

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার মতলব পৌরসভায় ধনাগোদা শাখা নদীতে দুটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতু দুটি নির্মাণের ফলে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ কমেছে হাজার মানুষের। বদলে গেছে তাদের জীবনযাত্রা। স্বস্তির হাসি ফুটেছে অন্তত ২০ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের।
সরেজমিন দেখা যায়, মতলব পৌর প্রশাসক ইউএনও আমজাদ হোসেনের উদ্যাগে জন-চলাচল সহজ করতে ও জনদুর্ভোগ লাগবের লক্ষ্যে দুটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। কাঠের সেতু নির্মাণ করে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। এ কাঠের সেতু নির্মিত হওয়ায় কলাদি, নবকলস, চরমুকুন্দী, শীলমন্দী, চরনিলক্ষ্মী, উদ্দমদী, বারোঠালিয়া, বরদিয়া, ঢাকিরগাঁও, শোভনকর্দি, বোয়ালিয়া, দিঘলদীসহ অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে এবং ভোগান্তির অবসান হয়েছে।
জানা যায়, মতলব পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড ও ৪নং ওয়ার্ডের যোগাযোগ সুবিধা বাড়াতে নিউ হোস্টেল জামে মসজিদের পাশ ঘেঁষে ধনাগোদার শাখা নদীর ওপর একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ভোগান্তির শিকার হওয়া এলাকাবাসীর কথা বিবেচনা করেই প্রশাসক এ উদ্যোগ নেন। একই সঙ্গে উপজেলার বারঠালিয়া এলাকায় ধনাগোদার শাখা নদীতে আরেকটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে, যা ওই অঞ্চলের বহুদিনের দুর্দশা দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
চরমুকুন্দী গ্রামের বাসিন্দা মো. সেলিম হোসেন বলেন, আমাদের এলাকার মানুষের দুর্ভোগ দেখতে দেখতে বড় হয়েছি। কাঠের সেতুটি নির্মাণ করার ফলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এ কাঠের সেতুটি আমাদের চলাচলকে সহজ করে দিয়েছে। দীর্ঘদিন আমরা নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতাম। অনেক ঝুঁকি নিয়ে আসা-যাওয়া করতাম। কাঠের সেতুটি হওয়ায় আমরা অনেক খুশি এবং ইউএনওর প্রতি কৃতজ্ঞ।
চরনিলক্ষ্মী গ্রামের শিক্ষার্থীর অভিভাবক মুরাদ হোসেন জানান, আগে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে সবসময় ভয়ে থাকত, এখন আর সেই দুশ্চিন্তা নেই। আমরা ইউএনও স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞ।
স্কুলশিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ধনাগোদা নদীর শাখা খালে দীর্ঘদিন ধরে কলাদী ও চরমুকুন্দী গ্রামের সংযোগ সেতু করা হয়েছে তিন বছর ধরে। কিন্তু সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকায় আমাদের কোনো কাজেই আসে না। আমাদের দুঃখ লাঘবের কথা চিন্তা করে ইউএনও আমজাদ হোসেন কাঠের সেতুটি নির্মাণ করায় যাতায়াতের জন্য অনেক উপকার হয়েছে। এখানে আগে প্রায় দুর্ঘটনার খবর পেতাম। প্রায় সময় বৃদ্ধ ও বাচ্চারা পানিতে পড়ে যেত।
বরদিয়া গ্রামের সুমন মিয়া বলেন, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ শত শত মানুষ বারোঠালিয়ার কাঠের সেতুটি দিয়ে চলাচল করে। বর্ষাকালে আমাদের অনেক ভোগান্তি হয়। এ সেতুটি নির্মাণ করায় আমাদের কষ্ট লাঘব হয়েছে। তবে আগামীতে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আমজাদ হোসেন বলেন, জন-চলাচল সহজ ও জনদুর্ভোগ লাগবের লক্ষ্যে আমার ক্ষুদ্র প্রয়াস। এসব সেতু নির্মিত হওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের কষ্ট দূর হবে এবং ভোগান্তি কমে আসবে। এরকম উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে।
স্থানীয়দের মধ্যে এ উদ্যোগের ফলে এরই মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে এবং ভবিষ্যতে আরও উন্নয়নমূলক কাজের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে আশা করছে পৌরবাসী।
মন্তব্য করুন