বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবস পার করল যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সহযোগী এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) ঢাকার মার্কিন কর্মকর্তারা। মার্কিন সময় শুক্রবারের মধ্যে বিশ্বের সব স্থান থেকে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত যেতে নির্দেশ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
গত ২০ জানুয়ারি ক্ষমতায় বসার পরপরই বিশ্বব্যাপী ইউএসএআইডির তহবিল স্থগিত করেছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সংস্থাটিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে একীভূত করতে চাচ্ছে তার নতুন প্রশাসন। এরই মধ্যে ওয়াশিংটনে ইউএসএআইডির প্রধান কার্যালয়ে না যাওয়ার জন্য কর্মীদের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সংস্থাটির ওয়েবসাইট।
গতকাল বৃস্পতিবার শেষ কর্ম দিবস পার করেছেন ঢাকায় ইউএসএআইডির মার্কিন কর্মকর্তরা। গতকাল শেষ কর্মদিবস উপলক্ষে এক আবেগঘন পরিবেশ বিরাজ করে সংস্থাটির কার্যালয়ে। দীর্ঘ দিন ধরে স্থানীয়দের সঙ্গে একত্রে কাজ করায় একপ্রকার বন্ধন তৈরি হয়েছিল। একই সঙ্গে তহবিল বন্ধ করে দেওয়ায় সংস্থাটিতে কাজ করা বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের ভবিষ্যত কি তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে সংস্থাটির কার্যালয়ে।
ঢাকার মার্কিন দূতাবাস সূত্র বলছে, এ বিষয়ে কোনো তথ্য পেতে হলে ইউএসএআইডি ওয়েবসাইটে যা প্রকাশ করা হয়েছে, তা দেখতে হবে।
ঢাকায় সংস্থাটির মার্কিন কর্মকর্তা ৬০-৭০ জন জানিয়ে ঢাকার ইউএসএইআডিতে কর্মরত এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, তহবিল বন্ধ করার ঘোষণার পর সর্ব প্রথম ওয়েবসাইটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মার্কিন যেসব কর্মকর্তার জরুরি চিকিৎসা অথবা সন্তানদের পড়াশোনা সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে কিছু সময় বাড়ানো হবে। তবে বাকিদের অবশ্যই শুক্রবারের মধ্যে ফেরত যেতে হবে। ঢাকার কর্মকর্তাদের পরিচয় পত্র ‘আইডি’ ডিজেবল বা অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ঢাকায় সংস্থাটির কর্মকর্তাদের আর কোনো ফাংশন নেই।
এদিকে ঢাকাস্থ ইউএসআইডিতে কর্মরত ২৫০-৩০০ বাংলাদেশি কর্মকর্তা পড়েছেন অনিশ্চয়তায়। তাদের চাকরি থাকবে কি-না, নতুন করে কোথায় চাকরি করবেন, ঢাকায় সংস্থাটির কর্মকাণ্ড ভবিষ্যতে চালালেও এর খরচ যে কমিয়ে আনা হবে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই এর কর্মকর্তাদের।
সংস্থাটির আরেক কর্মকর্তা বলেন, ইউএসএআইডির মতো এত বড় একটি সংস্থা এভাবেই হয়তো বন্ধ করে দিতে পারবে না ট্রাম্প প্রশাসন। এখন সাময়িকভাবে ৯০ দিনের জন্য এক প্রকার স্যাংশন দিয়েছে। তবে এর কার্যক্রম বিশ্ব থেকে পুরোপুরি বন্ধ করতে হলে দেশটির সংসদ থেকে বিল পাস করিয়ে নিতে হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নিয়ে বিদেশে সরকারি খরচে লাগাম টানেন। সেই পটভূমিতে যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) রোহিঙ্গা সহায়তা ছাড়া বাংলাদেশের বাকি সব কার্যক্রম আপাতত তিন মাসের জন্য গুটিয়ে নিয়েছে।