দুর্ঘটনা রোধ এবং এর কারণ উদ্ঘাটনে ট্রেনের সামনে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানো এবং সেন্সর সিস্টেম চালুর মাধ্যমে দুর্ঘটনার আগেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রযুক্তি যুক্ত করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম, শফিকুল ইসলাম শিমুল, মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, শফিকুর রহমান ও নুরুন নাহার বেগম অংশ নেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, কিছু কর্মকর্তার কাজে অবহেলার কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এবং সঠিকভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন কমিটির সভাপতি। তিনি রেলের পূর্বাঞ্চলের জিএম এবং প্রধান প্রকৌশলীকে উদ্দেশ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল নির্মাণকাজ কেন বাস্তবায়ন হয়নি, তা জানতে চান।
রেলের একটি কাজের জন্য দুবার ২ কোটি টাকার বেশি বিল তুলে নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রীকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেন। তিনি বলেন, যেসব কর্মকর্তার অবহেলায় সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তাদের একই স্থানে একই পদে রাখা দুঃখজনক। দায়িত্বে অবহেলাজনিত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। ১০ বছর আগে চট্টগ্রাম ও ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে স্ক্যানার মেশিন বসানোর কথা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্ক্যানিং মেশিন না থাকার কারণে ট্রেনে করে অবৈধ মালপত্র চোরাচালান হচ্ছে। তবে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে বলে বৈঠকে প্রধান প্রকৌশলী জানান।
বৈঠকে টেন্ডার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বলেন, রেলের প্রথম সর্বনিম্ন টেন্ডারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান কেন কাজ করেনি, তা খোলাসা হওয়া দরকার। চাঁদাবাজি বা মাস্তানির কাছে নতি স্বীকার করা যাবে না। মন্ত্রী আরও বলেন, আমার জানামতে বাবর নামে একজন মাস্তান চট্টগ্রামের প্রতিটি টেন্ডারে হস্তক্ষেপ করে।
এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, আমার ছেলেমেয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় বা অধীনস্থ কোনো সংস্থায় তদবির বা কোনো প্রভাব বিস্তার করবে না।
গত রোববার কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের হাসানপুর রেলস্টেশনের কাছে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়। সংসদীয় কমিটি সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সুপারিশ করে।
ট্রেনের অনলাইন টিকেটিংয়ে সহজ ডটকমের সঙ্গে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী যন্ত্রপাতি সরবরাহের কাজ কত শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে তার
হালনাগাদ তথ্য আগামী বৈঠকে প্রদান এবং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বাকি কাজ আগামী ২ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
এ ছাড়া রেলের জমির পরিমাণ, লিজকৃত জমির পরিমাণ এবং জমিগুলো কীভাবে ও কার মাধ্যমে ব্যবহৃত হচ্ছে, তার হালনাগাদ তথ্য আগামী বৈঠকে প্রদানের সুপারিশ করা হয়।