

২০২৫ সালে বিশ্ববাজারে শেয়ারবাজারের চেয়ে বেশি লাভ দিয়েছে মূল্যবান ধাতু। এর মধ্যে স্বর্ণ ও রুপা সবচেয়ে ভালো করেছে। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, যুদ্ধ–সংঘাতের আশঙ্কা এবং সুদের হার কমতে পারে—এমন ভাবনায় বিনিয়োগকারীরা এসব ধাতুর দিকে ঝুঁকেছেন।
চলতি বছরে রুপার দাম প্রায় ১৬১ শতাংশ বেড়েছে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রুপার দাম আউন্সপ্রতি ৮০ ডলার ছাড়িয়েছে। একই সময়ে স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ৬৬ শতাংশ। স্বর্ণ একাধিকবার নতুন রেকর্ড গড়েছে। বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশি করে স্বর্ণ কেনায় এবং নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে চাহিদা বাড়ায় এই দাম বেড়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার কমতে পারে। এ কারণে ২০২৬ সালেও স্বর্ণ ও রুপার বাজার ভালো থাকতে পারে। শিল্পকারখানা এবং সাধারণ বিনিয়োগকারী—দুই দিক থেকেই ধাতুর চাহিদা এখন শক্ত অবস্থানে আছে।
শুধু স্বর্ণ ও রুপাই নয়, ২০২৫ সালে শিল্পধাতুর দামও বেড়েছে। তামার দাম প্রায় ৪৪ শতাংশ বেড়ে ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প এবং চীনের চাহিদা এই বৃদ্ধির বড় কারণ। টিন ও অ্যালুমিনিয়ামের দামও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
অন্যদিকে, জ্বালানি খাতে পরিস্থিতি ভালো ছিল না। চলতি বছরে ব্রেন্ট ও যুক্তরাষ্ট্রের ডব্লিউটিআই তেলের দাম প্রায় ১৫ শতাংশ কমেছে। বাজারে তেলের সরবরাহ বেশি থাকায় দাম চাপের মধ্যে রয়েছে। তবে প্রয়োজনে ওপেক প্লাস তেল উৎপাদন কমাতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
কৃষিপণ্যের বাজারেও দরপতন দেখা গেছে। ২০২৫ সালে সবচেয়ে বেশি কমেছে কোকোর দাম, প্রায় ৪৮ শতাংশ। আগের বছর দাম অনেক বেশি থাকায় এবার চাহিদা কমেছে। পাশাপাশি উৎপাদনও বেড়েছে। চিনি, কফি, গম ও ভুট্টার দামও বেশি সরবরাহের কারণে কমতির দিকে রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী দিনে বিনিয়োগকারীরা বেশি আগ্রহ দেখাবেন স্বর্ণ ও রুপার মতো মূল্যবান ধাতুতে। তবে কৃষিপণ্য ও জ্বালানি খাতে বড় ধরনের দাম বাড়ার সম্ভাবনা এখনই দেখা যাচ্ছে না।
মন্তব্য করুন