

ছয় বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তরুণ মো. সজীব হোসেনের (১৯)। সেই প্রেমিকার বাড়ির সিঁড়িতেই শনিবার পড়ে ছিল তার নিথর দেহ। শনিবার সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার আগামাসিহ লেনের একটি ভবন থেকে সজীবের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে ওইদিন বিকেল ৩টার দিকে একটি ফোনকল পেয়ে বাসা থেকে বের হন সজীব।
গতকাল পুলিশ যখন সজীবের মরদেহ উদ্ধার করে, তখন গলায় তার প্যাঁচানো ছিল। সজীবের পরিবারের দাবি, যার সঙ্গে সজীবের প্রেম ছিল, সেই মেয়ের পরিবারের মত ছিল না এই সম্পর্কে। সে কারণে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে তাকে। নিহত সজীবের চাচাতো ভাই মো. ইসলাম বলেন, সজীবের বাড়িও আগামাসিহ লেনেই। এইচএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পর কিছুদিন আগে সে তাবলিগ জামাতে দোহারে গিয়েছিল। শুক্রবারই বাসায় ফেরে সে। শনিবার বিকেল ৩টার দিকে একটি ফোনকল পেয়ে ও বেরিয়ে যায়। একটু পরই শুনি, পাশের একটি বাসার সিঁড়িতে ওর মরদেহ পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, যে বাসা থেকে মরদেহ উদ্ধার হয়েছে, সেটি সজীবের প্রেমিকার পরিবারের বাসা। ঘটনার পর থেকেই তারা কেউই এলাকায় নেই। প্রায় ছয় বছর ধরে মেয়েটির সঙ্গে সজীবের সম্পর্ক ছিল। মাঝখানে একবার মনোমালিন্য হলেও পরে সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়। কিন্তু মেয়েটির মামারা এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি। তারাই পরিকল্পিতভাবে সজীবকে হত্যা করেছে।
এর আগে সজীবের আরেক চাচাতো ভাই শাহরিয়ার অভিযোগ করেন, প্রেমিকার পরিবারের লোকজন সজীবকে আটকে রেখে নির্যাতন করেছে। পরে গলায় তার প্যাঁচিয়ে হত্যা করে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে সাজানোর চেষ্টা করেছে। এর আগে তার মামারা ফোন দিয়ে সজীকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল।
সরেজমিন গতকাল আগামাসিহ লেনের ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, চারতলায় যেখানে খাদিজা ও তার পরিবারের সদস্যরা থাকতেন, সেই ভবনটি তালাবদ্ধ। নীচতলায় একটি জুতার দোকান এবং দোতলা ও তিন তলায় গোডাউন। ছাদে একটি চিলেকোঠা রয়েছে। তবে সেখানে হত্যাকাণ্ড হলেও কেউ কোনো শব্দ পায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ভবনটির চারতলায় মেয়েটির পরিবার থাকত। ঘটনার পর তারা বাসা ফাঁকা করে চলে গেছে।
ওই এলাকায় বসবাস করা মো. হাসিব জানান, এখানে যে একটি মার্ডার হয়েছে, সেটি আমরা এলাকাবাসী টেরই পাইনি। পুলিশ আসার পর আমরা জানতে পারি এখানে একটি মার্ডার হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা মরদেহ উদ্ধার করেন। প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত না হলেও পরিবারের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, হত্যার ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিস্তারিত জানা যাবে।
এর আগে পুরান ঢাকার আরমানিটোলার একটি ভবনের সিঁড়ি থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর তদন্ত করে এক তরুণীসহ তিনজনকে আটকের পর পুলিশ জানায়, প্রেমঘটিত কারণে জোবায়েদকে হত্যা করা হয়।
মন্তব্য করুন