অতীত ঐতিহ্য ইতিহাসসমৃদ্ধ জনপদগুলোর মধ্যে রংপুর অন্যতম। এ জেলার প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাস সংস্কৃতি, গৌরবময় ও সভ্যতানির্ভর। বিশেষ সংস্কৃতির অধিকারী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানবগোষ্ঠী নিজেদের এ দেশের আদিম অধিবাসী হিসেবে দাবি করে। তারা এ দেশের সন্তান ও স্বদেশজাত জনগণ।
রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার বিশেষ সংস্কৃতির অধিকারী বিভিন্ন জনগোষ্ঠী একটি নৃপ্রত্নতাত্ত্বিক অধ্যয়ন বইটিতে সংযোজিত গবেষণা কর্মটি বিশেষ সংস্কৃতির অধিকারী মানবগোষ্ঠীর সামাজিক-রাজনৈতিক জীবনধারা সম্পর্কে একটি নতুন দিক উন্মোচন করবে।
এসব দিক বিবেচনা করলে এই বইটি বিশেষ গুরুত্বের দাবিদার। নৃপ্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার একটি জনপ্রিয় গবেষণা পদ্ধতি হলো প্রধান তথ্যদাতা নির্বাচন কৌশল। যা এখানে ব্যবহৃত হয়েছে। Narrative approach কে এর অনুষঙ্গ বানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের বিশেষ সংস্কৃতির অধিকারী গোষ্ঠীর ওপর অনেক গবেষণা কর্ম সম্পন্ন হলেও রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় এ ধরনের গবেষণা কর্ম পূর্বে আর পরিচালিত হয়নি। ফলে এই ধরনের গবেষণা সমৃদ্ধ বই এই অঞ্চলে এটিই প্রথম।
রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার বিশেষ সংস্কৃতির অধিকারী জনগোষ্ঠীর মধ্যে সাঁওতাল, ওরাও, মালোপাহাড়ি, রাজবংশী প্রধান। তাদের ভাষা, বিয়ে, জীবনধারণ প্রণালী, গৃহস্থালীসহ উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক ও নৃপ্রত্নতাত্ত্বিক আলোকচিত্র এ সমাজকর্মে সংযোজিত হয়েছে।
৪৩২ পৃষ্ঠার এই বইটি প্রকাশ করেছে দেশের বিখ্যাত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান জাগৃতি প্রকাশনী। প্রচ্ছদে ছিলেন সাইফুল সজীব।
বইটির লেখক ড. এস.এম সারওয়ার মোর্শেদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বর্তমানে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকতা করছেন।
তরুণ এই লেখকের ১৪টি বই ইতিমধ্যে ঢাকা, কলকাতা, নয়াদিল্লি থেকে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বর্তমানে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আর্কাইভ সম্পাদক, চেতনায় মুক্তিযুদ্ধ আন্দোলনের সদস্য সচিব হিসেবে নিযুক্ত আছেন।
সম্প্রতি বাংলা একাডেমির বইমেলায় জাগৃতি প্রকাশনীতে বইটির মোড়ক উন্মোচন হয়। এ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিম।
আরও উপস্থিত ছিলেন চেতনায় মুক্তিযুদ্ধের আহবায়ক সৈয়দ সাফিউল হাসান চিশতী, লেখিকা মেহবুবা রুমা, চেতনায় মুক্তিযুদ্ধের যুগ্ম আহ্বায়ক খান সমীর, আকিব, আব্দুল হামিদ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা মৌলিক গবেষণাধর্মী এই বইটি পাঠক সমাজে উপহার দেওয়ার জন্য লেখককে ধন্যবাদ জানান। তারা সরকারের কাছে বিশেষ সংস্কৃতির অধিকারী জনগোষ্ঠীর প্রতি আরও বেশি যত্নবান হওয়ার জন্য আহ্বান জানান।।
মন্তব্য করুন