুভব করিনি : পরিবেশ উপদেষ্টা

২০
X