দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট এবং গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার সীমানায় করতোয়া নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর পাশে অস্থায়ী কাঠের সেতু দিয়ে পার হতো মানুষ। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সেতুটির ওপর দিয়ে নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন দুই জেলার হাজারো মানুষ।
প্রতিদিন অন্তত তিন থেকে চার হাজার মোটরসাইকেল এবং হেঁটে দুই থেকে তিন হাজার মানুষ পারাপার হতো এ কাঠের সেতু দিয়ে। সরেজমিন দেখা যায়, সেতুটি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন মোটরসাইকেল-বাইসাইকেল আরোহীসহ সাধারণ মানুষ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শুষ্ক মৌসুমে নামমাত্র কয়েক ফিট উচ্চতার নড়বড়ে অস্থায়ী এই কাঠের সেতু নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। বর্ষা মৌসুমের শুরুতে কচুরিপানা ও পানির স্রোতের চাপে অস্থায়ী কাঠের সেতুর একাংশ ভেঙে যায়। তার কয়েক ঘণ্টা পরই এই সেতুর ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়া শুরু হয়। ধীরেধীরে পানির উচ্চাতা বাড়ায় অস্থায়ী সেতুটি দিয়ে পারাপার একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট, হাকিমপুর, বিরামপুর, নবাবগঞ্জের সঙ্গে গাইবান্ধা জেলা শহর এবং বিভাগীয় শহর রংপুরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে নতুন সেতুটি চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছরের মে মাসে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বলছে, তারা শুধু নতুন সেতু নির্মাণ করবে। অস্থায়ী বিকল্প সেতু নির্মাণের কোনো চুক্তি তাদের সঙ্গে হয়নি। নির্মাণ করা বিকল্প সেতুটি সড়ক বিভাগ নির্মাণ করেছে। এদিকে সওজ বলেছে পুরোনো বেইলি সেতু ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণ প্যাকেজে অস্থায়ী সেতু নির্মাণের কোনো অনুমোদন নেই। তবুও সাধারণ মানুষের যাতায়াতের কথা বিবেচনায় তারা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অস্থায়ী একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করেছে।
অস্থায়ী সেতু দিয়ে হেঁটে পারপারের সময় এক স্কুল শিক্ষক তৌহিদুল ইসলাম এবং সাইকেল আরোহী তপন দাস বলেন, নামেমাত্র একটি অস্থায়ী কাঠের সেতু নির্মাণ করেছে সওজ। এটি জনগণের সঙ্গে তামাশা করা ছাড়া আর কিছুই না। এখন আমরা হাজার হাজার মানুষ কীভাবে যাতাযাত করব! খরা মৌসুমে নদীতে যখন পানি কম ছিল, তখন নদীর পানি থেকে ২ হাত উচ্চতায় কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে কাঠের সেতুটি ডুবে যাবে এটাই স্বাভাবিক। সেতু নির্মাণকারীরা জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলতে ইচ্ছেকৃতভাবেই এ কাজটি করেছে।
এদিকে গাইবান্ধা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী ফিরোজ আখতার বলেন, চলমান সেতু নির্মাণ প্যাকেজে বিকল্প সেতু নির্মাণের কোনো ব্যবস্থা নেই। তবুও হেঁটে যাতায়াতের জন্য একটি অস্থায়ী সেতু আমরা তৈরি করেছিলাম। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে দুটি নৌকা সেখানে দেওয়া হয়েছে জনসাধারণের পারাপারের জন্য। একটু কষ্ট হলেও পারাপারের জন্য সবাইকে এখন নৌকা ব্যবহার করতে হবে।
মন্তব্য করুন