মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) খাতে সরকারের পাওনা প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা মামলা জটিলতায় আটকে আছে। এর মধ্যে হাইকোর্টে বিচারাধীন ৩ হাজার ৪৮৩ মামলায় জড়িয়ে আছে সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা। বিপুল পরিমাণ এই অর্থ আদায়ে আদালতের আদেশের জন্য অপেক্ষা করছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা। তবে মামলা নিষ্পত্তিতে শ্লথগতির কারণে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানায়, রাজস্ব সম্পর্কিত মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘদিনের জটের কারণে বর্তমানে শুধু ভ্যাট খাতেই মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৫৮৯টি। নিষ্পত্তির তুলনায় নতুন মামলা বেড়ে যাওয়ায় জট না কমে বাড়ছে। আর ভ্যাটের এসব মামলায় জড়িয়ে আছে সরকারের ২৩ হাজার ৯৪০ কোটি টাকার রাজস্ব।
এনবিআরের সর্বশেষ হিসাবে গত বছরের ডিসেম্বরে নতুন মামলা হয়েছে ১৭৩টি। এর সঙ্গে জড়িত রাজস্বের পরিমাণ ২৭২ কোটি টাকা। আর নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৬টি মামলা। নিষ্পত্তি করা মামলায় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ১০৯ কোটি টাকা। নতুন মামলার তুলনায় নিষ্পত্তি কম হওয়ায় বাড়ছে মামলার সংখ্যা। এতে মামলায় আটকে পড়া রাজস্বের পরিমাণও বেড়েই চলছে।
ভ্যাট মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত এনবিআর সদস্য (মূসক নিরীক্ষা) ড. সহিদুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ‘মামলা জট কমাতে সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটগুলোকে আলাদা করে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মামলার ধরন চিহ্নিত করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর মামলা জট কমাতেও এনবিআর কাজ করছে।’
এনবিআর সূত্র জানায়, বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগে ভ্যাটের বিচারাধীন মামলা রয়েছে ৩ হাজার ৪৮৩টি। এর সঙ্গে জড়িত ভ্যাটের পরিমাণ ১৮ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা। আর আপিল বিভাগে মামলার সংখ্যা ১৫৬টি। এর সঙ্গে জড়িত ভ্যাটের পরিমাণ ১ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। ভ্যাটের আপিলাত ট্রাইব্যুনালে ১৮৭ মামলায় আটকে আছে ২৩৭ কোটি টাকার রাজস্ব। এ ছাড়া আপিল কমিশনারেটের ২১ মামলায় আটকে আছে ৭৬ কোটি টাকার রাজস্ব। আর মূসক ১৪.১ এর ১ হাজার ৫৬৪ মামলায় আটকে আছে সরকারের ১ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ৩৬ মামলায় আটকে আছে ৩৮৯ কোটি টাকা। এ ছাড়া ভ্যাটের অন্যান্য মামলার পরিমাণ ১ হাজার ৬২০টি। এসব মামলায় আটকে আছে ১ হাজার ৯০৪ কোটি টাকার ভ্যাট। আর ভ্যাট সংক্রান্ত সার্টিফিকেট মামলার সংখ্যা ৩ হাজার ৫২২। এসব মামলায় আটকে আছে ৬৮ কোটি টাকার রাজস্ব।