কক্ষ দখলকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি আবাসিক হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে রাতভর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হল ও ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে কমপক্ষে ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে জানা যায়।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, সূর্যসেন হলের ২০৪ ও ২১৩ নম্বর কক্ষ সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীদের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু ওই রুমে কর্মীদের সিট দিতে চায় সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের অনুসারীরা।
গত শনিবার মধ্যরাতে শয়নের অনুসারীরা তার কর্মীদের ওই রুমে সিট দিতে চাইলে বাধা দেয় সৈকতের অনুসারীরা। এ সময় কর্মীকে সিট দিতে না পেরে ক্ষেপে যায় শয়নের অনুসারীরা। পরে হলের অন্য রুম থেকে জোরপূর্বক সৈকতের অনুসারীদের বের করে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে সৈকতের অনুসারীরা হলের নিচে অবস্থান নিয়ে শয়নের অনুসারীদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করে। কিন্তু আলোচনায় রাজি না হলে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়।
সৈকতের অনুসারী সংখ্যায় কম হওয়ায় তাদের হল থেকে বের করে দিয়ে গেটে তালা মেরে দেয় শয়নের অনুসারীরা। পরে রাত ৩টার দিকে আলাদাভাবে ঘটনাস্থলে আসেন দুই ছাত্রলীগ নেতা। তারা ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনেন। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসাধীন।
হামলায় শয়নের গ্রুপ থেকে নেতৃত্ব দেন মনির আহমেদ, ওমর ফারুক, তুষার হোসেন, মাহফুজ রহমান, রাকিব সরকার, মিনহাজ, তৌফিক, মুহসীন খান ও শাহপরাণ। অন্যদিকে, সৈকতের গ্রপের নেতৃত্বে ছিলেন আরিফুর রহমান যুবরাজ, আব্দুল্লাহ খান শৈশব, মুন্না মিয়া ও অমিত হাসান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, রুম দখল নিয়ে ঝামেলা হলেও আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে মূলত সংঘর্ষের শুরু। শয়নের অনুসারীরা সৈকতের অনুসারীদের রুমে শিক্ষার্থী শিফট করতে চায়। এ নিয়ে জামেলা সৃষ্টি হলে সৈকতের অনুসারীরা আলোচনায় বসতে চাইলেও শয়নের অনুসারীরা বসতে চায়নি।
এদিকে, সূর্যসেন হলে সংঘর্ষের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলে শয়নের অনুসারীদের ওপর হামলা চালায় সৈকতের অনুসারীরা। এ হামলায় বেশ কয়েজন আহত হয়েছে। এসব ঘটনার জেরে অন্য হলগুলোতেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়।
এ বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন কালবেলাকে বলেন, ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ঘটনা সম্পর্কে জেনে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সেজন্য চেষ্টা করছি।
এ বিষয়ে সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়া কালবেলাকে বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঝামেলার বিষয়টি হলের হাউস টিউটররা দেখছেন। লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মুহাম্মদ জাবেদ হোসেন বলেন, শনিবার রাতের ঘটনা মীমাংসা হয়ে গেছে। কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।
মন্তব্য করুন