বঙ্গোপসাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ঈদের আগে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবে পেট্রোবাংলা। চলতি সপ্তাহে একটি বা দুটি বহুজাতিক কোম্পানির সঙ্গে বৈঠকে হবে। এর আগে গত মাসে আগ্রহী বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে নিয়ে সেমিনার করে প্রতিষ্ঠানটি। পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এসব তথ্য জানান।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, ঈদের আগেই আমরা দুয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করব। এজন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি আরও জানান, কয়েকটি কোম্পানি দরপত্রের সময় বাড়ানোর জন্য বলেছে। এটিও আমরা বিবেচনায় রাখছি।
এদিকে গত ৪ জুন জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত জাপান এনার্জি সামিটে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি এক্সনমবিলের এশিয়া প্যাসিফিকের ভাইস প্রেসিডেন্ট (বিজনেস ডেভলপমেন্ট) হ্যালি ফ্যাম এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে জানান, বঙ্গোপসাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে তারা আগ্রহী। এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে তিনি জানান। বঙ্গোপসাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে দরপত্র কিনেছে কি না, জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, চলতি সপ্তাহে কোন কোন কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি। আজ ও আগামীকালের মধ্যে এটি নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে। প্রথম বৈঠক মার্কিন কোম্পানি শেভরনের সঙ্গে হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানান সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রে ১৫টি এবং অগভীর সমুদ্রে ১১টি ব্লক আছে। অগভীর সমুদ্রের দুটি ব্লকে অনুসন্ধান চালাচ্ছে ভারতের কোম্পানি ওএনজিসি। আর ২৪টি ব্লকে দরপত্র ডাকা হয়েছে গত ১১ মার্চ। দরপত্র জমার জন্য ৬ মাস (৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) সময় দেওয়া হয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল।
এবার বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের ৫৫টি কোম্পানিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমেরিকার একাধিক কোম্পানি আগ্রহ দেখাচ্ছে। সাগর সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির পর ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র অঞ্চলের ওপর মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের।
পেট্রোবাংলা সূত্র জানিয়েছে, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে আগ্রহী করে তোলার জন্যই আকর্ষণীয় করা হয়েছে পিএসসিকে। আগের পিএসসিগুলোতে গ্যাসের দর স্থির করা দেওয়া হলেও এবার গ্যাসের দর নির্ধারিত হয়নি। ব্রেন্ট ক্রডের আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে ওঠানামা করবে গ্যাসের দর। প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম ধরা হয়েছে ব্রেন্ট ক্রডের ১০ শতাংশ দরের সমান। আগের পিএসসিতে যথাক্রমে অগভীর ও গভীর সমুদ্রে ৫.৬ ডলার ও ৭.২৫ ডলার স্থির দর ছিল। মডেল পিএসসি-২০১৯ অনুযায়ী গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে বাংলাদেশের অনুপাত বৃদ্ধি পেতে থাকবে। আর কমতে থাকে বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার। গভীর সমুদ্রে ৩৫ থেকে ৬০ শতাংশ এবং অগভীর সমুদ্রে বাংলাদেশের হিস্যা ৪০ থেকে ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত ওঠানামা করবে। গত ৮ মে পিএসসি নিয়ে আন্তর্জাতিক সেমিনার হয়। সেখানে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী
নসরুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশের সমুদ্রে কাজ করতে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন। এই সেমিনারেও ১৫টির বেশি আন্তর্জাতিক কোম্পানি অংশ নিয়েছে। দরপত্রে দেশের স্বার্থের পাশাপাশি বিনিয়োগকারী কোম্পানির স্বার্থও দেখা হয়েছে।
ওই সেমিনার প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, আমাদের সাগরাঞ্চল একটি সমৃদ্ধ এলাকা।
আবার মাল্টিক্লায়েন্ট সার্ভের ডাটার কারণে তারা
বুঝতে পারছে এখানকার সম্ভাবনার তথ্য। বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হলে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করতে হয়, আমরা সেটাই করেছি।