মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেছেন, কবি সুফিয়া কামাল তার মাতৃত্ব চিন্তার আদর্শ ছিল বরাভয়। তিনি সবার আশ্রয়ে ছিলেন। ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে চারিত্রিক দৃঢ়তা বজায় রাখতেন। সময়ের সাথে বুদ্ধির সঙ্গে মেধাকেও ধারণ করেছেন। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে তিনি মানবতার চর্চাকে সবসময় গুরুত্ব দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কবির ২৪তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় কবিকন্যা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল কবি সুফিয়া কামালের ‘রক্ত পাথার পার হলো দিন, তোমরা সবাই রেখো অমলিন’ শিরোনামে একটি চিঠি পড়ে শোনান।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, কবি ছিলেন সবসময় সমসাময়িক। তিনি বলতেন আমি খুব ভয় পাই একবিংশ শতাব্দী কেমন হবে, এই শতাব্দীর মানুষের মনুষ্যত্ব কেমন হবে? আজ নৈতিকতার প্রশ্ন সব থেকে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়েছি, নারীর প্রতি সমাজের বিদ্বেষ বেড়েছে। সব মিলিয়ে একটি জটিল অবস্থার তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, সামাজিক আচরণ বর্জিত প্রজন্ম আমরা তৈরি করছি কিনা তা দেখতে হবে। মানবতাকে রক্ষা কর, মানবাধিকারকে প্রতিষ্ঠা কর- এই শ্লোগানকে সামনে নিয়ে আসতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, কবি ছিলেন স্বচ্ছ রাজনৈতিক চিন্তার অধিকারী। সমাজের মধ্যে তৈরি হওয়া অবক্ষয়, পরিবেশগত বিপর্যয়, সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ প্রতিরোধে তিনি ছিলেন সবসময় সোচ্চার।
আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বেগম, গবেষণা কর্মকর্তা আফরুজা আরমান। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সংগঠন সম্পাদক উম্মে সালমা বেগম।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কবি সুফিয়া কামালের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ অতিথিরা। সংগীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী শারমিন সাথী ময়না। কবিতা আবৃত্তি করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আইটি অফিসার দোলন কৃষ্ণ শীল। আলোচনা শেষে লীলাবতী নাগ : দ্য রেবেল শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শনী হয়।
মন্তব্য করুন