জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ বিমানের কঠোর সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ বিমান অর্ডার ১৯৭২ পুনর্বহাল ও সংশোধন’ বিল পাসের আলোচনায় তারা অভিযোগ করে বলেন, টিকিট পাওয়া যায় না অথচ বিমান খালি যায়।
এ সময় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, বিমানবন্দরে মিষ্টি খেতে টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। একজন নারী ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করেছেন, প্রধান গেট থেকে শুরু করে মিষ্টি খাওয়ার টাকা দিতে দিতে ছোট বাচ্চাকে নিয়ে বিমানে উঠেছেন। শামীম হায়দার বলেন, এটি তো হতে পারে না। বিমানবন্দর জাতির ভাবমূর্তি তৈরি করবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করা ৮০ লাখ বাংলাদেশি বিমানকে তাদের প্রথম পছন্দ হিসেবে দেখতে চায়। টিকিটের দাম বেশি, টিকিটের অপ্রতুলতা অথচ খালি ভ্রমণ করে লস খাচ্ছে।
বিমানের অনিয়ম-অভিযোগ নিয়ে বলে শেষ করা যাবে না উল্লেখ করে গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, বিমানমন্ত্রী সজ্জন ব্যক্তি। ভেবেছিলাম তিনি ভালো ইমেজ তৈরি করবেন।
তিনি বলেন, প্রবাসে আমাদের অনেকের ছেলেমেয়ে আছে। বিমানের অনিয়ম-বৈষম্যের কারণে তারা দেশে আসতে চায় না। রিটার্ন টিকিটসহ ঢাকা-ম্যানচেস্টার বিমান ভাড়া সর্বনিম্ন ১ লাখ ২৪ হাজার ৩৫২ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২ লাখ ১৪ হাজার ৯৯ টাকা। এগুলো প্রকৃতপক্ষে তাদের দেশে আসতে অনুৎসাহী করে। বিমানবন্দরে নানা হয়রানির কারণেও প্রবাসীরা (বিশেষ করে যুক্তরাজ্য) বাংলাদেশমুখী হন না বলেও দাবি করেন মোকাব্বির খান।
বিরোধী দলের সদস্যদের অভিযোগের জবাবে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, এখন অনলাইনে টিকিট বিক্রি করা হয়। বিমান এখন লাভে চলছে বলেও দাবি করেন তিনি।
এর আগে, ‘বাংলাদেশ বিমান অর্ডার ১৯৭২ পুনর্বহাল ও সংশোধন’ বিল পাস হয়। এতে বলা হয়েছে, আইনটি ২০০৭ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর বলে গণ্য হবে।
মন্ত্রী বলেন, আইনটি অনুমোদিত হলে সরকারি কোম্পানি হিসেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের পরিচালনাসহ পরিচালনা পর্ষদ অবলুপ্তকরণ, নতুন পরিচালক নিয়োগ, ব্যবস্থাপনা এজেপি চুক্তি অবসায়ন এবং সংঘস্মারক বা সংঘবিধি অথবা কোনো সনদ, চুক্তি বা দলিল পরিবর্তন বা সংশোধনের ক্ষেত্রে সরকারের নীতি ও আদর্শের প্রতিফলন নিশ্চিত করা হবে।
বিলটি পাসের জন্য সংসদে তোলেন মাহবুব আলী। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
মন্তব্য করুন