আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন ‘সুধা সদন’ এখন পরিত্যক্ত। নজরদারির অভাবে বাড়িটি এখন অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর ধানমন্ডি ৫/এ-তে অবস্থিত শেখ হাসিনার বাড়িটিও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার পর থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে এটি মাদকসেবী ও কিশোর গ্যাংদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে, যা আশপাশের বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক তৈরি করেছে।
আশেপাশের বাড়িগুলোর কয়েকজন কেয়ারটেকারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই বাড়িতে নিয়মিত মাদক সেবনসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ ও অনৈতিক কার্যকলাপ চলছে। এতে শুধু আশপাশের বাসিন্দারাই নয়, পাশের সড়ক দিয়ে চলাচলকারী সাধারণ মানুষও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ধানমন্ডির ওই চারতলা বাড়িটি এখন পুরোপুরি ভগ্নদশায় পরিণত হয়েছে। বাড়ির প্রতিটি তলায় আড্ডায় মেতে আছে ১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সী কিশোরদের দল, যাদের অধিকাংশই মাদকসেবী। সেখানে কয়েকজন প্রাপ্তবয়স্ককেও প্রকাশ্যে মাদক সেবন করতে দেখা যায়। ওই বাড়ি থেকে নারীদের সঙ্গেও কিছু লোককে বের হতে দেখা যায়। এই চিত্র ঘিরে এলাকায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনো ধরনের নজরদারি না থাকায় দিনে-দুপুরে এমনকি রাতেও ওই পরিত্যক্ত বাড়িতে প্রবেশ করছে কিশোর গ্যাং, মাদকসেবী এবং নারীসহ নানা শ্রেণির লোক। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর সেখানে সন্দেহজনক গতিবিধি আরও বেড়ে যায়। ধানমন্ডি লেকসংলগ্ন এই ভবনটি এখন এলাকায় অপরাধ কর্মকাণ্ডের এক কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। এসব চললেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তেমন কোনো তৎপরতা কিংবা নজরদারি চোখে পড়ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) জিসানুল হক জানান, বাড়িটি আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। পুলিশ নিয়মিত টহল পরিচালনা করছে। এর মধ্যেও কেউ কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হলে, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। অপরাধী কেউই ছাড় পাবে না।
সুধা সদনের পাশের বাড়ির বাসিন্দা নিরঞ্জন জানিয়েছেন, বাড়িটি ভাঙচুর হওয়ার পর প্রথম দিকে এলাকায় চুরির ঘটনা বেড়ে গিয়েছিল। তাই আমরা নিজেরা কিছুদিন নজরদারি করেছি। কিন্তু ধীরে ধীরে এই বাড়িটি মাদকসেবীদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। ছোট-বড় সব বয়সী লোকজনই এখানে আসছে। আমরা এখন নিরাপত্তাঝুঁকিতে রয়েছি।
তথ্যসূত্র : আজকের পত্রিকা
মন্তব্য করুন