এবারের একুশে বই মেলায় বিশিষ্ট কবি, লেখক ও গল্পকার এবং সাবেক সাংবাদিক বিল্লাল বিন কাশেম এর চারটি বই জয়তী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে। বই চারটির মধ্যে রয়েছে শত কবিতা নিয়ে কাব্যগ্রন্থ ‘অনুরণন’, বাছাইকৃত ছোট গল্প নিয়ে ‘আলো-আধাঁর’, সাড়াজাগানো উপন্যাস ‘দূরে কোথাও’ ও বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রকাশিত মতামত, উপসম্পাদকীয়, প্রবন্ধ এবং বিষয় ভিত্তিক লেখা নিয়ে (সমাজ-স্বদেশ ও বিশ্ব পরিক্রমা)।
একুশে বই মেলায় ১০ ফেব্রুয়ারির পর থেকে জয়তী প্রকাশনীতে বইগুলো পাওয়া যাবে। জয়তী প্রকাশনীর সত্ত্বাধিকারী ও প্রকাশক মাজেদুল হাসান (পায়েল) জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিক বিভাগের সহপাঠী এবং দৈনিক আজকের কাগজের সাবেক সহকর্মী বিল্লাল বিন কাশেম সব সময়ই সময়োপযোগী বিভন্ন বিষয় নিয়েই লেখালেখি করেন। প্রুফ, প্রেস ও বাইন্ডিং এ বইগুলোর কাজ চলমান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় পাঠ চুকানোর পর অসঙ্গতির বিরুদ্ধে শক্তহাতে কলম ধরেছিলেন তরুণ লেখক বিল্লাল বিন কাশেম। জাতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালনের মধ্যেই সরকারি কর্মকর্তা হয়ে যোগ দেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনে। বর্তমানে তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন যশোরের উপপরিচালক। তাই সংবাদ আর লেখা হয়নি। কিন্তু লেখালিখির অভ্যাসটা থেকে গেছে। লিখে চলেছেন জীবন উপজীব্য গল্প, কবিতা, উপন্যাস। সংবাদপত্রের পাতা প্রাণবন্ত হয়েছে তার লেখা ছেপে। এবার ‘শত কবিতা’ নিয়ে লেখা তার কাব্যগ্রন্থ ‘অনুরণন’ প্রকাশ করেছে জয়তী প্রকাশনী।
কবি বিল্লাল বিন কাশেমের কাব্যগ্রন্থ’র বিষয়ে কবি মামুন আজাদ এক মন্তব্যে লিখেছেন ‘এভাবেই কবিতার জয় হোক! জয় হোক কবিতার কবি’র!। শুভ কামনা কাব্যগ্রন্থ ‘অনুরণন’ এর জন্য।
যদিও সাহিত্যে কবিতার আবির্ভাব সর্বপ্রথম কিন্তু ভাব প্রকাশে এটা সহজ নয় আর তাই কবিতা স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ মানুষের কাছে সহজবোধ্য ছিল না কখনো। একই কারণে কোন কালেই কবিতার পাঠকও খুব বেশী ছিল না।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ‘সহজ কথায় লিখতে আমায় কহ যে/সহজ কথা যায় না লেখা সহজে।’ কিন্তু কবি বিল্লল বিন কাশেম তার কবিতায় সহজ কথাটাই সহজ ভাবে বলেছেন! মানস প্রিয়াকে নিয়ে তার স্বপ্ন, আকাঙ্খা, ভয়, দুঃচিন্তা, ঈর্ষা সর্বপরি ভালোবাসা ফুটে উঠেছে অত্যন্ত আবেগ ও প্রেমের সহজ ভাষায়। প্রেমিক-প্রেমিকা তার কবিতায় নিজের মুখ আয়নার মতো দেখবে; আর এটাইতো শিল্প যেখানে পাঠক নিজেকেই খুঁজে নেয়।
বিল্লাল বিন কাশেম। স্কুল বেলার সহপাঠী কিংবা কাছের বন্ধুদের কাছে যিনি সোহেল তথা কবি সোহেল নামে বেশি পরিচিত। বর্তমানে তিনি গল্প, প্রবন্ধ ও উপন্যাস লেখালেখির সাথে যুক্ত থাকলেও, তার লেখালেখির হাতেখড়ি কবিতা দিয়েই সেই ছোট্ট বেলায়। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াকালীন স্কুল ম্যাগাজিনে তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। কবিতার পাণ্ডুলিপি অনেকবারই সাজানো হলেও অপ্রকাশিতই রয়ে গেছে তার কবিতাগুলো। লেখালেখিতে শব্দ-ছন্দেই কবি ছুটে চলেছেন জীবনের অলিগলিতে। কী যেন খুঁজে চলেছেন সীমাহীন অভিমান নিয়ে! হয়তো জীবনের কোনো গভীর অর্থ, অচেনা পথ, অজানা ঠিকানা।
কবি ভালোবাসেন পড়তে। আর লেখা তার নেশা। কবি পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। বলা যায় তার জীবনে লেখালেখির পূর্ণতা এনে দেয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা। কেননা তিনি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতেই জড়িয়ে পড়েন সাংবাদিকতায়। সাপ্তাহিক রোববার, আজকের কাগজ ও বিখ্যাত দৈনিক ইত্তেফাকসহ সাংবাদিকতা করেছেন এক দশক। ছিলেন কূটনৈতিক প্রতিবেদক। কাজ করেছেন এফএম রেডিওতে টুডে ৮৯.৬, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন সাংবাদিকতা। পেশা ছাড়েন অনেকটা অভিমানে। কিন্তু নেশা? সেটাতো আর ছাড়া যায় না। যে কারণে লেখালেখি আজও বহমান। কলাম, কবিতা, গল্প, উপন্যাস-বিচিত্র বিষয়ে লিখেন তিনি। লেখার আনন্দ যেন আর কোথাও পান না। লিখতে গিয়ে আনন্দে-বেদনায় হাসেন-কাঁদেন। যেন ছোট্ট শিশুটি। সদা হাস্যেজ্জল কবি বিল্লাল তার মুক্তিযোদ্ধা পিতা আর সংগ্রামী মায়ের কাছ থেকেই পেয়েছেন এই কাব্যচর্চার অনুপ্রেরণা। অল্প বয়সে পিতাকে হারানোর পর সারাটা জীবন মা-ই তাকে আগলে রাখেন। জন্ম তার কেশবপুর, যশোর নানা বাড়িতে। পৈতৃক নিবাস সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ।
মেলায় জয়তী প্রকাশনী স্টল নং ২৭৮-২৭৯ এ ও রকমারিতেও বইগুলো পাওয়া যাবে।
মন্তব্য করুন