একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা পরিচয়ে এক ব্যক্তি ফোন করেন জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতাকে। বলেন, এ মুহূর্তে জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন-সংক্রান্ত ইস্যুতে কাজ করছি। গত নির্বাচনেও কয়েকজনকে মনোনয়ন পাইয়ে দিয়েছি। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনের মনোনয়ন নিশ্চিত করেছি।
মোবাইলে এমন সব কথা বলে পরে আস্থা অর্জনের পর কথিত গোয়েন্দা আরও বলেন, আপনার মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। এখন ৫০ লাখ টাকা নগদ দিতে হবে।
আর এই প্রলোভনে পড়ে মনোনয়ন পাওয়ার আশায় ওই ব্যক্তিকে ৫০ লাখ টাকা পাঠান ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী দীপক কুমার রায়। গত ২৬ নভেম্বর মনোনয়নের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর সেখানে নাম না থাকায় বুঝতে পারেন প্রতারণার বিষয়টি। এরপর ভুক্তভোগী দীপক কুমার বাদী হয়ে মামলা করেন।
মামলার অভিযোগের ভিত্তিতে গত শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা এবং ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ। গ্রেপ্তাররা হলো নুরুল হাকিম, হাসানুল ইসলাম জিসান ও মো. হারুন অর রশিদ।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী এখন অনুতপ্ত। প্রতারণার বিষয়টি তিনি প্রথমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানান। পরে মন্ত্রী বিষয়টি দেখতে বললে দুদিনের মধ্যে প্রতারকদের গ্রেপ্তার করি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, মনোনয়নপ্রত্যাশী অনেকেই এ ধরনের চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তবে যেসব অভিযোগ পেয়েছি, গুরুত্বের সঙ্গে প্রতারকদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। তিনি বলেন, এমন প্রতারণার শিকার আরও কেউ থাকলে জানাবেন। অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।