টেলিযোগাযোগ অপারেটরদের মধ্যে টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো বিনিময়ে নতুন গাইডলাইন আনতে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এতে ব্যবসা হারানোর আশঙ্কা করছেন ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) অপারেটররা। তারা বলছে, খসড়া টেলিকমিউনিকেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার শেয়ারিং গাইডলাইনে প্রস্তাবিত কিছু নির্দেশনা এনটিটিএন গাইডলাইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যেসব সুবিধা দিয়ে এনটিটিএন অপারেটরদের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল, নতুন গাইডলাইনে তা ব্যাহত হবে। তাই গাইডলাইন চূড়ান্তের আগে সব পক্ষের মতামত বিবেচনায় রাখা হবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।
২০০৮ সালে এনটিটিএন অপারেটরদের লাইসেন্স এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য গাইডলাইন প্রণয়ন করে বিটিআরসি। এতে দেশজুড়ে ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কের সুযোগ পায় এনটিটিএন অপারেটররা। তিনটি সরকারি এবং দুটি বেসরকারি সংস্থাসহ মোট পাঁচটি প্রতিষ্ঠান এই লাইসেন্স পায়। বেসরকারি দুই অপারেটর ফাইবার অ্যাট হোম এবং সামিট কমিউনিকেশন্স ইতোমধ্যে মোটা অঙ্কের বিনিয়োগও করে। বিভিন্ন টেলিকম অপারেটরদের কাছে ট্রান্সমিশন সেবা বিক্রির মাধ্যমেই আয় হয় প্রতিষ্ঠানগুলোর। নতুন গাইডলাইনের কারণে সেই সেবায় ভাটা পড়ার আশঙ্কা করছে তারা।
ফাইবার অ্যাট হোমের গভর্নমেন্ট রেগুলেটরি বিষয়ক মুখ্য কর্মকর্তা আব্বাস ফারুক কালবেলাকে বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দ্রুতগতির ইন্টারনেট এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা পৌঁছে দিতে এনটিটিএন অপারেটরগুলোর অবদান রয়েছে। এখানে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে আমরা ব্যবসা করছি। এখন যদি সবাই ইনফ্রাস্ট্রাকচার শেয়ার করতে পারে, তাহলে আমাদের সেবা কাদের কাছে বিক্রি করব? দেখা যাবে, আমাদের অ্যাক্টিভ ইনফ্রাস্ট্রাকচার একটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে দিচ্ছে। এমনটা হলে এনটিটিএন খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
অন্যদিকে, সামিট কমিউনিকেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী আরিফ আল ইসলাম বলেন, কী ধরনের অবকাঠামো বিনিময় করা যাবে, সেটা যদি নির্দেশিকায় সুনির্দিষ্ট না থাকে, তাহলে গাইডলাইনের ব্যাখ্যা যে যার খুশিমতো করবে। দেখা যাবে, টেলিকম অপারেটররা অবকাঠামো বিনিময় ব্যবসার আড়ালে ট্রান্সমিশন ব্যবসা শুরু করবে, যেটা এনটিটিএনের মূল ব্যবসা।
তবে এনটিটিএনদের আশঙ্কার কারণ দেখছে না নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। গাইডলাইন চূড়ান্তের আগে সব পক্ষের মতামত নেওয়া হবে। বিটিআরসির সচিব মো. নূরুল হাফিজ কালবেলাকে বলেন, সবার মতামত বিবেচনায় রেখেই সিদ্ধান্ত হবে।