

বিশ্ববাজারে তেলের দাম ২০২৫ সালে টানা তৃতীয় বছরের মতো কমেছে। চলতি বছরে তেলের দাম গড়ে ১৫ শতাংশের বেশি পড়ে গেছে। অতিরিক্ত তেল উৎপাদন এবং চাহিদা কম থাকায় এই পতন হয়েছে।
ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ২০২৫ সালে প্রায় ১৮ শতাংশ কমেছে। এটি ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টানা তিন বছর বার্ষিক দরপতনের ঘটনা। বুধবার ব্রেন্ট তেলের দাম ছিল ব্যারেলপ্রতি প্রায় ৬১ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের ডব্লিউটিআই তেলের দাম কমেছে প্রায় ১৯ শতাংশ।
বিশ্লেষকদের মতে, বাজারে তেলের সরবরাহ চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি ছিল। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের শেল তেল উৎপাদন স্থির থাকায় বাজারে তেলের ঘাটতি তৈরি হয়নি। ফলে দাম বাড়ার সুযোগ পায়নি।
বছরের শুরুতে তেলের বাজার কিছুটা চাঙা হয়েছিল। তখন রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ইউক্রেন যুদ্ধও তীব্র হয়ে ওঠে। এসব কারণে সাময়িকভাবে তেলের দাম বেড়েছিল।
মধ্যপ্রাচ্যেও উত্তেজনা দেখা দেয়। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত হয়। হরমুজ প্রণালী দিয়ে তেল পরিবহন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। এতে বাজারে কিছু সময়ের জন্য অস্থিরতা দেখা দেয়।
তবে এই উত্তেজনা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। ওপেক প্লাস জোট চলতি বছরে তেল উৎপাদন বাড়ায়। এতে বাজারে আরও বেশি তেল আসে। পাশাপাশি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ধীরগতির আশঙ্কায় জ্বালানির চাহিদাও কমে যায়।
২০২৬ সালের প্রথম তিন মাস ওপেক প্লাস উৎপাদন না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবু বিশ্লেষকদের ধারণা, আগামী বছরও বাজারে তেলের সরবরাহ বেশি থাকবে। এতে দামের ওপর চাপ থাকতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তেলের দাম যদি আরও কমে ব্যারেলপ্রতি ৫০ ডলারের কাছাকাছি চলে যায়, তাহলে উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে ওপেক প্লাস। তবে বর্তমান দাম ধরে থাকলে বড় কোনো পরিবর্তন নাও আসতে পারে।
সবশেষে বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেন, ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি এখনো বড় ঝুঁকি। যুদ্ধ বা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হঠাৎ করেই তেলের দামে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
সূত্র : রয়টার্স
মন্তব্য করুন