পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট ও চতুর্থ সর্বোচ্চ শৃঙ্গ লোৎসে জয় করে দেশে ফিরেছেন বাবর আলী। সঙ্গে নিয়ে এসেছেন বাংলাদেশ থেকে প্রথমবার একই অভিযানে হিমালয়ের দুটি আট হাজার মিটার উচ্চতার পর্বতশৃঙ্গ জয়ের কীর্তি। এবার ওই দুঃসাহসী অভিযানের গল্পই শোনালেন চট্টগ্রামের হালদাপাড়ের সন্তান চিকিৎসক বাবর আলী।
গতকাল বুধবার নগরীর ‘আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য চট্টগ্রাম’ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন ও পতাকা-প্রত্যর্পণ অনুষ্ঠানে তিনি তার হিমালয় জয়ের গল্প শোনান। বাবর জানালেন, তিনি ১৯ মে এভারেস্ট এবং ২১ মে লোৎসে পর্বতশৃঙ্গ আরোহণ করে উড়িয়েছেন লাল-সবুজের পতাকা।
ক্যাম্প-৪ এবং এর ওপরের এলাকায় পর্বতারোহীরা অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করলেও বাবর আলী চেষ্টা করেছেন অভিযানে যতটা সম্ভব কম কৃত্রিম অক্সিজেন নিতে। কারণ তিনি স্বপ্ন দেখেন, আগামীতে অক্সিজেন সহায়তা ছাড়াই আটহাজারী শৃঙ্গ আরোহণ করবেন। এ অভিযানে তার সঙ্গে ছিলেন নেপালের গাইড বাইরে তামাং। বাবর আলী বলেন, এভারেস্টের উচ্চতা বেশি হলেও লোৎসে আরোহণ তুলনামূলকভাবে কঠিন।
এভারেস্ট এবং লোৎসে শিখর থেকে দেখা নিচের পৃথিবীর দৃশ্য এই জীবদ্দশায় ভুলে যাওয়া সম্ভব নয় বলে জানান বাবর আলী। বেস ক্যাম্প থেকে কাঠমান্ডু ফেরেন মাত্র তিন দিনে।
তিনি বলেন, সুস্থ শরীরে ফিরে এসেছি, এটি আমাকে আনন্দ দিয়েছে। এ সময় ওজন কমেছে ৪ কেজি। এভারেস্টে অনেক মরদেহ দেখেছি। কিন্তু আমি মনোবল হারাইনি। অনেকের ইকুইপমেন্ট নতুন, তারা মারা গেছেন বেশিদিন হয়নি। এভারেস্ট সামিট করার ক্ষেত্রে আবহাওয়া বড় ফ্যাক্টর। বাংলাদেশের একজন আবহাওয়াবিদ আমাকে দারুণ সহযোগিতা করেছেন।
বাবর কৃতজ্ঞতা জানান নিজের ক্লাব ‘ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স’, সব পৃষ্ঠপোষক সংগঠন এবং ক্রাউড ফান্ডিংয়ে অংশ নেওয়া শুভাকাঙ্ক্ষীদের। অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক ফারহান জামান বলেন, পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা পেলে এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে বাংলাদেশের পর্বতারোহীরা আরও অনেক দুর্দান্ত কীর্তি বয়ে আনতে পারবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের সভাপতি দেবাশীষ বল, প্রধান উপদেষ্টা শিহাব উদ্দিন এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠান ভিজ্যুয়াল নিটওয়্যার লিমিটেডের এমডি এ এন ফয়সাল।