একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার আব্দুল মান্নানসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার হেতালিয়া এলাকার আব্দুল মান্নান হাওলাদার ওরফে আ. মান্নান ডিলার ওরফে মান্নাফ, একই এলাকার আশ্রাব আলী ওরফে আশরাফ আলী হাওলাদার, চরখালী এলাকার মো. মহারাজ হাওলাদার ওরফে হাতকাটা মহারাজ (জামিনে) এবং নুরুল আমিন হাওলাদার (পলাতক)। ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সাহিদুর রহমান। তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। আর আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট গাজী এমএইচ তামিম। গত ১৮ জুলাই এ চারজনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার জন্য ২০ জুলাই দিন ধার্য করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ের পর প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন বলেন, আসামিদের
বিরুদ্ধে আনা চার অভিযোগের মধ্যে প্রথম অভিযোগে দুজনকে এবং চতুর্থটিতে চারজনকে (সবাইকে) মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়। আর দ্বিতীয় অভিযোগে আব্দুল মান্নান হাওলাদার, একই এলাকার আশ্রাব আলী, চরখালী এলাকার মো. মহারাজ হাওলাদারকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং তৃতীয় অভিযোগে এ তিনজনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ২০১৬ সালের ১২ এপ্রিল এ মামলার তদন্ত শুরু হয় এবং ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর শেষ হয়। ওইদিনই প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের ওই বছরের ১০ জুলাই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউশন। একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। তদন্ত কর্মকর্তাসহ (আইও) ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তবে আসামিপক্ষের কোনো সাক্ষী ছিলেন না। ২০২২ সালের ১ নভেম্বর মামলায় যুক্তিতর্ক শুরু হয় এবং শেষ হয় গত ১৮ মে। এ মামলায় মোট আসামি ছিলেন ছয়জন। এর মধ্যে ২০২১ সালের ২৮ এপ্রিল মো. নুরুল আমিন হাওলাদার এবং একই বছরের ৭ অক্টোবর মো. আমীর হোসেন ওরফে হাফিজ মারা যান।
মন্তব্য করুন